সন্দীপ্তা ভঞ্জ: দিল্লির একটি ক্যাফে। যা কিনা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের আতুঁরঘর। সেই ক্যাফের নাম ‘বার্লিন’। আর সেই জায়গাটিকে ঘিরেই গল্প গড়িয়েছে। ১৯৯৩ সালের প্রেক্ষাপট। দীর্ঘ ‘কোল্ড ওয়ার’ পরবর্তী সময়। হাড় কাঁপানো শীতের দিল্লি। ঠিক সেইসময়ের প্রেক্ষাপটে সাজানো ‘বার্লিন’-এর গল্প। যেখানে গুপ্তচরবৃত্তি এবং সিস্টেমের হাতে সাধারণ মানুষ কীভাবে ‘খেলনা’ হয়ে ওঠে? সেই গল্পই ফুটে উঠেছে অতুল সবরওয়াল পরিচালিত ‘বার্লিন’ সিনেমাটিতে। আদতে ‘কনস্পিরেসি থ্রিলার’।
সম্প্রতি জি ফাইভ-এ মুক্তি পেয়েছে ‘বার্লিন’। দুই মুখ্য চরিত্রে রাহুল বোস এবং অপারশক্তি খুরানা। সবরওয়ালের ফ্রেমে দুই তুখড় অভিনেতাকে সম্মুখ সমরে দেখা যায়। দিল্লির ‘বার্লিন’ নামক সেই পলেস্তারা খসা, ওল্ড স্টাইল ক্যাফেতে আড্ডা বসত বিভিন্ন দেশের ইন্টেলিজেন্স এজেন্টদের। আর সেই ক্যাফের আরেকটি বিশেষত্ব ছিল। যেখানে শুধুমাত্র মূক-বধির লোকদের কর্মী হিসেবে নিয়োগ করা হত। কেন? তার নেপথ্যেও ইন্টারেস্টিং প্লট! যেসব ইন্টেলিজেন্স এজেন্টরা সেখানে গোপন বৈঠক সারত, তাদের কার্যকলাপ আড়াল রাখতেই এহেন ফন্দি। মূক-বধির হওয়ার কারণে ষড়যন্ত্রকারীদের টেবিলে টেবিলে খাবার পরিবেশন করতে গিয়ে কোনও গোপন কথা না তাঁরা শুনতে পেতেন, না কাউকে বলার প্রশ্ন উঠত। দিনের পর দিন এভাবেই চলত ‘বার্লিন’ ক্যাফে। গণ্ডগোলের সূত্রপাত সেখানকার অশোক নামে এক মূক-বধির কর্মীকে নিয়ে। সে বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্নই ছিল বটে! কানে শুনতে না পেলেও বা মুখে কথা বলতে না পারলেও তার বুদ্ধি ছিল তুখড়! যে কারণে সে রাশিয়ান প্রেসিডেন্টকে খুন করার ষড়যন্ত্রের আঁচ পায়। এবং তার রহস্যভেদ করতে ময়দানে নেমে অন্য আরেক ষড়যন্ত্র আবিষ্কার করে। এরপরই গল্পে ট্যুইস্ট!
অশোককে দু দেশের গুপ্তচর সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়। যার তদন্তভার পড়ে ইন্টেজেন্স অফিসার জগদীশের উপর। যে চরিত্রে রাহুল বোস তুখড়। কিন্তু মূক-বধির অশোককে জেরা কী করে করা হবে? সেই জন্য ডাক পড়ে এক ছাপোষা মূক-বধির স্কুলের শিক্ষক অপারশক্তি খুরানা ওরফে পুসকিন ভার্মার। ক্রমশই অশোকের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সে বুঝতে পারে, তাকে ফাঁসানো হচ্ছে। নেপথ্যে রয়েছে সিস্টেমের বড় ষড়যন্ত্র! তার সমান্তরালে পুসকিনের গল্প টানেন পরিচালক অতুল সবরওয়াল। যেখানে কখনও সিস্টেমের প্রোটোকলে জড়িয়ে গিয়ে নাস্তানাবুদ পুসকিনকে দেখানো হয়, আবার কখনও বা দেশের সঙ্গে গদ্দারি করা ইন্টেলিজেন্স অফিসারদের প্রশ্ন করে হিরোসুলভ চরিত্রে দেখানো হয়েছে। পুসকিনের চরিত্রে অপারশক্তি খুরানা অনবদ্য। তবে সিনেমা দেখতে দেখতে যে চরিত্রটির প্রতি একপ্রকার ‘মায়া’র উদ্রেগ হয়, সেটা অশোক। যে চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইসওয়াক সিং। ‘বার্লিন’-এর গল্পে দেখানো হয়, সেই সময়ে ভারত একাধিক বিষয়ে সোভিয়েত চালে প্রভাবিত ছিল। সিনেমার দ্বিতীয়াংশ যদিও খুব ঢিমে চালে। প্রথমার্ধে যে কৌতূহল উদ্রেগ করে, সেটা শেষপর্যন্ত টানতে পারে না। তবে মোটের উপর মন্দ নয় ‘বার্লিন’।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.