ওয়েট লুজ। অমৃতা সিং। ভাই তৈমুর। ডেবিউ ছবি। সারা আলি খানের সঙ্গে মুম্বইতে দিলখোলা আড্ডায় অহনা ভট্টাচার্য।
বলিউডে পা দেওয়ার আগে ক’কেজি ওজন কমিয়েছেন?
সারা: চল্লিশ কেজি! নব্বই কেজির উপরে ওজন ছিল আমার। যখন নিউ ইয়র্কে পড়াশোনা করতাম। সেই সময়ে প্রচুর খেতাম আর একটুও নড়াচড়া করতাম না। বোধহয় পৃথিবীর সবচেয়ে আনফিট মেয়ে ছিলাম আমি। আর এখন টানা ১৫-১৬ ঘণ্টা ছবির প্রোমোশন করার পরও যদি এক ঘণ্টা জিমে না কাটাতে পারি তাহলে আমার রাতে ঘুমই আসবে না।
জিমে কী পরতে পছন্দ করেন?
সারা: জিমে আমি শর্টস পরি, যদিও বাইরে শুধুমাত্র সালোয়ার-কামিজ পরি। তাই তো লোকে আমাকে পাগলভাবে, যে আমি কখনও সালওয়ার-কামিজ পরে ঘুরছি, আবার কখনও অর্ধনগ্ন!
মা অমৃতা সিংয়ের কোন গুণটা পেতে চান?
সারা: সব কিছু! কোনটা বলি? মা যখন রাতে শুতে যান, আমি জানি মা শান্তিতে ঘুমাতে পারেন কারণ উনি কখনও কারও সঙ্গে অন্যায় করেননি। মা সবসময় অন্যদের কথা আগে চিন্তা করেন। এখন তো অনেক বছর হয়ে গিয়েছে যে, মা কোনও ছবির লিড রোলে অভিনয় করেননি, তাও কারও আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন হলে তাকে সাহায্য করার আগে দু’বার ভাবেন না। মায়ের এক শতাংশও হতে পারলে ধন্য হয়ে যাব।
এই যে ছবিটা গত শুক্রবার রিলিজ করল তার প্রথম দিনের শুটিংয়ে নাকি মা-কে নিয়ে সেটে গিয়েছিলেন?
সারা: না, যাইনি। মা বরং বলেছিলেন, তুমি যদি উকিল হতে তাহলে কি আদালতে প্রথম দিন আমাকে কাঠগড়ায় নিয়ে গিয়ে দাঁড় করাতে? ডাক্তার হলে কি ‘ওটি’তে নিয়ে যেতে? তাহলে কেন আমি সেটে যাব তোমার সঙ্গে? জানেন, সেদিন আমি বুঝেছিলাম, যে, অভিনয় যতই মজার মনে হোক না কেন, সেটা কিন্তু আসলে একটা কাজ।
[ সুনীলের স্ত্রীয়ের সঙ্গে কী শর্তে ছবি তুলতে রাজি হলেন অমিতাভ? ]
এই যে ‘কেদারনাথ’ রিলিজ হল, স্টার কিড বলে কি এক্সট্রা প্রেসার হচ্ছে?
সারা: প্রথমেই বলি আমাকে স্টার কিড বলে সম্বোধন করলে আমার ভাল লাগে না। কিন্তু আমি যখন স্টার কিড, তখন এ ব্যাপারে কিছু করণীয় নেই। আর চাপের কথা যদি বলেন আমি কখনও চাপ নিই না।
স্টার কিড শুনতে ভাল লাগে না কেন?
সারা: স্টার কিড কথাটা নিজেই এত বড় যে, এর আড়ালে একটা মানুষের অন্য পরিচিতিগুলো ঢাকা পড়ে যায়। আমি সইফ আলি খান আর অমৃতা সিংহের মেয়ে, এটা ঠিক, কিন্তু তার বাইরেও তো আমার একটা পরিচয় আছে। আমি একটা মেয়ে, আমি ‘কেদারনাথ’-এর অভিনেত্রী, এমন কী যদি আমাকে পাগল মহিলাও বলেন তাহলেও কিন্তু আপনি আমাকে একটা অন্য পরিচয় দিচ্ছেন। আমি জন্মসূত্রে পাওয়া পরিচিতি থেকে পালাচ্ছি না। আমি সেটা নিয়ে গর্বিত। শুধু বলতে চাই যে, তার বাইরেও আমার একটা পরিচয় আছে।
স্টার কিড হওয়ার তো কিছু সুবিধাও আছে?
সারা: সেটা তো আমি অস্বীকার করছি না। যেমন ধরুন আমি এই ছবিটা করার যে সুযোগ পেয়েছি, অনেকেই সেই সুযোগ পায় না। আমি ধর্মার (ধর্মা প্রোডাকশনস) অফিসে গিয়েছি। একটা ছবিও না করে রোহিত স্যর (শেট্টি)-এর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়েছি। এগুলো অবশ্যই অ্যাডভান্টেজ।
ডেবিউ ছবি হিসেবে ‘কেদারনাথ’ কেন বেছে নিলেন? লাভ স্টোরি নিরাপদ বলে?
