বলিউডের হটেস্ট বডির মালিক টাইগার শ্রফ। গতকাল রিলিজ হয়েছে তাঁর ছবি ‘স্টুডেন্ট অফ দ্য ইয়ার ২’। মুম্বইয়ে তাঁর সামনে অহনা ভট্টাচার্য।
টাইগার: (চেয়ারে বসেই টেবিলে সাজানো শিঙাড়ার প্লেট দেখে) আমার সামনে থেকে শিঙাড়াগুলো সরিয়ে দিন প্লিজ।
কেন? খেতে ইচ্ছে করছে?
টাইগার: (হেসে) আসলে আমার যা যা খেতে ইচ্ছে করে, কিন্তু ডায়েটের জন্যে খেতে পারি না, সে সব খাবার শুধু শুঁকে নিয়ে সরিয়ে দিই। তাতেই শান্তি পাই। (শিঙাড়ার প্লেট এগিয়ে) এটা ওদিকে সরিয়ে দিন প্লিজ, ধন্যবাদ।
পরিণীতি চোপড়া সেদিন বলছিলেন যে খাবার শুঁকে সরিয়ে দেওয়ার এই কায়দাটা উনি আপনার থেকেই শিখেছেন।
টাইগার: (অবাক হয়ে) পরিণীতি! ওকে কবে শেখালাম? মনে পড়ছে না তো! যাই হোক, ও যদি এটা করে থাকে তাহলে বলব খুব ভাল করছে। এটা খুব ভাল অভ্যেস। এতে মনও ভরে, আর বাড়তি ক্যালোরিও শরীরে জমে না।
কিন্তু মানুষের তো খাবারের গন্ধ শুঁকলে আরও বেশি করে খিদে পেয়ে যায়, আপনার পায় না?
টাইগার: আমার পায় না। আমি নিজেকে ওভাবেই তৈরি করে নিয়েছি। তা ছাড়া এটাও আমাদের পেশার একটা দিক যে, নিজেকে সব সময় ভাল দেখতে রাখতে হবে, ফিট রাখতে হবে। আজকাল সবাই খুব স্বাস্থ্য সচেতন। বিশেষত হিরোদের তো নিজেদের চেহারার উপর বাড়তি নজর দিতেই হয়। আমি ছাড়াও আরও অনেকে সিক্স প্যাক অ্যাব তৈরি করে। সেটার জন্যেও অনেক রকম ডায়েট মেনে চলতে হয়।
‘চিট ডে’-তেও পছন্দের খাবার খান না?
টাইগার: কে বলল খাই না? চিট ডে-তে জমিয়ে খাওয়াদাওয়া করি। প্রতি রবিবার আমার চিট ডে। দিশার (পাটানি) সঙ্গে আমার ছবিগুলো দেখেছেন নিশ্চয়ই? আই লাভ চিটিং (হাসি)! মানে বলতে চাইছি খাবারের ক্ষেত্রে। আমার আবার সুইট টুথ, তাই চিট ডে-তে চকোলেট, মিষ্টি, এ সব তো খেতেই হয়। মাঝে মাঝে বড়া পাও আর ভাজাভুজি খেতেও খুব ইচ্ছে করে। রবিবার করে যতটা সম্ভব সুস্বাদু খাবার খাই। কারণ সপ্তাহের বাকি দিন আমি যা খাই, সেই খাবারের কোনও স্বাদ নেই।
বেশ কিছু বছর আগেও বলিউডে ফিটনেস নিয়ে এতটা বাড়াবাড়ি ছিল না, বিশেষত নায়কদের ক্ষেত্রে। সব সময় ফিট থাকার চিন্তা কি আজকালকার হিরোদের মনে বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে?
টাইগার: বাকিদের কথা তো বলতে পারব না। তবে আমি ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলো করে বড় হয়েছি। ফলে আমি কোনও দিন এটাকে বাড়তি চাপ হিসেবে দেখিনি। এখনও দেখি না।
[ আরও পড়ুন: ফাউন্টেন পেন থেকে টয়লেট সোপের বিজ্ঞাপন, সর্বত্র ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ]
আপনার বাবাকে তো মনে হয় না এসব নিয়ে এত মাথা ঘামাতে হয়েছে কখনও।
টাইগার: (হেসে) ড্যাড তো বিন্দাস মানুষ! ড্যাড ফ্রেমে দাঁড়ালেই সবাই পাগল হয়ে যেত। আমাদের সময়টা পাল্টেছে। এখন অনেক স্ট্রাগল করতে হয়। আজকাল ও রকম নায়ক আর দেখা যায় না। ওটা ছিল বলিউডের স্বর্ণযুগ। এখন নিয়মকানুন পালটেছে, হিরোদের নিজের চেহারার দিকে কড়া নজর রাখতেই হয়।
সারা দিনে মোটামুটি কত ঘণ্টা ওয়ার্কআউট করেন?
