ঠিক সাত দিন পরে আসছে ‘সেক্রেড গেমস টু’। নেটফ্লিক্স সিরিজের দ্বিতীয় সিজনে প্রধান খলনায়ক তিনি। আপাতত বলিউডের এক নম্বর ক্যারেক্টর অ্যাক্টরও। মুম্বইয়ে পঙ্কজ ত্রিপাঠীর সঙ্গে আড্ডায় শ্রীময়ী মুখোপাধ্যায়।
‘সেক্রেড গেমস ২’-তে আপনার একটা ডায়ালগ, “বলিদান দেনা হোগা” ইতিমধ্যেই হিট। এটা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় মিমের ছড়াছড়ি। দেখেছেন?
তাই নাকি? আমি দেখিনি। সোশ্যাল মিডিয়া করার সময়ই পাই না। তবে দর্শকদের একটা কথা বলতে চাই, আগামী ১৫ই আগস্ট আপনাদের সবাইকে রাতের ঘুম ‘বলিদান দেনা হোগা’। ওইদিনই সিজন টু রিলিজ করছে। তাই রাত জেগে দেখে ফেলুন।
‘সেক্রেড গেমস’-এর প্রথম সিজন দারুণ জনপ্রিয় হয়েছিল। তারপর সিরিজ নিয়ে দর্শকের প্রত্যাশা অনেক বেড়ে গিয়েছে। বাড়তি চাপ অনুভব করছেন?
ওয়েব সিরিজে ওপেনিং উইকেন্ড বা বক্স অফিসের চাপটা নেই, সেটা একটা বাঁচোয়া। তবে একটা ক্রিয়েটিভ প্রেশার থেকেই যায় যে, আগের সিজনের জনপ্রিয়তা এই সিজনেও বজায় থাকবে কি না। যদিও সেই চাপটা আমার ততটা নেই। কারণ প্রথম সিজনে আমার রোল খুব কম ছিল।
চরিত্রাভিনেতা হিসেবে আপনি এখন বলিউডে নাম্বার ওয়ান। ‘সুপার থার্টি’-র সাফল্যের পরে তো সবার মুখে আপনারই নাম। কেমন লাগছে?
(হেসে) ভালই লাগে। মানুষের কাছ থেকে এত ভালবাসা পেয়ে আমি সত্যিই আপ্লুত। তবে মাঝে মাঝে ভয়ও লাগে জানেন।
ভয় কেন?
যেভাবে আমার কাছ থেকে দিন দিন দর্শকের প্রত্যাশা বেড়ে চলেছে, ভয় পাই যদি সেটা পূরণ করতে না পারি? মাঝেমাঝে ভুল-চুক করার স্বাধীনতা তো আমারও থাকা উচিত।
দিনকয়েক আগে মুম্বইয়ে বাড়ি কিনলেন। এই অনুভূতিটা কেমন?
খুব ভাল লাগছে। তবে আরও ভাল লাগত যদি নতুন বাড়িতে থাকতে পারতাম।
মানে?
আপনি কি বিশ্বাস করবেন যে নতুন বাড়িতে আমি এখনও পর্যন্ত মাত্র তিন রাত কাটিয়েছি মাত্র! শুটিংয়ের সেটই এখন আমার ঘরবাড়ি হয়ে গেছে।
সে কী! আপনার পরিবার অভিযোগ করে না?
করে না আবার! তাই তো মাঝে মাঝে বাধ্য হয়ে ওদেরও সেটে নিয়ে যাই। দু’দিকটা সামলে চলতে হবে তো! (হাসি)
ছবি হোক বা ওয়েব সিরিজ, যে কোনও চরিত্র আপনি সাবলীলভাবে ফুটিয়ে তোলেন। একটা চরিত্রে ঢোকার আগে কীভাবে প্রস্তুতি নেন?
আলাদা করে কোনও প্রস্তুতি নিই না। জীবনই আমাকে প্রস্তুত করে দিয়েছে সব রকম পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্যে।
“আমি বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে অভিনয়ের রসদ জোগাই। আমার এক পিসেমশাই সিআরপিএফ কমান্ড্যান্ট ছিলেন। ওঁর কাছে অনেক গল্প শুনেছি যেগুলো ‘নিউটন’-এ অভিনয় করতে গিয়ে আমার খুব কাজে লেগেছিল।”
কীভাবে?
