অমুকের মেয়ে বা তমুকের গার্লফ্রেন্ড না হয়েও যে ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গা পাকা করে নেওয়া যায়, তা প্রমাণ করে দিয়েছেন তাপসী পান্নু। মুম্বইয়ে তাঁর সঙ্গে আড্ডায় অহনা ভট্টাচার্য।
আপনার নতুন ছবি ‘মুল্ক’ এর জন্যে শুভেচ্ছা।
ধন্যবাদ। আমি সবাইকে বলছি, ছবিটা অবশ্যই দেখুন।
‘মুল্ক’-এর গল্পটা ঠিক কী?
‘মুল্ক’ একটি পরিবারের কাহিনি, যারা নিজেদের হারানো মর্যাদা ফিরে পাওয়ার লড়াই করছে। আমি সেই পরিবারের পুত্রবধূ। আমার চরিত্রের নাম আরতি মহম্মদ। আমি পেশায় উকিল, পরিবারের সম্মান বাঁচানোর জন্যে কোর্টের লড়াইয়ে নামি। আমি মনে করি ছবিটা দর্শকদের চিন্তার খোরাক জোগাবে। হল থেকে বেরিয়ে আসার অনেক পরেও ছবিটা তাঁদের মনে থেকে যাবে।
[সিসিডি-বারিস্তার যুগেও ইতিহাসের আভিজাত্যে গর্বিত ‘ফেভারিট কেবিন’]
‘মুল্ক’-এর ট্রেলার বেরনোর পরপরই পরিচালক অনুভব সিনহা ট্রোলের শিকার। তিনি একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষের পক্ষ নিচ্ছেন, এই অভিযোগে।
দেখুন, যারা ট্রোল করে, তাদের নিজেদের মন আছে বলে আমি মনে করি না। তাদের মানসিকতা নিয়ে কোনও কথা বলার মানেই হয় না। আমার যেটা খারাপ লাগে তা হল এই যে, যাঁরা বুদ্ধিমান, শিক্ষিত, পরিণত, তাঁরা কেন চুপ করে থাকেন? আমি তো কত মানুষের থেকে শুভেচ্ছা আর ভাল ভাল মেসেজ পাই। কিন্তু কই সেগুলো নিয়ে তো কেউ কিছু বলে না? তা হলে ট্রোল নিয়ে এত হইহই কেন? তার কারণ এটাই যে শিক্ষিত মানুষেরা চুপ করে থাকেন। যারা ট্রোল করে তারা চেষ্টা করে আমাদের তাতিয়ে দিয়ে মজা দেখতে। আমরা যদি রেগে যাই, তা হলে তারা আনন্দ পায়। তারা আমাদের মুখ থেকে এমন কথা বের করার চেষ্টা করে যেগুলো তারা শুনতে চায় এবং যার ফলে ঝামেলা হতে পারে।
Dear Morons (Not to be confused with trolls),
This is 2018 July. No one puts out unverified data in this day and age.
Yours Truly,
Someone who loves India— Anubhav Sinha (@anubhavsinha) July 28, 2018
ছবিটিতে আপনাকে উকিলের ভূমিকায় দেখা যাবে। কতটা কঠিন ছিল এ রকম একটা চরিত্রে অভিনয় করা?
এটা বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। সম্প্রতি আমরা কিছু অসাধারণ কোর্টরুম ড্রামা দেখেছি যেমন ‘পিংক’। এ রকম ছবি যদি বেঞ্চমার্ক হয় তা হলে স্বাভাবিক ভাবেই নিজের ওপর চাপটা বেশি এসে যায়। আপনার ওপর দর্শকের প্রত্যাশাও বেড়ে যাবে। তবে আমি চাই মানুষ আমার কাছে প্রত্যাশা রাখুন, সেটা আমাকে পরিশ্রম করতে অনুপ্রাণিত করে। আমি যদি আমার কমফর্ট জোনের মধ্যেই কাজ করে যাই, সেখান থেকে বেরতে না পারি, তা হলে দর্শকের কাছে খুব শিগগির একঘেয়ে হয়ে যাব। অমিতাভ বচ্চনের মতো মানুষ যেখানে উকিলের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন এবং দর্শকের মনে ‘পিংক’ এখনও বেশ টাটকা, সেখানে স্বাভাবিক ভাবেই আমার ওপর খুব বড় দায়িত্ব ছিল নিজেকে প্রমাণ করার। আমি যদি আমার সেরা অভিনয়টা দিতে না পারি তা হলে আই উড স্ট্যান্ড আউট লাইক আ সোর থাম্ব!
[নওয়াজকে ডিরেক্ট করাটা খুব চ্যালেঞ্জিং, কেন একথা তন্নিষ্ঠার মুখে?]
