Advertisement
Advertisement
মিঠুন চক্রবর্তী

বছর খানেক পর কলকাতায় শুটিং করলেন মিঠুন, কী বললেন সোহম-শ্রাবন্তী?

‘ডান্স ডান্স জুনিয়র’-এ মিঠুনের সঙ্গে বিচারকের আসনে থাকছেন সোহম-শ্রাবন্তীও।

Soham-Srabanti shares their experience of judging show with Mithun
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:September 18, 2019 7:55 pm
  • Updated:September 18, 2019 7:55 pm  

বেশ কয়েক বছর বিরতির পর কলকাতায় শুটিং করে গেলেন মিঠুন চক্রবর্তী। ফ্লোরে তাঁকে কাছ থেকে দেখে কী মনে হল দুই সহ বিচারক সোহম আর শ্রাবন্তী-র? শুনলেন শুভঙ্কর চক্রবর্তী এবং শ্যামশ্রী সাহা

‘দাদার মিমিক্রি করার সাহস এখনও হয়নি’-  শ্রাবন্তী

Advertisement

আমি ছোটবেলা থেকেই দাদার ফ্যান। ওঁর সঙ্গে আমার আলাপ এই ডান্স শোয়ের অনেক আগে থেকেই। তখন অন্য একটা চ্যানেলে ডান্সের প্রোগ্রাম হত। তারপর তো অনেকদিন উনি ছিলেন না। তখন ওঁকে মিস করেছি। আর এখন তো সামনাসামনি প্রায়ই দেখছি। দাদার সঙ্গে আমিও এই শোয়ের একজন জাজ, এটা আমার কাছে বিরাট ব্যাপার। ‘ডান্স ডান্স জুনিয়র’-এর ফ্লোরেই ওঁকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ পাই। উনি যে মিঠুন চক্রবর্তী সেই ব্যাপারটা ওঁর মধ্যে দেখি না। এটা আগেও দেখেছি, উনি এমনভাবে সবার সঙ্গে কথা বলেন, যেন উনি আমাদের ঘরের মানুষ। ওখানেই আমাদের আড্ডা হয়। উনি সবাইকে খুব এনকারেজ করেন। কাজ করতে করতে ওঁর কাছ থেকে অনেক কিছু শিখছি। ডান্সের স্টেপ, বিটস, এক্সপ্রেশন, সব কিছু নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়। কিন্তু ওঁর কাছ থেকে যা শিখছি, সেটা  ভবিষ্যতে আমার কাজে লাগবে।

ফ্লোরে আমরা প্রচুর মজা করছি। দাদার স্টাইলে ডান্সও করছি। আমি সবার মিমিক্রি করি। কিন্তু দাদার মিমিক্রি করার সাহস এখনও হয়নি। যদি কখনও উনি দেখতে চান নিশ্চয়ই করব। দাদার কাছেই শুনেছি ওঁর জীবনের গল্প। ওঁর স্ট্রাগল পিরিয়ডের কথা। কাজের জন্য অনেকটা পথ উনি হেঁটে স্টুডিওতে আসতেন। ওই স্টুডিওর গেটে একজন দারোয়ান ছিলেন। তিনি রোজ দাদাকে হেঁটে স্টুডিওয় আসতে দেখতেন। তিনি মিঠুনদাকে “তুমি অনেক বড় হবে” বলে আশীর্বাদ করেছিলেন। অনেকদিন পর ওই স্টুডিওতেই দাদার শুটিং ছিল। তখন দাদা সুপারস্টার। গেটে দেখলেন ওই দারোয়ান বসে আছেন। তখন তাঁর অনেক বয়স হয়ে গিয়েছে। দাদা গাড়ি থেকে নেমে ওই দারোয়ানের সঙ্গে কথা বলে নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন। মেকআপ রুমে আমি ওঁর সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার সুযোগ পাইনি। লাঞ্চ উনি মেকআপ রুমেই করেন। ওঁর ডায়েটে কী থাকে সেটা আমারও জানার খুব ইচ্ছে। তবে ওঁর সঙ্গে লাঞ্চ করার সুযোগ এখনও হয়নি। তবে আমরা একসঙ্গে চা, কফি খেয়েছি। শুনেছি এখনও উনি স্ট্রিক্ট ডায়েটে আছেন।

