Advertisement
Advertisement
বুলবুল রিভিউ

অলৌকিক শক্তির মোড়কে এক বলিষ্ঠ নারীবাদের কাহিনি ‘বুলবুল’

কেন দেখবেন? আগে চোখ বুলিয়ে নিন রিভিউয়ে।

Actor producer Anushka Sharma produced 'Bulbul' movie review
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:June 25, 2020 8:27 pm
  • Updated:June 27, 2020 3:09 pm  

ওয়েব প্ল্যাটফর্মে প্রযোজক অনুষ্কা শর্মার দ্বিতীয় প্রজেক্ট ‘বুলবুল’। ভৌতিক আমেজ, রহস্যের হাতছানি দিয়ে সদ্য মুক্তি পেয়েছে নেটফ্লিক্সে। কেমন হল? লিখছেন সন্দীপ্তা ভঞ্জ

পরিচালক- অন্বিতা দত্ত
অভিনয়ে- রাহুল বোস, তৃপ্তি দিমরি, পাওলি দাম, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, অবিনাশ তিওয়ারি

Advertisement

বলিষ্ঠ নারীবাদের গল্প
কখনও কখনও অন্ধকার, অন্যায়-অবিচারের বিনাশের জন্য ধ্বংসলীলার প্রয়োজন হয়। প্রয়োজন হয় তাণ্ডবের। দুষ্টের দমন করতে বর্জন করতে হয় অন্দরের ‘শিষ্ট’রূপকে। পুরাণ গাথাতেও মা কালী, চণ্ডীর উল্লেখ রয়েছে। যখন যখন ধরাধামে অত্যাচার-উপদ্রব হয়েছে, ঠিক তখন তখনই এক দুষ্টের বিনাশ করতে এক অনন্য নারীশক্তি জন্ম নিয়েছে। সেরকমই এক কাহিনি ‘বুলবুল’। এক বলিষ্ঠ নারীবাদের গল্প। এক অলৌকিক শক্তির মোড়কে যে নারীবাদের গল্প পরিবেশন করেছেন অন্বীতা দত্ত।

‘উইম্যান এমপাওয়ারমেন্ট’-এর ভাষা

বাল্যবিবাহ, জমিদার প্রথা ও রাজবাড়ির অন্দরমহলের রহস্য, ডাইনিবাদ… এই ছবিতে সবরকম উপকরণ মজুত। ঝুটো দাম্ভিক পুরুষতান্ত্রিক সমাজের কাছে ‘বুলবুল’ একটা ‘খোঁচা’ বললেও ভুল হবে না! গল্পের প্রেক্ষাপট ১৮৮১ সাল। ছোট্ট বুলবুল, যে কিনা নুপূরের শব্দ নিয়ে আমবনে, বাগানে-বাগানে ঘুরে বেড়াত। তাঁর বিয়ে হয় এক রাজবাড়িতে। বাপের বাড়ি ছেড়ে শ্বশুর বাড়িতে চলে আসতে হয় তাকে। সেই সময়েই শৈশবে তার হাসি-কান্না-ভয়-খিদে সবকিছুর সঙ্গী হয়ে উঠে, তারই বয়সি দেওর (অবিনাশ তিওয়ারি)। স্বামীর থেকেও তার কাছে দেওর সত্যই প্রিয়। কিন্তু ওই, উপায় নেই! মুখ বুজে স্বামীর সঙ্গে ঘর-সংসার তো করতে হবে! বয়সে বড় কিন্তু সম্পর্কে ছোট জা বিনোদিনী (পাওলি দাম) বুলবুলের স্বামীর কানে ফুসমন্তর দিয়ে দেওর সত্যকে উকিল বানানোর জন্য বিলেতে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। এদিকে বিরহিনী রাধার মতো কাতরাতে থাকে বুলবুল। স্ত্রীর উপর ‘জোর’ খাটায় বুলবুলের স্বামী, যাকে কিনা সে আদর করে শ্বশুরঘরে পা রাখা থেকেই ‘ঠাকুরমশাই’ (রাহুল বোস) বলে ডাকত। স্ত্রীকে মারধর, ক্ষত-বিক্ষত করার পর রাগে সে নিজেই বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। এদিকে দাদার অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে বুলবুলকে ধর্ষণ করে তার মানসিক ভারসাম্যহীন আরেক দেওর। তারপর? এখানেই গল্পের মোড়।

 

‘নারী প্রধান গল্প’ কিংবা ‘উইম্যান এমপাওয়ারমেন্ট’-এর ভাষা রয়েছে ‘বুলবুল’-এ। তবে রহস্য-রোমাঞ্চের মোড়কে। পরিস্থিতির ফেরে আমাদের প্রত্যেকের চরিত্রের মধ্যেই একটা অন্ধকার দিকের সৃষ্টি হয়। যা অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই। অপরাধীর অপরাধপ্রবণতা কোথা থেকে সৃষ্টি হল? নেপথ্যের গল্প জানার আগে অপরাধটাই ‘গুরু’ বস্তু হয়ে ওঠে! ‘বুলবুল’-এর গল্পও সেই ভাবনা ভাবাতে আপনাকে বাধ্য করবে।

[আরও পড়ুন: আর্যা’র হাত ধরে দুর্ধর্ষ কামব্যাক সুস্মিতা সেনের]

স্কোরবোর্ড

মূল চরিত্রে অর্থাৎ বুলবুলের ভূমিকায় তৃপ্তি দিমরি বেশ ভাল। ডাক্তার বন্ধুর চরিত্রে পরমব্রতও নিজস্ব স্বাক্ষর রেখেছেন। গল্পের প্রয়োজনে পার্শ্বচরিত্র হয়েও তাঁর উপস্থিতি বেশ উজ্জ্বল। তবে উল্লেখ্য, সিনেমায় পাওলি দামের ‘শেডি’ চরিত্র বেশ মন কাড়ে। গল্পের দুই নারীচরিত্র বুলবুল এবং বিনোদিনী বেশ গুরুত্বপূ্র্ণ। মূল চরিত্র বুলবুল হলেও, বিনোদিনীর গুরুত্ব কিন্তু কোনও অংশে কম নয়। সহনশীল, বুদ্ধিমতি নারীচরিত্রকে বেশ দক্ষতার সঙ্গে পরিবেশন করেছেন পাওলি। অনায়াসে স্কোরবোর্ডের শীর্ষে ঠাঁই পেতেই পারে এই দুই নারীচরিত্র। দ্বৈত চরিত্রে রাহুল বোসের অভিনয়ও বেশ। যেখানে যতটুকু প্রয়োজন, ঠিক ততটাই দিয়েছেন। তবে সব উপকরণ মজুত থাকলেও, প্লটের বাঁধন আরেকটু পোক্ত হলে পারত। তবে গোটা ছবির সেট ডিজাইনে আভিজাত্য, বাঙালিয়ানা বেশ ভালভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। 

প্রযোজক হিসেবে অনুষ্কা শর্মা
বড়পর্দায় ‘এনএইচ টেন’, ‘ফিল্লোরি’, ‘পরী’র পর ওয়েব ময়দানেও প্রযোজক হিসেবে রীতিমতো ছক্কা হাঁকিয়ে চলেছেন অনুষ্কা। তাঁর প্রযোজিত প্রথম ওয়েব সিরিজ ‘পাতাললোক’-এর রেশ এখনও কাটেনি, তার মাঝেই নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেল ‘বুলবুল’। এবারও ভাল চিত্রনাট্যে মন দিয়েছেন। অনুষ্কা প্রযোজিত প্রত্যেকটি ছবিতেই ‘নারী’ চরিত্রেরা বেশ গুরুত্ব পেয়েছে। ‘বুলবুল’-এর ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয়নি! আগেই বলেছি যে, এই ছবিতেও ‘উইম্যান এমপাওয়ারমেন্ট’-এর ভাষা রয়েছে।

[আরও পড়ুন: জোর যার মুলুক তার! সমাজের নগ্ন রূপ তুলে ধরল ‘পাতাল লোক’]

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement