জি বাংলার জনপ্রিয় সিরিয়াল ‘কৃষ্ণকলি’র মূল চরিত্রে তিনি। তিয়াশা রায়-এর সঙ্গে আড্ডায় কোয়েল মুখোপাধ্যায়
‘কৃষ্ণকলি’ তিয়াশা কি প্রথম থেকেই অভিনয়ে আসতে চেয়েছিলেন?
– না। নিউজ রিডার হতে চেয়েছিলাম। মাস কমিউনিকেশন সাবজেক্ট ছিল আমার।
অভিনয়ে এলেন কীভাবে?
– ভোকাল পাওয়ার বাড়াতে থিয়েটার শুরু করি। সেখান থেকেই অভিনয়ে পা রাখা। আমার স্বামীও (সুবান রায়) এই পেশায়। ওর উৎসাহেই অভিনয়ে আসা।
কোন নাট্যদলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন?
– গোবরডাঙায় একটা থিয়েটার গ্রুপ। সুবানই তৈরি করেছিল। বেশি দিন ছিলাম না ওখানে। কারণ, ছোটপর্দায় অভিনয়ের সুযোগ চলে এসেছিল।
জি বাংলায় ‘কৃষ্ণকলি’ আপনার ছোটপর্দার প্রথম কাজ? তারই অফার এসেছিল কি?
– হ্যাঁ।
অডিশন দিয়েছিলেন?
– না। সুবান আমার একটা ছবি পোস্ট করেছিল কোথাও। সেটা কোনওভাবে ধারাবাহিকের প্রযোজক-পরিচালক সুশান্তদার (সুশান্ত দাস) চোখে পড়ে। ওঁর ভাল লাগে। আমাকে ডেকে পাঠান।
ছোটপর্দায় প্রথম আবির্ভাবেই আশাতীত সাফল্য। চড়া টিআরপি শুধু নয়। প্রায় এক বছর ধরে বাংলা টেলিভিশনের প্রথম পাঁচ ধারাবাহিকের তালিকায় ‘কৃষ্ণকলি’। সম্প্রতি পেরিয়ে গিয়েছে তিনশো পর্বও। তিয়াশার চোখে এই সাফল্যের কারণ কী?
– ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস বরাবরই ছিল। ধারাবাহিকে আমার অভিনীত ‘শ্যামা’ যেমন আদ্যন্ত কৃষ্ণভক্ত, আমিও তেমন। প্রথম থেকেই বিশ্বাস ছিল কৃষ্ণের কৃপা আমি পাবই। (হাসি) তা ছাড়া আমাদের টিমটা খুব স্ট্রং। বন্ডিংটাও দারুণ।
নিজেকে কোনও ক্রেডিট দেবেন না?
– ধারাবাহিকে এত সিনিয়র অভিনেতা-অভিনেত্রী কাজ করছেন। ওঁদের সামনে নিজের অভিনয় নিয়ে কী বলব!
ধারাবাহিকে দেখানো হয়েছে, পরিবারের সদস্যরা অনেক পরে জানতে পারেন যে শ্যামার গানের গলা অসাধারণ। তিয়াশার কোনও হিডেন ট্যালেন্ট আছে?
– এই তো অভিনয়ই! সুবানই আমাকে অভিনয়ে নিয়ে এসেছে। আমার এই প্রতিভা ও-ই প্রথম আবিষ্কার করে। আমি যে পারব, নিজেও জানতাম না। ও-ই বিশ্বাস জুগিয়েছিল। পাশে থেকেছিল। হাতে ধরে শিখিয়েছে সব কিছু।
‘শ্যামা’ সেজে দর্শকদের কেমন প্রতিক্রিয়া পাচ্ছেন?
– রাস্তাঘাটে অনেকেই চিনতে পারেন। অনেক শ্যামবর্ণা মেয়ে নিজে থেকে এসে কথা বলেন, নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। এই ধারাবাহিকের মাধ্যমে আমরা একটা বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম যে, গায়ের রং আসল নয়, গুণটাই বড় কথা। দর্শকদের এত ভালবাসা পেয়ে মনে হচ্ছে সেই উদ্দেশ্য পূরণে আমরা একশো শতাংশ সফল।
মেকআপ নিতে অনেকটা সময় লেগে যায় নিশ্চয়ই…
– মাত্র পনেরো মিনিট লাগে আমার!
কী বলছেন?
– একেবারেই তাই। প্রথম এক সপ্তাহ মনে হত যে, সবাইকে দেখি অভিনয় করতে এসে মেকআপ করে আরও গ্ল্যামারাস দেখতে লাগছে। আর আমার কিনা টোন ডাউন করে দেওয়া হচ্ছে! একটু খারাপ লেগেছিল। কিন্তু পরে দেখলাম, শ্যামলা মেয়ের মেকআপ করে তিয়াশাকে দেখতে আরও ভাল লাগছে!
আপনার বাস্তব জীবনের নিখিল, মানে সুবানের সঙ্গে পরিচয় কীভাবে হয়েছিল?
– থিয়েটার শেখার সময় সুবান আমার স্যর ছিল। ওর কাছেই অভিনয়ের হাতেখড়ি। তারপর আমরা ডেট করতে শুরু করি। প্রথম দেখা করেছিলাম ২০১৭ সালের ষষ্ঠীর দিন। সেদিনই ঠিক করে ফেলি, আমরা বিয়ে করব। তার কিছু দিন পরই বিয়েটা হয়ে যায়। ডেটটা ছিল ৯ অক্টোবর।
বাড়ি থেকে কোনও আপত্তি আসেনি?
– না। ওর বাড়ি থেকেও দেখাশোনা চলছিল। তা ছাড়া আমাদের ওই থিয়েটার গ্রুপে একজন ‘কমন’ আত্মীয় ছিলেন। তাঁর মাধ্যমেই দুই বাড়ির পরিচয় হয়।
বিয়ের দেড় বছর হল। আপনার সুবান স্যর কি বদলে গিয়েছেন?
– এখন আমি ওর ম্যাডাম হয়ে গেছি! আর ও আমার স্টুডেন্ট! (হাসি)
এক পেশায় স্বামী-স্ত্রী থাকার যেমন সুবিধা আছে, অসুবিধাও কম নয়। আপনার কী মত?
– আমার মনে হয় না এটা কোনও ডিসঅ্যাডভান্টেজ।
বিবাহিত অভিনেত্রীদের পক্ষে সংসার এবং কেরিয়ার সামলানো কতটা কঠিন?
– কিছু কিছু ক্ষেত্রে কঠিন। কিন্তু পাশে থাকার মতো মানুষ থাকলে সমস্যা হয় না। সুবান এবং সুবানের পরিবার যথেষ্ট সাপোর্টিভ। তাই আমার সমস্যা হয় না।
শেষ প্রশ্ন। ‘কৃষ্ণকলি’-র পর কী? অভিনয়, না জমিয়ে সংসার?
– ‘কৃষ্ণকলি’ শেষ হয়ে যাক, এটা আমি ভাবতেই চাই না!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.