সুজয় ঘোষের ‘বদলা’তে আপনি অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে ফের কাজ করছেন।
আমার তো মনে হচ্ছে ‘পিংক’-এর কন্টিনিউটি চলছে। সেই একই বাঙালি সেট, ডিওপি সেই একই, অভীক(মুখোপাধ্যায়)। শুধু পরিচালক বদলে গিয়েছেন। এবারে টোনিদার (অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরি) বদলে সুজয় ঘোষ। যাই হোক, মিস্টার বচ্চনের কথায় আসি। উনি খুব সহজে মিশে যেতে পারেন সহ-অভিনেতাদের সঙ্গে, একদম বন্ধুর মতো। এত বড় মাপের একজন তারকার সঙ্গে কাজ করছি বলে মনেই হয় না। ‘পিংক’-এর সময় থেকেই।
আপনার টুইটার চেক করছিলাম, যেখানে আপনি সুজয় ঘোষ আর অভীক মুখোপাধ্যায়কে লন্ডনে জোয়ান পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছেন।
হ্যাঁ, আমি বুঝতে পারি না বাঙালিদের জোয়ানের প্রতি এত ভালবাসা কেন! মানে তারা এত জোয়ান খায় কেন? (হাসি)
আসলে বাঙালিরা স্বভাবত একটু পেটরোগা, অথচ খেতে ভালবাসে। তাই হজমের জন্যে জোয়ানের উপর নির্ভর করতে হয়।
হা হা হা! খুব ভাল করলেন এটা আমাকে বলে দিয়ে। এ বার এটা নিয়ে ওর সঙ্গে ইয়ার্কি করতে আরও সুবিধা হবে।
[‘সোনার মেয়ে’ হিমা দাসের বায়োপিক বানাতে আগ্রহী অক্ষয়]
‘মুল্ক’-এ ফিরি। ঋষি কাপুরের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
আমার মনে হয় আমি ভাগ্যবান যে অমিতাভ বচ্চন, ঋষি কাপুরের মতো তারকাদের সঙ্গে কাজ করতে পারছি। ‘মুল্ক’-এ আমি ঋষি কাপুরের পুত্রবধূর ভূমিকায় অভিনয় করছি। ওঁর অভিনয় এত সাবলীল যে মনে হয় না চরিত্রটা করতে গেলে ওঁকে কোনও রকম পরিশ্রম করতে হয়। কেরিয়ারের এই সময়ে এসে ওঁর কাছে ব্যাপারটা হয়তো খুব সহজ হয়ে গিয়েছে। সেটা দেখে শেখার মতো।
শুটিংয়ের ফাঁকে কথা হত ওঁর সঙ্গে?
সেটে উনি খুব বেশি কথা বলেন না। সকলেই জানে উনি একটু গম্ভীর প্রকৃতির মানুষ। তবে ওঁর সঙ্গে যদি আপনার ওয়েভলেংথ ম্যাচ করাতে পারেন, তা হলে কিন্তু ওঁর মতো মানুষ হয় না। আমি সেটাই করেছিলাম।
একটি সাক্ষাৎকারে আপনি বলেছেন বলিউডে পা রাখার সময়ে আপনাকে বেশ কিছু ছবি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল আপনি ‘অমুকের মেয়ে’ বা ‘তমুকের গার্লফ্রেন্ড’ নন বলে। আপনার কি মনে হয় এই ছবিটা কোনও দিন বদলাবে?
অবশ্যই বদলাবে! আমি মনে করি আশায় বুক বেঁধে বাঁচা উচিত। কখনও হাল ছেড়ে দেওয়া উচিত না। আমরা ধীরে ধীরে একটা ইতিবাচক পরিবর্তনের দিকে এগোচ্ছি, যে কারণে আমাদের মতো অভিনেতারাও ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে রয়েছি, ভাল কাজ পাচ্ছি। একদম নিরপেক্ষ পরিস্থিতি কবে তৈরি হবে জানি না। কিন্তু কোনও না কোনও দিন তো হবে। তত দিন আমি আশা ছাড়ব না। আর আপনি যে-ই হন না কেন, আপনার প্রতিভা আছে কি না, সেটাই শেষ কথা। আজ প্রতিভা আর ইচ্ছাশক্তির জোরেই আমি এখানে দাঁড়িয়ে আছি, না হলে এই জায়গাটা অবধি পৌঁছাতে পারতাম না।
[‘ভারত’ ছেড়েছেন প্রিয়াঙ্কা, জায়গা পাকা সলমনের প্রিয়পাত্রী ক্যাটরিনার!]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.