রবীন্দ্রভারতী প্রসঙ্গে মুখ খুললেন মহাবিতর্কিত রোদ্দুর রায়। দিল্লি থেকে সাক্ষাৎকার দিলেন শুভঙ্কর চক্রবর্তীকে।
আপনার প্যারডির কথা মেয়েদের পিঠে লেখা, দেখে কী মনে হল?
রোদ্দুর রায়: অনেক দৃশ্য দেখে অনেক কিছু মনে হয়। সব কি বলা যায়? মনে হয়েছে কেউ এটা করেছে। হা হা হা হা হা।
অনেকের মনে হয়েছে, ওরা বেশ করেছে।
রোদ্দুর রায়: সে তো প্রত্যেকটা লোকই যা করছে বেশ করছে। কেউ যদি আইন না ভাঙে, সমাজের ক্ষতি না করে, হোয়াই শুড ইউ থিংক নেগেটিভ? নেগেটিভ ভাবলে সেটা তোমার দোষ। প্রত্যেকের বেসিক অধিকার আছে তার মতো হওয়ার। তাতে আমার কালচার শক কেন হবে?
সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য বিষয়টা আরও ছড়িয়েছে।
রোদ্দুর রায়: আমাদের চারপাশে অনেক কিছু ঘটে যা অনেকে মেনে নিতে পারে না। তা নিয়ে প্রতিবাদ করলে যদি বৃহত্তর সমাজের ভাল না হয়, তাহলেও যদি কেউ রিঅ্যাক্ট করে, সেটা স্টুপিডিটি। রবীন্দ্রভারতীর ঘটনা নিয়ে লোকের যা রিঅ্যাকশন, তাতে বৃহত্তর সোসাইটির কী উন্নতি হচ্ছে? এই যে বাচ্চাগুলোকে ভিকটিমাইজ করছে, ভয় দেখাচ্ছে, এটা সিম্পলি সবলের অত্যাচার দুর্বলের উপরে।
কিন্তু রবীন্দ্রভারতীর মতো একটা ইনস্টিটিউশনে…
রোদ্দুর রায়: সেটা তো ইনস্টিটিউশন বুঝবে। ধরো ‘ফা*’ লেখা টি-শার্ট পরে আমি কোথাও ঢুকছি। তারা যদি সেই জায়গায় এরকম কালচার প্রোমোট না করতে চায়, তারা তো ঢোকার সময় ফিল্টার রাখবে। দেশের নাগরিক হিসেবে আমার অধিকার আছে যা খুশি ড্রেস পরার। কার্নিভাল বা ফেস্টিভ্যালে যেমন খুশি গায়ে আঁকিবুঁকি করার। কোনও একটা জায়গায় তারা যদি মনে করে আমার ব্যক্তিগত কালচার তাদের কালচারকে নষ্ট করছে, তারা গেটে চেক করবে। তা সম্ভব না হলে তাকে আইডেন্টিফাই করে বলবে, প্লিজ লিভ অর প্লিজ ইরেজ দ্যাট। এটা আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে যাচ্ছে না। একটা নর্মাল অ্যাডভান্সড সোসাইটিতে তাই তো হবে, তাই না?
এখানে সেটা হচ্ছে না।
রোদ্দুর রায়: না। আমরা যে আঁচড়াআঁচড়ি-কামড়াকামড়ি নিয়ে সময় নষ্ট করছি, এটাই আমাদের দীনতা। আমাদের বেসিক সমস্যা হল, আমরা সামনের দিকে তাকাতে পারছি না। আমরা ঝগড়ুটে। একটা ইস্যু পেলেই নিজেদের ডিপ্রেশন উগরে বলছি, এটা কী করছে? কী করছে মানে? সে দেশের নাগরিক। তাকে ধমকানোর কোনও অধিকার তোমার নেই। সমালোচনা করতে চাইলে আর্টিকল লেখো। আর্ট ফর্ম ক্রিয়েট করো। পড়াশোনা করে, লজিক সাজিয়ে কিছু একটা করো। কিন্তু ‘এগুলোকে ধরে মারতে হয়’, এটা কনস্ট্রাক্টিভ ক্রিটিসিজম নয়। ডিজিটাল প্রজন্মের কালচার আমরা বুঝতে পারছি না।
তাহলে রবীন্দ্রভারতীর ঘটনাটা আপনি সমর্থন করেন?
রোদ্দুর রায়: আমি সমর্থন করার কে? আর আমি রবীন্দ্রসংগীত বিকৃত করি, এই বক্তব্যটা নিয়ে আমার আপত্তি আছে। কপিরাইট উঠে যাওয়ার পরে ওটা কিন্তু রবীন্দ্রসংগীত নেই। আমি যেটা করেছিলাম, ওটা একটা ডোপ কমেডি ছিল। ইটস আ ড্রামা। তাতে চরিত্রের একটা নির্মাণ আছে। সেই চরিত্রটা ডিপ্রেসড, তার মনে তাই ওরকম ভাষা আসছে। এখানে রবীন্দ্রসংগীত নিয়ে ক্যাওড়া করার কোনও শখই আমার ছিল না। এখন সেটা নিয়ে গান বানিয়ে লোকে বলছে আমারও নাকি দায় আছে। কী করে দায় থাকবে? আর শুধু তো মেয়েগুলো লেখেনি। ছেলেরাও বুকে ‘বা* ছেঁড়া গেল’ হেনাতেনা লিখেছে। যেভাবে ‘ফা*’ লেখা টি-শার্ট বিক্রি হয়, ওরা সেটা বাংলায় করেছে। স্ল্যাংটা ওদের কাছে ওপেননেসের মাধ্যম। দে আর লাইকিং ইট। ওরা সারাক্ষণই স্ল্যাঙের মধ্যে রয়েছে। আমরা সবাই রয়েছি, কিন্তু ওদের একটা সারল্য আছে। যা বিশ্বাস করে, সেটাকে প্রকাশ করার ইনোসেন্স। ওরা তো কোনও নাশকতা করেনি। বাঁদরামো করেনি। দে আর জাস্ট বিইং দেমসেলভস।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.