সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তৈরি করা হবে কমপ্লেক্স বা বহুতল। আর তাই সংরক্ষণের বদলে ভেঙে ফেলা হল ভারতরত্ন ওস্তাদ বিসমিল্লা খানের বাড়ির একাংশ। জানা গিয়েছে, বিসমিল্লা খানের (Bismillah Khan) আত্মীয়রাই বাড়িটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এদিকে, আগামী ২১ আগস্ট মহান এই সানাই বাদকের ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকীর আগে এমন ঘটনা সামনে আসায় তৈরি হয়েছে নয়া বিতর্কও। কারণ ভেঙে পড়া অংশের মধ্যে রয়েছে বিসমিল্লা খানের রেওয়াজ ঘরও।
উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) হাদহা সরাইয়ের ওই বাড়িটির দোতলার একটি ঘরে প্রতিদিন রেওয়াজ করতেন বিসমিল্লা খান। কখনই সেটি ছেড়ে যেতে চাননি। এমনকী ত্যাগ করেছিলেন আমেরিকায় থাকার ‘অফার’ও। ২০০৬ সালে তাঁর মৃত্যুর পর শিষ্য এবং ভক্তরা দাবি করেছিলেন, এই বাড়িটিকে ‘হেরিটেজ’ তকমা দিয়ে এখানে সংগ্রহশালা তৈরি হোক। প্রদর্শিত হোক বিসমিল্লার বিভিন্ন স্মারক- এই ছিল দাবি। কিন্তু কেউই এ বিষয়ে এগিয়ে আসেননি। না রাজ্য, না কেন্দ্রীয় সরকার। অভিযোগ, এরপর ওস্তাদজির আত্মীয়রা জানিয়ে দেয়, ওই বাড়িটি ভেঙে একটি বিশাল কমার্শিয়াল কমপ্লেক্স তৈরি করা হবে। তারপরই সেটি ভাঙা শুরু হয়। জানা গিয়েছে, বিসমিল্লা খানের রেওয়াজের ঘরটিও বর্তমানে এই কারণে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
তাঁর পালিতা কন্যা ও সঙ্গীতশিল্পী সোমা ঘোষ এই ঘটনার পর বিরক্তি প্রকাশ করে জানিয়েছেন, ‘‘বাবার ঘর ভেঙে দেওয়া হয়েছে, এটা শোনার পরই আমি ভেঙে পড়েছি। খুব অবাক হয়েছি। ভেঙে ফেলার পর তাঁর মহামূল্যবান জিনিসপত্রগুলোও ফেলে দেওয়া হয়েছে। ওই ঘরটি শুধুমাত্র একটি ঘর নয়, সঙ্গীত অনুরাগীদের কাছে একটি পবিত্র স্থান ছিল। এটির একটি ঐতিহাসিক মূল্য রয়েছে। তাঁর সব জিনিসপত্র সংরক্ষিত করার জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আবেদন করব।’’
১৯৬৩ সালে হাদহা সরাইয়ের ভিক্ষমশাহ লেনের ধারে এই বাড়িটি কেনেন বিসমিল্লা খান। দোতলা বাড়ির উপরের একটি ঘরে, তিনি থাকতেন। রোজ স্নান করে ওই ঘরে রেওয়াজ করতেন তিনি। গত ১২ অগস্ট ওই ঘরটি প্রথম ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, ওই বাড়িটির মালিক ওস্তাদজির পাঁচ ছেলের এক ছেলে মেহতাব হোসেনের পুত্র। তাঁর আত্মীয়রা অবশ্য এই ঘটনার কথা অস্বীকার করেছেন। তাঁর ছোট ছেলে নাজিম হোসেনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এই বাড়ি ভাঙার ব্যাপারে তিনি আদৌও কিছু জানেন না। আপাতত বাইরে রয়েছেন। ফিরে গোটা ব্যাপারটি দেখবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.