সারা: দেখুন, আজকের দিনে কিছুই নিরাপদ নয়। ইন্ডাস্ট্রিতে আমি সবে পাঁচ মিনিট সময় কাটিয়েছি তাই এ নিয়ে মন্তব্য করা আমার উচিত নয়। তবু বলছি, আপনি যে ধরনের ছবিই করুন না কেন, যদি কঠিন পরিশ্রম করেন, তাহলে তার ফল পাবেন। আমি যদি উৎসাহ নিয়ে কাজ না করি তাহলে দর্শক ছবি দেখবেন কেন? ধরুন যদি ক্লান্ত মুখে সাক্ষাৎকার দিতে বসি, তাহলে কি আপনি সেটা ছাপবেন?
আপনাদের পরিবারে প্রায় সকলেই অভিনেতা। কাকে দেখে অনুপ্রেরণা পান?
সারা: আমি যখন বড় হচ্ছিলাম, ওই সময়টা সবচেয়ে বেশি কাজ করেছেন বাবা। যে অধ্যবসায় নিয়ে বাবা কাজ করেন, যদি ছবি না চলে, তাহলে ভেঙে না পড়ে সমানে নিজেকে প্রমাণ করে যাওয়ার চেষ্টা করে যান। বাবার এই স্পিরিটটা আমাকে খুব উদ্বুদ্ধ করে। আমিও এ রকম হতে চাই। বাবার ধৈর্যও আমার চেয়ে অনেক বেশি।
[ বিয়েতে ‘নো গিফট প্লিজ’, এমন অবস্থায় নবদম্পতিকে কী উপহার দেবেন? ]
‘কেদারনাথ’ লাভ জিহাদকে প্রোমোট করছে এমন অভিযোগ আনছেন কেউ কেউ। বিতর্কও হচ্ছে। আপনার মত?
সারা: আমার মনে হয় না এই ফিল্ম লাভ জিহাদকে প্রোমোট করছে। যথেষ্ট সংবেদনশীলভাবে আমরা ছবিটা তৈরি করেছি। দর্শক দেখলে নিজেরাই বুঝবেন।
করিনার সঙ্গে আপনার সম্পর্ক নিয়ে নানা জল্পনা। ওঁর কাছে ফিটনেস বা কাজ সংক্রান্ত পরামর্শ নেন?
সারা: করিনা খুব প্রফেশনাল এবং যে ভাবে নিজের কাজ আর ব্যক্তিগত জীবনকে ব্যালেন্স করে চলেন, দেখে শেখার মতো। যখন ওঁদের বাড়ি যাই, টেবিলে কথা হয়। করিনা আমাকে মাঝে মাঝে পরামর্শ দেন এবং আমি সেগুলো মেনে চলার চেষ্টা করি কারণ উনি একজন সফল অভিনেত্রী।
এখনও পরিষ্কার হল না করিনার সঙ্গে আপনার সম্পর্ক কেমন?
সারা: আমাদের সম্পর্ক বরাবর ফ্রেন্ডলি। তার পেছনে কারণ আছে। প্রথমত, করিনা কোনওদিন আমার মা হয়ে ওঠার চেষ্টা করেননি এবং বাবা কখনও জোর করে আমাদের মধ্যে একটা সম্পর্ক চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেননি। অবশ্য এখানে আমার মায়েরও ভূমিকা রয়েছে। মা আমাকে আর ইব্রাহিমকে বুঝিয়েছেন যে, তিনি ছাড়া আর কেউ আমাদের মা হতে পারবে না কোনওদিন, কিন্তু যেহেতু করিনা আমাদের বাবার স্ত্রী, আমরা যেন সর্বদা ওঁকে সম্মান করি। তবে আমি করিনাকে শুধু সম্মান করি না, ভালবাসি। কারণ, উনি আমার বাবাকে সুখী করেছেন।
তিন ছেলেমেয়ের মধ্যে সইফের প্রিয় কে?
সারা: আমি জানি ইব্রাহিম আর তৈমুরের এটা শুনতে একটুও ভাল লাগবে না কিন্তু আমার মনে হয় আমি বাবার প্রিয়। আমি ড্যাডকে ইব্রাহিমের চেয়ে
পাঁচ বছর আর তৈমুরের চেয়ে একুশ বছর বেশি দেখেছি, সেক্ষেত্রে আমার একটা লিড থেকেই যাচ্ছে!
সারা: (হাসি) তবে কী জানেন, আমার মনে হয় বাবা এখন পিতৃত্বটা উপভোগ করছেন কারণ উনি ঠিকঠাক বয়সে পৌঁছেছেন। এবং উনি নিজে সেটা বলেওছেন।
আপনি নিজে তৈমুরের সঙ্গ উপভোগ করেন না?
সারা: খুউউউউব! বাবা, আমি, ইব্রাহিম আমাদের সবার একরকম চোখ। যখন তৈমুরের ছোট্ট মুখে আমার চোখ দেখি তখন মনটা যে কী খুশি হয়ে যায় বলে বোঝাতে পারব না। অনেকেই আমাদের বয়েসের ফারাক নিয়ে ঠাট্টা করেন, বলেন আমি ওর মায়ের বয়সি। তবে আমি সেসব গায়ে মাখি না।
[ অদম্য সাংবাদিকের গল্প ফুটে উঠল ‘আ প্রাইভেট ওয়ার’-এর পর্দায় ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.