একটা সময় পেট চালাতে জুতো বিক্রি করেছি। যখন ছাত্রনেতা ছিলাম, তখন জেল পর্যন্ত খেটেছি।
জেল?
হ্যাঁ। সাতদিন জেলে থাকতে হয়েছিল আমাকে। যদিও আমার অপরাধ তেমন গুরুতর ছিল না। বিভিন্ন নদীর ঘাটে রাত কাটানোর অভিজ্ঞতা আছে আমার। বলতে পারেন আমি অনেক ঘাটের জল খেয়েছি। জীবনের এই বিভিন্ন অভিজ্ঞতা অভিনয়ের ক্ষেত্রে কাজে লাগাই।
যেমন?
‘মির্জাপুর’-এর শুট শুরুর আগে আমি কিছু দিন একজন প্রাক্তন ডাকাতের সঙ্গে থাকতাম। উনি আজ থেকে ১৫-২০ বছর আগে উত্তরপ্রদেশে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। এখন ওঁর কাছে লোকতন্ত্র সেনানীর কার্ড রয়েছে। সেটা নিয়ে গোটা উত্তরপ্রদেশে বিনামূল্যে বাসে চড়ে ঘুরে বেড়ান। খুব শিগগির ওঁকে আমার সঙ্গে একটা ছবিতে দেখতে পাবেন।
‘সেক্রেড গেমস’ সিজন টু-তে আপনাকে এক গুরুজির ভূমিকায় দেখা যাবে। তা শুট শুরুর আগে কোনও গুরুজির সঙ্গে কথাবার্তা বলেছেন?
আমি সেভাবে কোনও গুরুজিকে চিনি না যে তাঁর সঙ্গে সময় কাটাব। নিজেও কোনওদিন আধ্যাত্মিক বিষয়ে চর্চা করিনি। এই চরিত্রটা আমার কাছে সহজ ছিল না। এটা একদম নতুন একটা জগৎ ছিল আমার জন্য। শুরুর দিকে একটু ভয়ে ভয়ে ছিলাম।
আবার ভয়? কেন?
ওই যে বললাম না, আমি বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে অভিনয়ের রসদ জোগাই। আমার এক পিসেমশাই সিআরপিএফ কমান্ড্যান্ট ছিলেন। ওঁর কাছে অনেক গল্প শুনেছি যেগুলো ‘নিউটন’-এ অভিনয় করতে গিয়ে আমার খুব কাজে লেগেছিল। কিন্তু আমার কোনও সাধু-সন্ন্যাসী পিসেমশাই নেই। থাকলে বেশ হত, তাই না! (হাসি)
শুনেছি এই রোলের প্রস্তুতির জন্য আপনি এক সপ্তাহ নিজেকে একলা করে ফেলেছিলেন?
হ্যাঁ, নিজেকে আইসোলেট করে রেখেছিলাম। সেই সময়টায় আমার লাইনগুলো মুখস্থ করেছি। সিরিজে আমার যে ডায়ালগগুলো আছে, সেগুলো সাধারণ কথোপকথন নয়। তাতে ইম্প্রোভাইজেশনের কোনও জায়গা নেই। যতক্ষণ না মন থেকে ভয় চলে যায়, লাইনগুলো নিয়ে পড়েছিলাম।
ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামায় আপনার সিনিয়র ছিলেন নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি। তাঁর সঙ্গে শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
খুব মজা হয়েছে। ও আমার চেয়ে আট বছরের সিনিয়র। যখন কলেজে আসত হোস্টেলে আমাদের ঘরেই থাকত।
অ্যামাজন প্রাইমের ‘মির্জাপুর’-এ কালীন ভাইয়া আর ‘সেক্রেড গেমস’-এর গুরুজি, আপনার দৌলতে দুটো চরিত্রই হিট। আপনি নিজে কী কী ওয়েব সিরিজ দেখেন?
বিশ্বাস করুন, কিচ্ছু দেখি না। অন্তত গত এক বছরে একটা ওয়েব সিরিজও দেখিনি। দেখার সময়ই পাইনি। গাধার মতো কাজ করে গেছি শুধু। সিরিজ দেখার সময় কোথায়!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.