তিনি মনে করেন তাঁর ওজন বাড়ার কারণ ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড। পরিচালক ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্তর সঙ্গে খোশ আড্ডায় ইন্দ্রনীল রায়।
হঠাৎ করে পরিচালনায় এলেন কেন? সংগীত পরিচালক হিসেবে কি কাজ কমে যাচ্ছিল?
ইন্দ্রদীপ: পরিচালনায় পেমেন্ট অনেক বেশি।
তাহলে আগে আসেননি কেন?
ইন্দ্রদীপ: শিখতে সময় লেগে গেল।
৭০টা ছবির মিউজিক ডিরেক্টর আপনি। তারপর পরিচালনায়। পরিশ্রম কোনটায় বেশি?
ইন্দ্রদীপ: ডিরেকশন। প্রচণ্ড খাটনি।
নিন্দুকেরা বলেন শুটিংয়ের সময় আপনি মাঝে মাঝে ঘুমিয়ে পড়তেন সেটে আর কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, রুদ্রনীল ঘোষ, ক্যামেরাম্যান শুভঙ্কর ভড় নাকি আপনাকে ঘুম থেকে তুলতেন। ঠিক কথা?
ইন্দ্রদীপ: নিন্দুক কোথায়, ওরাই তো আমার শুভানুধ্যায়ী। আমার ‘ওয়েল উইশার’। আর আমার সেটে আমি ঘুমিয়ে পড়ি বা ন্যাংটো হয়ে নাচি, কার বাবার কী…
পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় না অভিনেতা কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়?
ইন্দ্রদীপ: খুব টাফ প্রশ্ন। তবে আমার কাছে অভিনেতা কৌশিক গাঙ্গুলি।
রুদ্রনীল ঘোষের সঙ্গে আপনার তো মন কষাকষি চলছে অনেকদিন ধরে।
ইন্দ্রদীপ: মন আছে তাই কষাকষি হচ্ছে ভাই।
এটা কি মাংস নাকি যে কষাকষি হবে?
ইন্দ্রদীপ: মাংস তো বটেই, আমরা রক্তমাংসের মানুষ বলেই মনমালিন্য। রুদ্র কচি পাঁঠা, আমি রেওয়াজি পাঁঠা। কিন্তু পাঁঠা দু’জনেই।
কোনওদিন ভেবেছিলেন প্রথম ছবিতেই ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পাবেন?
ইন্দ্রদীপ: পরিচালনার ক্ষেত্রে একেবারেই ভাবিনি। মিউজিকে বেশ কয়েকবার এক্সপেক্ট করেছিলাম কিন্তু কোনওদিন ভাগ্যে শিকে ছেঁড়েনি।
দিল্লিতে কী পরে যাবেন ঠিক করেছেন?
ইন্দ্রদীপ: পাজামা পাঞ্জাবি। যা চেহারা হয়েছে আর কিছু তো পরা যাচ্ছে না। কোটের দোকানে গিয়েছিলাম, আমাকে দেখে উলটো দিকে সায়ার দোকান দেখিয়ে দিয়েছে।
‘কেদারা’ শুটিংয়ের সময় আপনার ওজন যা ছিল, আজকে সেটা বেড়েছে না কমেছে?
ইন্দ্রদীপ: বেড়েছে বেড়েছে। ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি না। প্রোমোশন হয়েছে, ওজনেও প্রোমোশন হয়েছে।
আপনার ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা কিন্তু আপনার এই ওজন বেড়ে যাওয়া নিয়ে বেশ চিন্তিত।
ইন্দ্রদীপ: আমিও চিন্তায় রয়েছি। আমি জিম জয়েন করেছি আর ওদের কথা দিয়েছি আমি ওজন কমিয়ে ফেলব। আসলে আমি ওজন কমালে তো অনেক অন্য সমস্যা আছে…
কীরকম?
ইন্দ্রদীপ: এই যে আমার বন্ধুবান্ধব সন্ধেবেলা অনেকে মিষ্টি মুখের সঙ্গে বসে আড্ডা মারেন। আমি রোগা হয়ে গেলে ওই মিষ্টিমুখরা আমার বন্ধুদের সঙ্গে তো আড্ডা মারবেন না।
পরিচালক হয়ে যাওয়ার পর হিরোইনরা ফোন করছে?
ইন্দ্রদীপ: হিরোইন বলতে নেই… সব মা-বোনেরা।
রাত দশটার পর ফোন আসে?
ইন্দ্রদীপ: রাত দশটার পর আমাকে ফোন করা বারণ আছে…
আগামিকাল আপনার প্রথম ছবি ‘কেদারা’ রিলিজ। পরের ছবি ‘আগন্তুক’-এর পোস্ট প্রোডাকশন চলছে। তৃতীয় ছবি ‘বিসমিল্লাহ’-র অ্যানাউন্সমেন্ট হয়ে গিয়েছে। চতুর্থ ছবির প্রযোজক টাকা নিয়ে রেডি। আপনার অ্যাস্ট্রোলজার কে? ও ভুলে গিয়েছিলাম, আপনি নিজেই তো অ্যাস্ট্রোলজার…
ইন্দ্রদীপ: ও সব কিছুই না। প্রথম ছবি ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। তাই যারা আগে চা খাওয়াত তারা আজ দুধ খাওয়াচ্ছে। বলছে তোমাকে লড়াই জিততে হবে ইন্দ্রদীপ। এই আর কী। কথা বাড়তে চলছে।
‘কেদারা’র প্রথম শো-এর পর বাকি পরিচালক যাঁদের ছবিতে আপনি এতদিন সংগীত পরিচালনা করতেন, তাঁদের মেসেজ-হোয়াটসঅ্যাপ এক্সপেক্ট করেন?
ইন্দ্রদীপ: মানুষের কাছ থেকে আমার এমনিতেই এক্সপেক্টেশন কম। আমি ফোন-হোয়াটসঅ্যাপ এক্সপেক্ট করি না। তবে আমার বিশ্বাস মানুষের এই ছবিটা ভাল লাগবে।
পুজোর আগে তো সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঝামেলা হল। সেটা মিটে গিয়েছে?
ইন্দ্রদীপ: আমরা একটা পরিবারের মতো। আমাদের চুলোচুলি-মারামারি সব হয়। আবার ঠিকও হয়ে যায়। এই তো সৃজিত এল একটু আগে, ফিশ ফ্রাই, ফিশ রোল খাওয়া হল। তবে হ্যাঁ, যত পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছি তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝগড়া হয় সৃজিতের সঙ্গে।
পঁচিশ বছর হয়ে গেল আপনার ইন্ডাস্ট্রিতে। প্রথম ছবি রিলিজের আগে কাদের কথা খুব মনে পড়ছে?
ইন্দ্রদীপ: অনেক মানুষের কথা মনে পড়ছে। তবে সবচেয়ে মিস করছি আমার বন্ধু শ্রীকান্ত মোহতাকে।
ফাইনাল প্রশ্ন। দুর্গাপুজো শেষ, কালীপুজো শেষ। আবার কাজে ফিরছে মানুষ। এমন সময় বাঙালি দর্শক ‘কেদারা’ কেন দেখবে?
ইন্দ্রদীপ: বাঙালি দর্শক এই জন্যই দেখবে যে এটা সম্পূর্ণ অন্য মনন, অন্য গোত্রের ছবি। এটা সাধারণ মানুষের জীবনের গল্প। আর মানুষ দেখবে ছবিটা কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, রুদ্রনীল ঘোষ, বিদিপ্তা চক্রবর্তীর অভিনয়ের জন্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.