বর্ধমানে উদ্ধার পাল-সেন যুগের সূর্য মূর্তি। ছবি: মুকুলেসুর রহমান।
সৌরভ মাজি, বর্ধমান: নতুন বছর, শীতের সকাল। হইহই করে পিকনিক করতে গিয়েছিল একদল আমুদে মানুষ। গন্তব্য পূর্ব বর্ধমানের রায়নার নতুন পঞ্চায়েত এলাকার হরিপুর। কিন্তু চড়ুইভাতি করতে গিয়ে যে এভাবে ঐতিহাসিক যুগে পৌঁছে যাবেন, তা ভাবতেও পারেননি রাজকুমার কুণ্ডু, সঞ্জয় তা-রা! অথচ বাস্তবে ঘটল তেমনই। পিকনিক স্পটের অদূরে তাঁদের চোখে পড়ল, বড়সড় কালো একটা খোদাই করা মূর্তি। দেখেই তাঁরা বুঝতে, বহু প্রাচীন মূর্তি এটি, আদল সূর্যমূর্তির মতো। সপ্তাশ্ব, একচক্র, দুই নারী – এক জায়গায় খোদাই করা সব। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা খবর দেন পুলিশ। জেলার এসপি সায়ক দাসের নেতৃত্বে মূর্তি উদ্ধার করে সংরক্ষণের জন্য পাঠানো হয় বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজিয়ামে। তা নিয়ে গবেষণা শুরু করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
গত শুক্রবার রায়নার হরিপুরে পিকনিক করতে গিয়েছিলেন রাজকুমার কুণ্ডু, সঞ্জয় তা, মানিক চাঁদ মণ্ডল-সহ অনেকে। আচমকা তাঁদের চোখে পড়ে, অদূরে এক কালো মূর্তি পড়ে আছে। তা উদ্ধারের পর বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজিয়াম ও আর্ট গ্যালারিতে দেওয়া হয়। ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক শ্যামসুন্দর বেরা জানিয়েছেন, পাল-সেন যুগের মূর্তি। দশম-একাদশ শতকের। অর্থাৎ প্রায় ১০০০ থেকে ১১০০ বছরের প্রাচীন। কালো ব্যাসাল্ট পাথরের মূর্তি। সপ্ত অশ্ববাহিত রথে অবস্থিত, মাঝে একচক্র রথ। সূর্যদেবের দুই হাতে পদ্ম, রয়েছে সারথী-সহ কয়েকজনের মূর্তিও। সূর্য মূর্তির দুপাশে ঊষা ও প্রত্যুষা নামে দুই নারীও রয়েছে। বলা হচ্ছে, এই মূর্তিতে ভাস্কর্যের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে মিশে রয়েছে ধর্মও।
জানা গিয়েছে, একশো কেজি ওজন হবে মূর্তিটির। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজিয়ামে তা সংরক্ষণ করা হয়েছে। সেখানকার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক শ্যামসুন্দর বেরার অনুমান, হয়তো পাশে মন্দির ছিল। বন্যায় ভেসে গিয়েছিল অথবা চুরির পর ফেলে দেওয়া হয়ে থাকে। যার জেরে মূর্তিতে সূর্যের মুখ কিছুটা বিকৃত হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.