সন্দীপ্তা ভঞ্জ: আক্রান্ত ছাত্রসমাজ। CAA-এর প্রতিবাদে দিল্লি থেকে কলকাতার রাজপথে নেমেছে পড়ুয়ারা। সরব হয়েছে একের পর এক ইস্যুতে। এর মাঝেই পুণের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে চরম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অস্বাভাবিক ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে অনশনে নেমেছেন পড়ুয়ারা। বিক্ষোভে শামিল চৈতি ঘোষালের ছেলে অভিনেতা অমর্ত্য রায়।
একের পর এক কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ফি বৃদ্ধি হচ্ছে। দিল্লির জওহরলাল নেহেরু ইউনিভার্সিটির হোস্টেল ফি বৃদ্ধি থেকে বিশ্বভারতীতে প্রবেশিকা ফি বৃদ্ধি, সবেতেই সরব হয়েছে পড়ুয়ারা। এবার ফি বৃদ্ধির সেই আঁচ গিয়ে পড়ল পুণের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটেও (Film and Television Institute of India)। ভরতির ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে অনশনে বসেছেন এফটিআইয়ের পড়ুয়ারা। এফটিআইআইয়ের স্টুডেন্ট ইউনিয়নের হয়ে যে আন্দোলনের প্রথম সারিতে রয়েছেন সংশ্লিষ্ট ইনস্টিটিউটের পড়ুয়া তথা অভিনেতা অমর্ত্য রায়। যিনি কিনা সদ্য অজয় দেবগণের সঙ্গে রহিম সাহেবের বায়োপিক ‘ময়দান’-এর শুটিং সেরেছেন। বলিউডের সিনেপর্দায় ২২ গজে যাঁকে দেখা যাবে চুনী গোস্বামীর ভূমিকায়।
অমর্ত্য পুনে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে ফিল্ম ডিরেকশনের ছাত্র। এপ্রসঙ্গে সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল-এর তরফে অমর্ত্যর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “সোমবার থেকে ইনস্টিটিউট চত্বরে অনশনে বসেছেন পড়ুয়ারা। বছরের পর বছর অস্বাভাবিক হারে ফি বৃদ্ধি পাচ্ছ। কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ হলেও এখানে প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসার আগে ১০ হাজার টাকা দিতে হয়। আমি যখন ২০১৭-তে পরীক্ষা দিয়েছিলাম তখন প্রবেশিকা পরীক্ষার ফি হিসেবে আমাকে দিতে হয়েছিল আড়াই হাজার টাকা। আর এখন ২০১৯-এ এসে তা দাঁড়িয়েছে দশ হাজার টাকায়। ছাত্রছাত্রীদের ভিন্নরকম স্কিম দেখিয়ে এই দশ হাজার টাকা ধার্য করা হচ্ছে। এমনকী, বাকরুদ্ধ করা হচ্ছে পড়ুয়াদের।”
অভিযোগ, দিনের পর দিন পড়ুয়াদের সুবিধে-অসুবিধের দিকে কর্ণপাত করা তো দূরের কথা, এমনকী কথা বলার অধিকারও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। অতঃপর, একপ্রকার পড়ুয়াদের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা না করে তাঁদের অজান্তেই এসব নিয়মগুলো চাপানো হচ্ছে। দিনের পর দিন ফি বৃদ্ধি হয়ে যাচ্ছে। আগামী দিনে তো গগনচুম্বী হয়ে দাঁড়াবে এই ফি। উপরন্তু প্রতি বছর বার্ষিক ফি ১০ শতাংশ করে বাড়ানোর নিয়ম লাগু হয়েছে।” কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ একটা শিক্ষাকেন্দ্রে কীভাবে এরকম ফি বৃদ্ধি হতে পারে? প্রশ্ন তুলেছেন অমর্ত্য রায়। বার্ষিক ফি কমানো এবং যতক্ষণ না এই ফি কমানো হচ্ছে ২০২০ সালের JET পরীক্ষা বন্ধ রাখার দাবি তুলেছে ছাত্ররা। দাবি না মানলে ইনস্টিটিউটে পঠনপাঠন বন্ধ করার কথাও বলেছেন ছাত্ররা।
অভিনেতা অমর্ত্যর কথায়, “গোটা দেশে ছাত্রছাত্রীদের উপর আঘাত হানা হচ্ছে। শুধুমাত্র সরকারের ঝান্ডাধারী ছাত্রদেরই অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। দিল্লির ভিডিওগুলো যত দেখেছি মন হয়েছে, সমগ্র ছাত্র গোষ্ঠীর উপর আক্রমণ। দেশ জ্বলছে। একটা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে লাইব্রেরি, ক্লাসরুম, হোস্টেলে কী করে কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়তে পারে পুলিশ? আজ জামিয়া মিলিয়াতে আক্রমণ হচ্ছে, কাল অন্য এক শিক্ষাকেন্দ্রে হবে!”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.