অর্নব আইচ: ফ্যাশন ডিজাইনার শর্বরী দত্তর (Sharbari Dutta ) মৃত্যুতে প্রাথমিকভাবে কোনও অসঙ্গতি খুঁজে পেলেন না ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। শনিবার দুপুরে কড়েয়া থানা এলাকার ব্রড স্ট্রিটে শর্বরী দত্তর বাড়ি যায় ফরেনসিক দল। শর্বরী দত্তর ঘরের মেঝেয় ফোঁটা ফোঁটা রক্ত পড়ে থাকা রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেন তাঁরা। তবে তদন্ত ও পরীক্ষার পর প্রাথমিকভাবে পুলিশকে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, তাঁরা কোনও ‘ফাউল প্লে’ বা অসঙ্গতি খুঁজে পাননি।
পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোর রাতে বাথরুমের ভিতরে মৃত্যু হয় শর্বরী দত্তর। প্রায় ২১ থেকে ২২ ঘণ্টা পর দেহটি উদ্ধার করেন তাঁর ছেলে ও পুত্রবধূ। এতক্ষণ তাঁরা কেন মায়ের খোঁজ নেননি, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এ ছাড়াও মা ও ছেলের সম্পর্ক বিশেষ ভাল ছিল না, প্রতিবেশী ও পারিবারিক বন্ধুদের কাছ থেকে পুলিশ তা জানতে পারে। এই বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য অনুরোধ জানিয়ে শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী গোয়েন্দা প্রধানকে চিঠিও লেখেন। শনিবার পুলিশ আধিকারিকরা সিদ্ধান্ত নেন, ঘটনাস্থল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরীক্ষা করানোর।
পুলিশ ও ফরেনসিক সূত্রে জানা গিয়েছে, শর্বরী দত্ত যে ঘরটিতে থাকতেন, সেটিতে বহু আসবাবপত্র রয়েছে। বিশেষ করে পুরানো আমলের জিনিসপত্র। বিছানা থেকে ঘর লাগোয়া বাথরুম যেতে কয়েক পা হাঁটতে হয়। সেই মাপ ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা নেন। নেওয়া হয় বাথরুমের মাপও। তখনই দেখা যায় বাথরুমের ভিতর ৬ ইঞ্চি উঁচু একটি জায়গা আছে। সেখানেই রয়েছে কমোড। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই উঁচু জায়গার পাথরটি খুব মসৃণ নয়। সেই জায়গায় তিনি সম্ভবত হোঁচট খান। তখনই তাঁর গোড়ালি, মুখ ও কানের কাছে আঘাত লাগে। রক্ত বের হতে থাকে। তিনি কমোডে গিয়ে বসেন। এর মধ্যেই তাঁর সেরিব্রাল স্ট্রোক হয়, যা হওয়া অসম্ভব নয়। বসে থাকা অবস্থাতেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। সেসময় তাঁর মাথা বাঁদিকে হেলানো অবস্থায় ছিল।
এদিকে, এদিন ঘরের বিছানা থেকে বাথরুমে যাওয়ার প্যাসেজে কয়েক ফোঁটা রক্ত দেখতে পান ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা ওই নমুনা সংগ্রহ করেন। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, যখন তাঁর দেহ বাথরুম থেকে বিছানায় নিয়ে আসা হচ্ছিল, তখনই কয়েক ফোঁটা রক্ত মেঝেয় পড়ে। তখনও রক্ত সম্পূর্ণভাবে জমাট বাঁধেনি। ওই রক্তের নমুনা পরীক্ষা করার পর এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত হবেন। এ ছাড়াও ঘরের কিছু আসবাবে রক্তের ছাপ দেখা গিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, শর্বরী দত্তর দেহ বাথরুম থেকে তুলে নিয়ে আসার সময় পরিবারের কারও হাতের ছাপ ওই আসবাবে লাগে। সেই কারণে প্রাথমিকভাবে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের অভিমত, এই ঘটনার পিছনে কোনও ‘ফাউল প্লে’ বা অসঙ্গতি নেই। তবে ফরেনসিক রিপোর্ট হাতে পেলে এই বিষয়ে পুলিশ নিশ্চিত হবে। তদন্তের কারণে ফরেনসিক রিপোর্টের উপর গুরুত্ব দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.