সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের দুঃসংবাদ! নক্ষত্রপতন বাংলা সাহিত্যজগতে। প্রয়াত সাহিত্যিক দেবেশ রায়। অসুস্থ হয়ে বাগুইআটির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাত ১০.৫০ মিনিট নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যগ করেন তিনি। সূত্রের খবর, বুধবার রাতেই শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে তাঁকে ভরতি করা হয়েছিল ওই হাসপাতালে। তবে বৃহস্পতিবার বেলা নাগাদ দেবেশ রায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে শুরু করে। এরপর এদিন রাতেই মৃত্যু হয় বাংলা সাহিত্যজগতের এই বিশিষ্ট সাহিত্যিকের। প্রবাদপ্রতীম সাহিত্যিক দেবেশ রায়ের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বাংলা সংস্কৃতিমহলে।
মৃত্যুকালে দেবেশ রায়ের বয়স হয়েছিল ৮৪। ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন এই অশীতিপর সাহিত্যিক। তাঁর ছেলে থাকেন আমদাবাদে। ১৯৩৬ সালে অবিভক্ত বাংলার পাবনা জেলার বাগমারায় জন্মগ্রহণ করেন দেবেশ রায়। এরপর উত্তরবঙ্গেই তাঁর বেড়ে ওঠা। জলপাইগুড়িতে প্রাথমিক শিক্ষার পাঠ শেষ করে তিনি ভরতি হন আনন্দচন্দ্র কলেজে। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স করেন। ১৯৫৯ সালে তিনি আনন্দচন্দ্র কলেজেই ফের অধ্যাপক হিসাবে যোগ দেন। তাঁর প্রথম প্রকাশিত সৃষ্টি ‘যযাতি’। একসময়ে বহু সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদনাও করেছেন দেবেশ রায়। উল্লেখ্য, ‘তিস্তাপারের বৃত্তান্ত’ উপন্যাসের জন্য তিনি ১৯৯০ সালে সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার পান।
দেবেশ রায়ের উল্লেখযোগ্য উপন্যাসগুলির মধ্যে রয়েছে ‘লগন গান্ধার’, ‘মানুষ খুন করে কেন’, ‘বরিশালের যোগেন মণ্ডল’, ‘মফস্বলী বৃন্তান্ত’, ‘সময় অসময়ের বৃত্তান্ত’ প্রভৃতি। এছাড়াও লিখেছেন বহু ছোটগল্প। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংকলন ‘দেবেশ রায়ের ছোটগল্প’, ‘স্মৃতিহীন বিস্মৃতিহীন’। গল্প ও উপন্যাস ছাড়াও গবেষণামূলক বহু প্রবন্ধে বিশেষ অবদান রয়েছে দেবেশ রায়ের। প্রবন্ধ গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘উপনিবেশের সমাজ ও বাংলা সাংবাদিক গদ্য’, ‘উপন্যাসের নতুন ধরনের খোঁজে’, ‘রবীন্দ্রনাথ ও তাঁর আদি গদ্য’, ‘শিল্পের প্রত্যহে’, ‘সময় সমকাল’ প্রভৃতি। দেবেশ রায়ের মতো একজন অভিভাবক হারানোয় লেখক ও পাঠক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.