সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: বাংলার লোকসংস্কৃতির ছোঁয়া এবার দক্ষিণ কোরিয়ার মাটিতে। জিওনজু আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রদান অনু্ষ্ঠানে বঙ্গের ঐতিহ্যশালী সংস্কৃতি তুলে ধরতে বৃহস্পতিবার পাড়ি দিচ্ছেন তিন শিল্পী। বিদেশি অতিথিদের সামনে ছৌ-নৃত্য পরিবেশন করবেন পুরুলিয়ার দুই শিল্পী জগন্নাথ ও বীরেন কালিন্দী। আর নিজের চিত্রকলা সেখানে তুলে ধরবেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পটশিল্পী সুষমা চিত্রকর।
জিওনজু শহরেই এই ইন্টারন্যাশন্যাল অ্যাওয়ার্ডস ফেস্টিভ্যাল শুরু হচ্ছে ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে। চলবে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এই শিল্পীরা ২৭ ও ২৮ সেপ্টেম্বর দু’দিন ধরে ছৌ, নাটুয়া ও পটের গান শোনাবেন। এই উৎসবেই জিওনজু আন্তর্জাতিক পুরস্কার পাচ্ছে বাংলায় রাজ্য সরকারের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে লোকশিল্পীদের নিয়ে কাজ করা বাংলা নাটক ডট কম। পিছিয়ে পড়া জনজাতির সাংস্কৃতিক উন্নয়নে লোকশিল্পের প্রসার ঘটিয়ে তাঁদের আর্থ–সামাজিক অবস্থার বদল করার সাফল্যতেই ওই সংস্থাকে এই পুরস্কার দিচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া।
দুই ছৌ ও এক পট শিল্পী মঙ্গলবারই কলকাতা রওনা দিয়েছেন। বলরামপুরের পাঁড়দ্দা গ্রামের বীরেন কালিন্দী ছৌ নাচের দলের দুই সদস্য বীরেন ও জগন্নাথ মহিষাসুরমর্দিনীর একটি অংশ তুলে ধরবেন। সেইসঙ্গে এই অনুষ্ঠানের শেষ দিন নাটুয়া নাচবেন দুই ভাই। মহাদেব দুর্গাকে বিবাহ করার সময় আনন্দ উৎসবে নন্দী–ভৃঙ্গি যে নাচ করেছিলেন নাটুয়াতে, সেই নাচই তুলে ধরবেন দুই ভাই। ২৭ সেপ্টেম্বর মহিষাসুরমর্দিনী পালার একটি অংশ তুলে ধরতে মহিষাসুর সাজবেন জগন্নাথ কালিন্দী।
কার্তিকের ভূমিকায় দেখা যাবে তার দাদা বীরেনকে। একইভাবে নন্দী সাজবেন বীরেন, ভৃঙ্গি জগন্নাথ। পটশিল্পী সুষমা চিত্রকর তাঁর শিল্পকলা দেখিয়ে যেমন গান গাইবেন, তেমনই ওই উৎসবের স্টল থেকে তার এই রঙবাহারি পট বিক্রিও করবেন। নাটুয়া শিল্পকলায় পাঁড়দ্দা গ্রামের এই বীরেন ও জগন্নাথের হাতেখড়ি পুরুলিয়ার প্রখ্যাত লোক শিল্পী হাড়িরাম কালিন্দীর কাছে। দুই শিল্পীর কথায়, “নাটুয়া খুব পরিশ্রমের নাচ। এই শিল্পকলা এখন হারিয়ে যাচ্ছে। তার মধ্যেই কোনওভাবে এই শিল্পকলাকে আমরা বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছি। দক্ষিণ কোরিয়ার অনুষ্ঠান আমাদের কাছে খুব চ্যালেঞ্জের।” জিওনজু শহরে পাড়ি দেওয়ার আগে মঙ্গলবারও ছৌ–নাটুয়ার মহড়া দেন এই দুই ভাই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.