সন্দীপ্তা ভঞ্জ: ‘উৎসবে নেই’ বলা শিল্পীদের পুজোর মঞ্চে দেখে সোশাল মিডিয়ায় ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের অন্ত নেই! আর জি কর আবহে প্রথম সারিতে থেকে প্রতিবাদ করার পর ‘উৎসবে না ফেরার’ কথা বলেছিলেন বাংলার বিশিষ্ট শিল্পীদের একাংশ। প্রতিবাদী আন্দোলনে দেখা গিয়েছিল সনাতন দিন্দাকেও। রাজ্য চরুকলা পর্ষদের সদস্যপদও ছেড়েছিলেন তিনি। তবে বৃহস্পতিবার সন্ধেয় বাঘাযতীনের এক পুজোয়(Durga Puja 2024) সাংসদ-অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ এবং যাদবপুরের তৃণমূল বিধায়ক তথা মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদারের পাশে তাঁকে দেখে তাঁর বিরুদ্ধে ‘দ্বিচারিতা’র অভিযোগ উঠে! আগমনির আগমনকে সামনে রেখেই কি ‘ব্যবসা-রোজগার’ করতে নেমে পড়লেন ‘প্রতিবাদী শিল্পীদের’ একাংশ? এহেন অভিযোগ উঠতেই সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল-এর কাছে মুখ খুললেন সনাতন দিন্দা।
শিল্পীর মন্তব্য, “পাড়ার ছেলে হিসেবেই পাড়ার পুজোয় ছিলাম। আমাদের বাঘাযতীনের ছেলেপুলেরা আমাকে এবং লগ্নজিতা চক্রবর্তীকে অনুরোধ করেছিল পুজোর উদ্বোধন করার জন্য। আমি এভাবে কোনওদিনই পুজোর উদ্বোধন করি না। তৎসত্ত্বেও পাড়ার ছেলেরা সকলে মিলেমিশে এত স্বল্প বাজেটে যেভাবে পুজোটা করছে, তাই আমি গিয়ে হাতে হাত লাগিয়ে কাজ করেছি। এবং প্রতিমা তৈরি করেছি। সেদিন আমি প্রতিমার কাজই করছিলাম ওখানে। তখন আমাকে ভিড়ে মধ্যে ডাকা হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য। ওখানে গিয়ে দেখলাম, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা রয়েছেন। ওঁদের দিয়েই উদ্বোধন করানো হয়েছে। সবথেকে উল্লেখ্য, সায়নী ঘোষ সেই এলাকার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সাংসদ। উনি কোথায় যাবেন, কী করবেন? সেটা একান্তই ওঁর ব্যক্তিগত বিষয়। আমাকে ডাকা হয়েছিল, একজন শিল্পী হিসেবে আমি উপস্থিত ছিলাম। তার পর যেভাবে ট্রোল করা হচ্ছে, সেটা খুব খারাপ। উনি নির্বাচিত। আর আমি স্বশিক্ষায় নিজের কাজের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত শিল্পী। অন্যায় যদি কেউ করে, তার বিরুদ্ধে নিশ্চয়ই প্রতিবাদ করব। পথে নেমে প্রতিবাদ করেছি, সেটা আমার ব্যক্তিগত বিষয়। কিন্তু এটা আমার পেশা।”
শিল্পী সনাতন দিন্দার(Sanatan Dinda) সংযোজন, “আমাকে একবছর আগে এই দুর্গাপুজো কমিটির তরফে বলা হয়েছিল প্রতিমার কথা। সেই সূত্রেই আমি করেছি। যদি মনে হত, আমি প্রতিবাদ করেছি বলে আমার তৈরি প্রতিমা নেবেন না দুটো ক্লাব, তাহলে আমাকে পরিষ্কারভাবে কমিটির তরফে বলতে পারতেন কেউ। তবে আমার করা কাজ তো তাঁরা স্বানন্দে নিয়েছেন। আর সাংসদ-বিধায়ক হোক বা শিল্পী, সকলেই মানুষ। কে প্রতিবাদে থাকবেন, কে থাকবেন না এটা আমার দেখার বিষয় নয়। কে কীভাবে প্রতিবাদ করবেন? সেটাও সকলের ব্যক্তিগত বিষয়। এটাকে রাজনৈতিক বিপ্লব হিসেবে আমি দেখি না, এটা সামাজিক প্রতিবাদ বা বিপ্লব। একজন সমাজ সচেতন মানুষ হিসেবে আমি কীভাবে রাস্তায় দাঁড়াব, খাব, কথা বলব- আমার ব্যক্তিগত জায়গা। আমি তো নেতা নই যে, প্রতিটা মুহূর্তে আমাকে পলিটিক্যালি কারেক্ট হয়ে কোনও চিত্রনাট্য আওড়াতে হবে। তবে আবেগের চোটেও ভুলভাল মন্তব্যও করব না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.