Advertisement
Advertisement

Breaking News

Nabaneeta Dev Sen

‘অলরাইট কামেন ফাইট! কামেন ফাইট’, জন্মদিনে ফিরে দেখা নবনীতা দেবসেন

'এই যে এত লম্বা জীবনটা কাটালুম, তার একটা যথাযথ সমাপন তো দরকার!'

Tribute to the legendary Bengali writer Nabaneeta Dev Sen on her birthday | Sangbad Pratidin
Published by: Kishore Ghosh
  • Posted:January 13, 2022 5:57 pm
  • Updated:January 14, 2022 9:36 am  

আজ ১৩ জানুয়ারি জন্মদিন কিংবদন্তি সাহিত্যিক নবনীতা দেবসেনের (Nabaneeta Dev Sen)। সংবাদ প্রতিদিনের ‘রোববার’ পত্রিকায় গত ২৭ অক্টোবর ২০১৯-এ প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর এই লেখাটি। এটিই তাঁর জীবনের শেষ লেখনি। জন্মদিনে তাঁর লেখা দিয়েই তাঁকে শ্রদ্ধা জানাল সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল।   

ঠিক আছে। না হয় ক্যানসার-ই হয়েছে। ক্যানসার তো এখন অলক্ষ্মীর ঝাঁপির মতো ঘরে ঘরে গুছিয়ে বসেছে। আমিই বা বাদ যাই কেন? আমার ছোট্ট ভাইঝিটা গিনুমা, ছোট বোনটা মুন্নু, ছোট ভাইটা অভীক, ছোট দেওরটা শিব, প্রিয় দাদা অশোকদা, ছাত্রবেলার বন্ধু শ্যামল, কবিবেলার বন্ধু সুনীল আর সন্তোষকুমার ঘোষ, আরও কত আপনজনকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছি। হঠাৎ অশীতিপর নবনীতার জন্য এত শোক কীসের? তার তো যাওয়ার সময় এমনিতেই হয়েছে। কিন্তু বন্ধুবান্ধবের হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে, কচি বাচ্চার মহাপ্রয়াণ হতে চলেছে।

Advertisement

তার জীবন যেন ভরেইনি। আরে! আমি তো এখনও মরিনি, মরব কি না, তার ঠিকও নেই। এখন থেকে এত শোক কীসের? যেসব মানুষ আমাকে একবারও চোখে দ্যাখেনি, দূর দূর গ্রাম থেকে ছুটে আসতে চাইছে, একবার শেষ দ্যাখা দেখতে। আরে, এটাই শেষ দ্যাখা– তোমায় কে বলল? এরপর তো আমি ইলেকশনে দাঁড়াব। তারপর হইহই পড়ে যাবে। শেষ দ্যাখাটা তখনকার জন্য তোলা থাক। এতশত জরুরি কাজ ফেলে রেখে আমি কিনা শেষ দর্শন দেব?

এই যে এত লম্বা জীবনটা কাটালুম, তার একটা যথাযথ সমাপন তো দরকার! পাঁজিপুঁথি দেখে, শুভ দিন, শুভ লগ্ন স্থির করে, স্বজনবান্ধবকে নেমন্তন্ন খাইয়ে তবে তো শুভযাত্রা!

[আরও পড়ুন: বাংলা সাহিত্যে ইন্দ্রপতন, চলে গেলেন নবনীতা দেবসেন]

কিন্তু জীবনে সবকিছু কি পরিকল্পনামাফিক করা যায়? আমার এক কবিরাজ দাদা একটি ভেষজ উদ্যান কিনতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে ঝড়ের মধ্যে ওই বাগানেরই একটি গাছ ভেঙে ওঁর গাড়িতে পড়ার ফলে দাদার মৃত্যু হয়। জীবন যে কখন ফুরাবে, তা কি আমরা জানি?

বেচারা ক্যানসারকে এত দোষ দিয়ে কী হবে? তাই এই জানা-অজানা, চেনা-অচেনা আত্মীয়বন্ধুর হাহাকারে, শেষ দর্শনের ধাক্কায়, শেষ প্রণামের আবেদনে বেজায় ঘাবড়ে গেলুম। এ কী রে বাবা! এরা তো ভুল বিসর্জনের লাইনে লেগে গিয়েছে! আর তাছাড়া, আমার কি তালা-ভাঙা দরজার অভাব আছে?

[আরও পড়ুন: সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার পাচ্ছেন নবনীতা দেবসেন]

আমার তো হৃৎকমল থেকে শ্বাসকমল– সব দরজাই আধখোলা। তো এই কর্কটকমলের এত মাতব্বরি কীসের? লাঠিসোঁটা একটু বেশি আছে বলে? দ্যাখো বাপু, এই বিশাল পৃথিবীতে কতরকম বড় বড় লড়াই-যুদ্ধ চলছে, সেখানে তোমার ওই লাঠিসোঁটায় ভয় পাব ভেবেছ? ওসব তো তুশ্চু! ‘আই ডোন্ট কেয়ার্‌ কানাকড়ি– জানিস্‌, আমি স্যাণ্ডো করি?’

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement