Advertisement
Advertisement

পরিকল্পনা বোধের অভাব স্পষ্ট, ‘নেটওয়ার্ক’ দর্শকের সীমার বাইরে

জেনে নিন কেমন হল সপ্তাশ্ব বসু পরিচালিত ‘নেটওয়ার্ক’?

Bengali film Saswata and Sabyasachi starrer Network’s film review
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:June 28, 2019 9:30 pm
  • Updated:June 28, 2019 9:30 pm  

চারুবাক: একঘেয়ে বাংলা ছবি নয়, একটু অন্যরকম ছবি দেখানোর প্রাক-প্রত্যাশা দিয়ে শুরু। শেষ নিদারুণ হতাশায়। প্রসেনজিৎ চৌধুরির ক্যামেরার কাজ, অনির্বাণ মাইতির নিপুণ সম্পাদনা, মাঝে মাঝে জনৈক ডাবু-রাজ-দের দুটো শোনার মতো গানের ফোঁড়ন- জেনওয়াই- ‘নেটওয়ার্ক’-এ কাজ করেনি। এককথায় রিনি ঘোষের চিত্রনাট্য দর্শক টানার কোনও কাজই করল না। হ্যাঁ, এটা মানতেই হচ্ছে অন্যরকম কিছু করার একটা প্রয়াস ছিল রিনি এবং পরিচালক সপ্তাশ্ব বিশ্বাসের। কিন্তু চিত্রনাট্য সাজানোর পরিকল্পনা বোধের অভাব স্পষ্ট। পরিচালকের সিনেমা মিডিয়ামটি সম্পর্কে অ-আ-ক-খ জ্ঞান পর্যন্ত রয়েছে কি না সন্দেহ। তবে, ক্ষমতার বাইরে গিয়ে কাজ করাটা দুঃসাহসিক বলা যেতে পারে। আবার মুর্খামিও বলা যেতে পারে। ‘নেটওয়ার্ক’ সেই মুর্খামি।

[আরও পড়ুন: জাতিপ্রথার মূলে কুঠারাঘাত আয়ুষ্মানের ‘আর্টিকল ১৫’]

Advertisement

একসময়ের হিট পরিচালক আট-দশ বছর বেকার কেন, তা অস্পষ্ট। প্রযোজক ধরার জন্য অভিজিৎ (শাশ্বত) যাঁকে ফিল্মি পার্টিতে অনিমন্ত্রিত হয়েও যেতে হয়। ইন্ডাস্ট্রির লোকজন যাঁকে দেখলে এড়িয়ে যায়, তিনি হঠাৎ ‘সন্ধান’ নামে শেষ ছবির প্রযোজক কীভাবে পেলেন, তা চিত্রনাট্যে অধরা কিংবা অস্পষ্টই রয়ে গিয়েছে। ছবি তৈরির মধ্যে আরেকটা ছবি ‘নিখোঁজ’ ঢুকে পড়ল ইউনিটের দুই সদস্য রাজ (ইন্দ্রজিৎ) ও শ্রেয়ার (রিনি) কারসাজিতে। অবশ্য এই কারসাজির ‘মাথা’ হলেন প্রবীন প্রযোজক অরিন্দম (সব্যসাচী), যাঁর কাছে ‘সন্ধান’ বানানোর প্রস্তাব নিয়ে প্রথম গিয়েছিলেন অভিজিৎ। অবশ্যই প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন। ‘সন্ধান’ শেষ হওয়ার আগেই ওই একই গল্প নিয়ে তৈরি হয়ে যায় ‘নিখোঁজ’। রাজ আর শ্রেয়া ওয়ান ফিল্ম হিট পেয়ার। গল্প চুরির প্রতিশোধ নিতে এবার আসরে নামেন খোদ অভিজিৎ। প্রায় লোকচক্ষুর আড়ালে গিয়ে একটি চ্যানেলের জন্য ‘দেয়ার লাইভস’ নামের এক রিয়ালিটি শো’র আয়োজন করেন তিনি। সেখানেই রাজ এবং শ্রেয়া স্টার। এই প্রতিশোধ পর্ব নিয়ে নাটক-প্রতিনাটক-অতিনাটক- সবকিছু মিলিয়ে মিশিয়ে একেবারে দরিদ্র ভোজনের ‘লাবড়া’ করে ছেড়েছেন চিত্রনাট্যকার পরিচালক জুটি। একটি চ্যানেলের মালিক-প্রযোজক একজন ব্যর্থ পরিচালকের ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটাতে কোটি টাকা খরচ করলেন, অথচ তাঁকে দিয়ে একটা ভাল ছবি করালেন না! কাহিনিকারের ভাবনার স্রোত কি এখনকার পুঁতিগন্ধময় গঙ্গার মতো! পরিচালক অক্ষম। তাই চিত্রনাট্যকে কোনওরকমে একটা আকার দিয়ে দাঁড় করানোর ব্যর্থ চেষ্টা করেছেন মাত্র। ভাবতে অবাক লাগে, এমন অ-সিনেমার জন্যও এখানে প্রযোজক পাওয়া যায়। অথচ এই শহরের জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত একাধিক পরিচালক বছরের পর বছর প্রযোজক পান না! সম্ভবত এটিকেই বলে ‘পার্টি’ ধরার কৃৎকৌশল।

[আরও পড়ুন: হাস্যরসে ভরপুর ‘বিবাহ অভিযান’, মন ভাল করতে একবার সিনেমা হলে ঢুঁ মারতেই পারেন]

অভিনয়ে ব্যর্থ পরিচালক এবং প্রতিশোধস্পৃহ মানুষ হিসেবে অভিজিৎ-এর চরিত্রে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় তাঁর ক্ষমতার অতিরিক্তই করে ফেলেছেন। সব্যসাচী এখানে ভিলেন। অরিন্দমের চরিত্রে অভিনয় করেছেন সব্যসাচী চক্রবর্তী। তিনিও পরিচালকের হাতে ‘পাপেট’। রাজ ও শ্রেয়ার চরিত্রে দুই নতুন মুখ ইন্দ্রজিৎ মজুমদার ও রিনি ঘোষ ক্যামেরার সামনে এসেছেন কীসের জোরে, ঠিক বুঝতে পারলাম না। তবে, সুদেহী ইন্দ্রজিৎ চর্চায় থাকলে সফল হতেও পারেন। বাকি সবই ‘নেটওয়ার্ক’ সীমার বাইরে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement