সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাচ্চাদের ঘুম পাড়ানি গল্প শোনাতে গিয়ে তৈরি করে ফেলেছিলেন বিশ্বখ্যাত রূপকথা ‘হ্যারি পটার সিরিজ’। শৈশব-কৈশোরের ছেলেমেয়েদের হাতে জাদুদণ্ড তুলে সম্পূর্ণ অন্য এক কল্পলোকে নিয়ে গিয়েছিলেন জে কে রাউলিং। আট থেকে আশি – হ্যারি পটারকে সেসময় ভাল না বেসে থাকতে পারেননি কেউ। তো সেই শিশুদরদী সাহিত্যিক ফের কলম তুলে নিয়েছেন। লকডাউনে ঘরবন্দি বাচ্চাদের আনন্দ দিতে আবার লিখেছেন রূপকথার গল্প। অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর নতুন কল্পকাহিনি – ‘দ্য ইকাবগ’ (The Ickabog)। অনলাইন থেকে বইটি পড়তে আলাদা করে কোনও অর্থ লাগবে না। ‘হ্যারি পটার’-এর পর ফের রাউলিং কী জাদু দেখান তাঁর নব্য সৃষ্টিতে, সেদিকেই তাকিয়ে আগ্রহী মহল।
মঙ্গলবার বিকেলে অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে রাউলিংয়ের নতুন কাহিনি ‘দ্য ইকাবগ’। বলা হচ্ছে, এটিও এক কল্পলোকের গল্প। তবে পটারখ্যাত লেখিকার অন্যান্য সাহিত্যকর্মের চেয়ে আলাদা। আর জে কে রাউলিং নিজে নতুন কাহিনি সম্পর্কে বলেছেন, “সত্য এবং ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে গল্প। কোনও নির্দিষ্ট সময়কে এখানে ধরা হয়নি। তাই বিশ্বের সাম্প্রতিক ঘটনাবলির ছাপ এখানে পড়েনি। বরং যে কোনও সময়ে, যে কোনও প্রেক্ষাপটে এই গল্প পড়ে আনন্দ পেতে পারেন সকলে, বিশেষত বাচ্চারা।”
মঙ্গলবার বইটি অনলাইন প্রকাশের অনুষ্ঠানে এই গল্প তৈরির নেপথ্যে কাহিনীও বলেছেন রাউলিং। তাঁর কথায়, “লকডাউন আমার বাচ্চাদের কাছে একটু একঘেয়ে হয়ে যাচ্ছিল। ওরা আমার কাছে নতুন গল্প শুনতে চাইত। আমি মন ভাল করা কিছু গল্প শোনাতাম। তার বেশিরভাগটাই পরিবারের পুরনো স্মৃতিকথা। তারপরই হঠাৎ মনে হল, অন্য বাচ্চারাও হয়ত একঘেয়েমির মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছে। তখনই লিখতে বসলাম। লেখার পর প্রতিদিন রাতে বাচ্চাদের নিয়ে অধ্যায়গুলো আবার পড়ে দেখতাম। দু’জন আমাকে বলল যে এটা পড়ে ওদের নিজেদের ছোটবেলার কথা মনে পড়ছে। কয়েক সপ্তাহ আমি এমন একটা কল্পলোকে ডুবে ছিলাম যে অন্য কোনও দিকে মন দিতে পারিনি। সাত থেকে ন’বছরের বাচ্চারা চাইলে সবাইকে পড়েও শোনাতে পারে দ্য ইকাবগ।” সুতরাং, ধরে নেওয়াই যায়, শৈশবের স্মৃতিকে কেন্দ্র করে জাদুমাখা নতুন কাহিনি লিখে ফেলেছেন জে কে রাউলিং। আপাতত ৩৪টি অধ্যায় বিনামূল্যেই অনলাইনে পড়া যাবে। দ্য ইকাবগ বই আকারে প্রকাশিত হবে নভেম্বর মাসে।
আসলে হ্যারি পটার সিরিজের শেষ বইটি লেখার পর ছোটদের কাহিনি রচনা থেকে বিরতি নিয়েছিলেন বিশ্বখ্যাত লেখিকা। মাঝে তিনি একটু বড়দের জন্য গল্প লিখছিলেন। রবার্ট গ্যালব্রেথ ছদ্মনাম নিয়ে লিখে ফেলেছিলেন ‘দ্য ক্যাজুয়াল ভ্যাকেন্সি’, ‘দ্য কুক্কুস কলিং’। কিন্তু ছোটদের টানে ফের কলম ধরেছেন রাউলিং। তাদের সামনে ফের বুনে দিয়েছেন মায়াবি জগতের জাল। তিনি জানিয়েছেন, এই বই প্রকাশ থেকে প্রাপ্ত অর্থ মহামারী মোকাবিলা খাতে খরচ করা হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.