টাইগার: সেটা নির্ভর করে শুট আছে কি না তার উপর। যেদিন শুট বা অন্য কোনও কাজ থাকে না, সে সব দিন আমি ছ’ঘণ্টা করে ওয়ার্কআউট করি। সকালে তিন ঘণ্টা, বিকেলে তিন ঘণ্টা। সকালে নাচ, মার্শাল আর্টস, এগুলো প্র্যাকটিস করি। বিকেলে জিমে যাই। এখন তো নিজেরই একটা জিম চালু করেছি।
আপনি অ্যাকশন আর নাচের জন্য বিখ্যাত। দুটোর মধ্যে একটা বেছে নিতে হলে কোনটা নেবেন?
টাইগার: (একটুও না ভেবে) অবশ্যই নাচ। কারণ অ্যাকশন করতে গিয়ে কখনওসখনও আপনি চোট পেতে পারেন। নাচের ক্ষেত্রে সেই ঝুঁকিটা নেই। তা ছাড়া নাচটা আমি খুব উপভোগ করি। নাচের মাধ্যমে ওয়ার্কআউটও হয়, মনও ভাল থাকে।
কাজের প্রসঙ্গে আসি, ওয়েব সিরিজের অফার পেলে করবেন?
টাইগার: এখনই না। আমার বড় পর্দা বেশি পছন্দ।
‘বাঘি ২’-র পর জীবন কতটা পালটেছে?
টাইগার: গত বছর ‘বাঘি ২’-র সাফল্যের পর থেকে লোকে আমাকে একদম অন্য চোখে দেখতে শুরু করেছে জানেন! সবাই হঠাৎ করে খুব সম্মান করছে আমাকে। ‘স্টুডেন্ট অফ দ্য ইয়ার ২’-র সেটে আমাকে অনেকে ‘স্যর’ বলে ডাকছিল, যেটায় আমি একেবারেই অভ্যস্ত নই। তাঁদের মধ্যে অনেকে বয়সে আমার চেয়ে অনেক বড়, ফলে বেশ অস্বস্তিই হচ্ছিল।
তার মানে বলতে চাইছেন যে ‘বাঘি ২’-র আগে আপনাকে কেউ খুব একটা সম্মান দিত না?
টাইগার: না না, আমি সেটা বলতে চাইনি। আমার সঙ্গে সব সময় সবাই খুব ভাল ব্যবহার করেন, আগেও করেছেন। তবে আমার মনে হয় ‘বাঘি ২’-র আগে আমাকে কেউ খুব সিরিয়াসলি নিত না। হয়তো বাচ্চা ভেবে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করত! এই ছবিটার সাফল্যের পর হয়তো মানুষ আমাকে একজন নির্ভরযোগ্য তারকা হিসেবে দেখতে শুরু করেছে। যদিও আমি মনে করি, আমার এখনও নিজেকে প্রমাণ করা বাকি। তার জন্য আমাকে আরও অনেক কাজ করতে হবে।
‘স্টুডেন্ট অফ দ্য ইয়ার ২’ মুক্তি পাবে সামনের সপ্তাহে। এই ছবিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন?
টাইগার: এটা ‘বাঘি’র মতো অ্যাকশন ছবি না। হালকা মেজাজের ছবি। মজা করতে করতে কাজ করেছি। এই ছবিতে আমি একজন ছাত্রের ভূমিকায় অভিনয় করছি। আমি তো নিজের জীবনে কলেজে যাওয়ার সুযোগ পাইনি। তাই এই ছবিটার সাহায্যে সেই অপূর্ণ সাধটা মিটিয়ে নিলাম।
[ আরও পড়ুন: কিংবদন্তি মান্না দের শতর্বষের জন্মদিনে নস্ট্যালজিক ইন্দ্রাণী-রূপঙ্কর, জানালেন কী শিখেছিলেন ]
বাস্তবে কলেজে জাননি। কিন্তু স্কুলজীবনে যদি এই ছবির মতো দু-দু’জন গার্লফ্রেন্ড পেতেন তাহলে কেমন হত?
টাইগার: স্কুলে থাকতে আমি শ্রদ্ধার (কাপুর) জন্য পাগল ছিলাম। আমরা দু’জন তো একই স্কুলে পড়তাম। কিন্তু আমি এতটাই লাজুক ছিলাম যে, মুখ ফুটে মনের কথাটা কোনও দিন ওকে বলে উঠতে পারিনি। হয়তো মনে মনে আশা ছিল যে ও-ই আমাকে নিজে থেকে এসে কিছু বলবে। কিন্তু সে গুড়েও বালি। (হাসি)
দিশাকে (পাটানি) মনের কথা বলতে পেরেছেন?
টাইগার: (মুখ লজ্জায় লাল, লাজুক হাসি)
দিশা আর আপনার সম্পর্ক নিয়ে এত লেখালেখি হয়, কিন্তু আপনি মুখ খোলেন না কেন?
টাইগার: দেখুন, কারও সঙ্গে নাম জড়ানো বা সেটা নিয়ে লেখালেখি, এ সব তো আমাদের জীবনের একটা অঙ্গ। আমাদের পেশার একটা অঙ্গ। তবে দিশা খুবই সুন্দরী। ওর সঙ্গে নাম জড়ালে আমার খারাপ লাগে না! বরং ভালই লাগে! (হাসি)
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.