বিদিশা চট্টোপাধ্যায়: ২০১৯ এর তেলগু ছবির রিমেক জার্সি। পরিচালক গৌতম তিন্নানুরি ( tinnanuri) তেলগুর পর হিন্দিতে ডেবিউ করলেন এই এক ছবিতে বানিয়েই। কবীর সিং (২০১৯) এর তিন বছর পর এই ‘ জার্সি ‘ গায়ে দিয়েই বড় পর্দায় ফিরলেন শাহিদ কাপুর।
দুর্দান্ত ব্যাটসম্যান এবং অসামান্য রঞ্জি ক্রিকেটার অর্জুন তলওয়ার ( Shahid Kapoor) মাত্র ২৬ বছর বয়সে খেলা ছেড়ে দেয়। একদিকে যেমন তার ভারতীয় ক্রিকেট টিমে নির্বাচিত না হওয়ার আক্ষেপ অন্যদিকে ছিল সংসারের চাপ, অন্তত তাই দেখানো হয়। ছবি শুরু হয় যখন আমরা দেখি অর্জুনের পুত্র তার বাবাকে নিয়ে লেখা বই দোকানে কিনতে যায়। এরপর গোটাটাই ফ্ল্যাশব্যাক। ক্রিকেট অর্থাৎ নিজের প্যাশন ছেড়ে দেওয়ার পর অর্জুন কীভাবে ডিপ্রেশনে ভুগতে থাকে, স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কে ফাটল ধরে, চাকরি থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর আরও একলা হয়ে যায়। এই সব কিছুর মধ্যে আলো বলতে অর্জুনের ছেলে কিটুর সঙ্গে তার সম্পর্ক। বাবাকে সে অত্যন্ত ভালোবাসে , যে যাই বলুক বাবার প্রতি কিটু বিশ্বাস হারায় না। আর এই ছেলের মুখের দিকে তাকিয়েই ৩৬ বছর বয়সে অর্জুন ঠিক করে সে ফিরবে জীবনে অর্থাৎ ক্রিকেটে! তার পুরনো কোচ মাধব যে কিনা অর্জুনের ট্যালেন্ট নিয়ে সন্দেহ করত না এবং পঙ্কজ কাপুর যার শত অনুরোধেও অ্যাসিস্ট্যান্ট কোচের চাকরি সে ফিরিয়ে দিয়েছিল , তার কাছে গিয়ে এই নতুন স্বপ্নের কথা সে জানায়। বয়স একটা বাধা তো বটেই। এবং স্টেট প্লেয়ার নয়, ইন্ডিয়ান ক্রিকেট টিমে নির্বাচিত হতে চায় অর্জুন।
এই ছবির গোটাটাই জুড়ে রয়েছেন শাহিদ। এবং শাহিদ কাপুরের অভিনয় এবং উপস্থিতি ছবির প্রাণ। কোচের চরিত্রে পঙ্কজ কাপুরকে বড্ড ভাল লাগে। ছবিতে রিয়াল লাইফ বাবা-ছেলে অর্থাৎ পঙ্কজ -শাহিদের একসঙ্গে প্রতিটা দৃশ্য মন ছুঁয়ে যায়। হৃদয় দিয়ে তৈরি এই ছবি অবশ্য যুক্তি-তক্কের ধার ধারে না। অর্জুনের এত সহজে খেলা ছেড়ে দেওয়া একটু হঠকারিতা মনে হয়। যদিও তার কারণ একেবারে শেষে জানা যায়, কিন্তু ততক্ষণে অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছে। ৩৬ বছর বয়সে খেলায় ফেরাও এত সহজে এবং অনভ্যাস সত্ত্বেও, মাঠে নেমেই ছক্কা এবং চারের বন্যা বইয়ে দেওয়া! এ কেবল সিনেমার পর্দায় সম্ভব। তাই চিত্রনাট্যে অনেক জায়গায় গোঁজামিল এবং দায়সারা ভাব স্পষ্ট। ক্রিকেটের দৃশ্যগুলো বড্ড একপেশে , সবটাই অর্জুনের উত্থানের কথা মাথায় রেখে। ভারসাম্য থাকে না। অর্জুনের স্ত্রীয়ের চরিত্রে ম্রুণাল ( Mrunal Thakur) ঠাকুর মন্দ না। তিনি যতটুকু সুযোগ পেয়েছেন, কাজে লাগিয়েছেন। ছবির সময়সীমা আরও কমান যেত, ফ্ল্যাশব্যাকে অযথা প্রেমের দৃশ্যের গান বাদ দিলে। তবে সব মিলিয়ে শাহিদের অভিনয় ছবিকে ধরে রাখে ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.