‘আজও নিষ্ঠা অটুট’- সোহম 

soham

যখন কিছু না কিছু খবর রটত ওঁর সম্বন্ধে, বুকটা ছ্যাঁৎ করে উঠত। একবার শুনলাম, ওঁর ভীষণ শরীর খারাপ। কোমরে এত ব্যাথা যে বিছানা ছেড়ে উঠতে পারছেন না। কিছুদিন বাদে শুনলাম দেশের বাইরে চলে গিয়েছেন। তার পর শুনলাম দেশে ফিরেছেন। খবরের কাগজ থেকে টেলিভিশন চ্যানেল মিঠুন চক্রবর্তী সম্পর্কিত কোনও খবর আমার কানে আসেনি, এমন হয়নি। এবং যা খবরই শুনছিলাম, মনে হচ্ছিল সত্যি। বহুবার ওঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। কারণ মিঠুন আংকেল মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন না। খোঁজখবর নেওয়ার সব রাস্তা তাই বন্ধ। মনখারাপ চুড়ান্ত পর্যায়ে চলে গিয়েছিল। এ সবের মধ্যেই ‘ডান্স ডান্স জুনিয়র’ প্রোগ্রামের বিচারক হওয়ার অফার এল। তখনও জানতাম না শো’তে মিঠুন আংকেল থাকছেন। যখন জানলাম ভীষণ খুশি হয়েছিলাম। এটা ভেবে আরও আনন্দ হচ্ছিল যে ‘ডিস্কো ডান্সার’-এর কামব্যাকের সাক্ষী থাকব আমি। 

‘সুপার সিঙ্গার জুনিয়র’- এর গ্র্যান্ড ফিন্যালের সেটে মিঠুন আংকেলের সঙ্গে দেখা হল। কত বছর পর সেটা হল, মনে করতে পারব না, কিন্তু দেখা হওয়ার পর মনে হল, এই তো ক’দিন আগেই একসঙ্গে ছবি করলাম। জড়িয়ে ধরলাম মিঠুন আংকেলকে। অনেকক্ষণ ওইভাবেই ধরে রেখেছিলাম। তার পর প্রণাম করলাম। কত বছর বাদে আমার সুপারস্টারকে আবার এত কাছ থেকে পেলাম। আমি তখন ক্লাস সিক্সে যখন ওঁর সঙ্গে ‘ভাগ্যদেবতা’ বলে একটা ছবি করেছিলাম। ঋতুদিও (ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত) ছিল ছবিতে। সুপারস্টারের সঙ্গে প্রথম ছবি। পরে আরও অনেক ছবি করি। একবার মহারাষ্ট্রে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছিল। মিঠুন আংকেল চাঁদা তুলতে এসেছিলেন কলকাতায়। আমরা সবাই মিলে চাঁদাও তুলেছি। শুটিং হোক বা শুটিংয়ের বাইরে, মিঠুন আংকেল আমার কাছে একই থেকে গিয়েছেন। ওঁর মধ্যে কোনও বদল দেখিনি। ওঁর জন্য মারপিট অবধি করেছি। বন্ধুবান্ধবরা আমায় খুব খেপাত। বলত, “তোর মিঠুন আংকেলকে দেখলাম টিভিতে ভিক্ষে করছে।” শুনেই মাথা গরম হয়ে যেত। গায়ে হাত উঠে যেত। মিঠুন আংকেলের সম্পর্কে কোনও খারাপ কথা সহ্য করতে পারতাম না। এখনও পারি না।

গতকাল ‘ডান্স ডান্স জুনিয়র’- এর আরেকটা এপিসোডের শুটিং শেষ হল। এখনও যখন ওঁকে দেখি, বিস্মিত হই। এরকম একজনের প্রাণশক্তি দেখে অবাক হতেই হয়। আমরা মানে ‘ডান্স ডান্স জুনিয়র’-এর গোটা টিম কিছু না কিছু ওঁর থেকে রোজ শিখছি। মিঠুন আংকেল আমাদের মেন্টর। আর আমরা সবাই ওঁর ছাত্র। ওঁর জীবনের ছোটখাটো কিন্তু প্র্যাক্টিক্যাল অভিজ্ঞতা উনি সেটে শেয়ার করেন, যা আমাদের কাছে শিক্ষণীয়।

আমি যখন ছোট ছিলাম তখন দেখেছি মিঠুন আংকেল কীভাবে মানুষের বিপদ-আপদে সাহায্য করেছেন। এবং আজও করে চলেছেন। ওঁর কথায় বুঝতে পারি যে কথাগুলো উনি শো’তে অংশগ্রহণকারীদের বলছেন, সে সব কথা আমার জীবনেও সমান গুরুত্বপূর্ণ। ঠিক যেভাবে আমাকে ফিল্মের শুটিংয়ের সময় কিউ দিয়ে সাহায্য করতেন, আজও এই পুচকেগুলোকে দিচ্ছেন। কাজের প্রতি ওঁর নিষ্ঠা অটুট। কোনও ত্রুটি নেই। সেটে সারাক্ষণ বিন্দাস থাকেন। হইহুল্লোড়। ঠাট্টা-ইয়ার্কি। এ সবের মধ্যে তিনি দারুণ আছেন। মানে, আমার সুপারস্টার দারুণ আছেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement