Advertisement
Advertisement

পদচিহ্ন, পাণ্ডুলিপি নিয়ে প্রথম চৈতন্য সংগ্রহশালা শহরে

আলো-দৃশ্যশ্রাব্য মাধ্যমে ফিরে দেখা চৈতন্যের জীবন।

First Chaitanya Museum in the city
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:January 21, 2019 9:49 am
  • Updated:January 21, 2019 1:30 pm  

দীপঙ্কর মণ্ডল : মধ্যযুগের অন্ধকার সময়ের মধ্যে দিয়ে বালক নিমাইয়ের বড় হয়ে ওঠা। তাঁর প্রেমের টানে ধাবমান মানুষের ঢল। শাসকের চোখে চোখ রেখে বিশ্বের প্রথম জননেতা নিজের অধিকার বুঝে নিচ্ছেন। এমনই বহু জানা,অজানা ইতিহাস তুলে আনা হয়েছে বিশ্বের প্রথম শ্রীচৈতন্য মিউজিয়ামে। আলো-দৃশ্য-শ্রাব্যের মাধ্যমে সেই ইতিহাসই চাক্ষুষ করবেন দর্শক। সংগ্রহশালাটিতে থাকছে শ্রীচৈতন্যের নিজের হাতে লেখা পাণ্ডুলিপি। পুরী যাওয়ার পথে ঝাড়খণ্ডের জঙ্গলে মহাপ্রভুর কীর্তনে যোগ দিত বন্য পশুরাও। সেই সময়ে পাথরের উপর নিমাই সন্ন্যাসীর পায়ের ছাপও জোগাড় করেছে বাগবাজারের গৌড়ীয় মঠ।

শ্রীচৈতন্যের গাত্রবর্ণ ছিল সোনালি। চারতলা সংগ্রহশালাটির বাইরের রং তাই সোনার মতো। ভিতরে ঢুকলে অভিভূত হতে হয়। মধ্যযুগের নদিয়া যেন উঠে এসেছে একতলায়। খড়ের ছাউনি দেওয়া ছোট ছোট মাটির ঘর। নিমাইয়ের জন্ম থেকে তাঁর বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের নিদর্শন। মাটির পুতুলের মাধ্যমে শিল্পী তৈরি করেছেন শ্রীচৈতন্যের বিবাহ, সন্ন্যাসগ্রহণ পর্ব। আছে পটচিত্র। দেওয়ালের পাশে ঝোলানো পুরনো আমলের টেলিফোন। যা কানে দিলে ভেসে আসে ঘটনার বর্ণনা। গৌড়ীয় মঠের সভাপতি ভক্তিসুন্দর সন্ন্যাসী মহারাজ জানালেন, “মিউজিয়ামের একটি অংশে নামসংকীর্তন চলবে। প্রযুক্তির কল্যাণে দর্শকের মনে হবে তিনিও কীর্তনের তালে নাচছেন। ২৪ বছর বয়সে এই পথ ধরেই মহাপ্রভু পুরী গিয়েছিলেন। তাঁর পদধূলি স্নাত বাগবাজারে সংগ্রহশালাটি করতে পেরে আমরা গর্বিত।”

Advertisement

                               [নির্মল ধরের ‘উর্বশীদের দিনরাত্রি’-র সৌজন্যে ফিরে দেখা সিনে সুন্দরীদের]
একশো বছর আগে বাগবাজারে গৌড়ীয় মঠটি তৈরি হয়। প্রতিষ্ঠাতা ভক্তি সিদ্ধান্ত সরস্বতী প্রভুপাদ নিয়েও একটি গ্যালারি থাকছে এখানে। কাজ প্রায় শেষ। সন্ন্যাসী মহারাজ জানালেন, “আমাদের মঠের লক্ষ লক্ষ সদস্য চাইছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংগ্রহশালাটি উদ্বোধন করুন। দেশবিদেশের চৈতন্য অনুরাগী ভক্তের দল তাঁরই অপেক্ষায়। মুখ্যমন্ত্রী সময় দিলে সংগ্রহশালা ভক্তদের জন্য খুলে দেওয়া হবে।” বাগবাজার গিরীশ মঞ্চের উলটোদিকেই এই মিউজিয়াম। কাজ শুরু হয় পাঁচ বছর আগে। খরচ প্রায় ১৫ কোটি টাকা। গৌড়ীয় মঠ সূত্রে খবর, কয়েকটি কর্পোরেট সংস্থা সাহায্য করেছে। তবে এখনও প্রচুর টাকা দরকার। ভক্তদের কাছে তাঁরা সাহায্যের আবেদন করেছেন।

নদিয়ায় ২০০ বছর আগে শ্রীচৈতন্যের জন্মভিটে থেকে একটি বিষ্ণুমূর্তি উদ্ধার হয়েছিল। তা সংগ্রহ করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে গৌড়ীয় মঠের সংগ্রহশালায়। বৃন্দাবনের নানা পুঁথিও আছে। তবে যা নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোড়ন তৈরি হয়েছে, তা হল – মহাপ্রভুর নিজের হাতে লেখা পাণ্ডুলিপি। সেই পাণ্ডুলিপিটি যে অমূল্য তা নিয়ে ইতিহাসবিদদেরও সন্দেহ নেই। ধর্মীয় নানা দিকে আলোকপাত করা ছাড়াও এই পাণ্ডুলিপি বিশ্ব ইতিহাসের আকর। সেই আলোচনাতেই এখন মশগুল ঐতিহাসিকদের একাংশ। দুষ্প্রাপ্য অন্য অনেক পাণ্ডুলিপিও থাকছে। সংগ্রহশালাটি সবদিক থেকে আধুনিক। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও আঁটসাঁট। সিসি ক্যামেরা, নিরাপত্তাকর্মীরা তো থাকছেনই, উপরন্তু ইতিহাস বর্ণনায় আধুনিক প্রযুক্তিরও সাহায্য নেবে গৌড়ীয় মঠ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement