Advertisement
Advertisement

Breaking News

প্রেম-বিছানা-আদর, ওয়েব সিরিজে এক অন্য মোড়কে শরৎচন্দ্রের ‘চরিত্রহীন’

রীতিমতো ডার্ক ও ইনটেন্স এই ওয়েব সিরিজটির প্রেক্ষাপট বর্তমান সময়।

Web platform ‘Hoichoi’ brings ‘Charitraheen’
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:July 24, 2018 7:23 pm
  • Updated:July 25, 2018 1:32 pm  

সোমনাথ লাহা: ১৯১৭-তে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় লিখেছিলেন ‘চরিত্রহীন’। সময়ের থেকে কয়েককদম এগিয়ে থাকা এই উপন্যাসটিকে সেই সময় মেনে নিতে পারেননি রক্ষণশীল সমাজের অনেকেই। রীতিমতো বিতর্কের ঝড় উঠেছিল। পরবর্তীকালে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই বিতর্কিত উপন্যাসটি ক্রমশ কালজয়ী হয়ে ওঠে। শরৎচন্দ্রের সেই কাহিনিই এবার আসতে চলেছে ওয়েব আঙিনায়। এসভিএফ (শ্রীভেঙ্কটেশ ফিল্মস)-এর ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘হইচই’-তে আজকের পট ভূমিকায় ‘চরিত্রহীন’-কে নিয়ে আসছেন পরিচালক দেবালয় ভট্টাচার্য। রীতিমতো ডার্ক ও ইনটেন্স এই ওয়েব সিরিজটির প্রেক্ষাপট বর্তমান সময়।

শরৎচন্দ্রের গল্পের কাঠামোটিকে নিয়ে সেটিকে সম্পূর্ণ নতুনভাবে ওয়েব আঙিনার জন্য গড়ে তুলেছেন দেবালয়। ইতিমধ্যেই ‘হইচই’-তে ‘দুপুর ঠাকুরপো’ (সিজন ওয়ান) ও ‘হোলি ফাক’-এর মতো ওয়েব সিরিজ দর্শকদের উপহার দিয়েছেন দেবালয়। এমতাবস্থায় ‘হইচই’-তে নিজের তৃতীয় ওয়েব সিরিজে শরৎচন্দ্রর এই বিতর্কিত কাহিনিটিকে বেছে নিয়েছেন দেবালয়। জোর কদমে চলছে ওয়েব সিরিজটির শুটিংয়ের কাজ। শুটিং চলছে কলকাতা ও তার আশেপাশে। আজও সমসাময়িক এই কাহিনির মাধ্যমেই চরিত্রহীনতার শতবর্ষ উদযাপন করতে চাইছেন পরিচালক। কারণ ১০০ বছর অতিক্রান্ত এই উপন্যাসটিকে আজও প্রাসঙ্গিক করেন দেবালয়। সেই জন্যই নামটিকেও একই রেখেছেন তিনি।

Advertisement

[দীপিকার পর এবার বলিউডের এই তারকার মূর্তি বসবে মাদাম তুসোয়]

ওয়েব সিরিজটিতে মুখ্য চরিত্রে রয়েছেন নয়না গঙ্গোপাধ্যায়, গৌরব চট্টোপাধ্যায়, সৌরভ দাস ও সায়নী ঘোষ। প্রসঙ্গত এই ওয়েব সিরিজটির হাত ধরে প্রথমবার বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে চলেছেন নয়না, বলিউডে অতি পরিচিত মুখ নয়না আদতে কলকাতারই মেয়ে। ইতিমধ্যেই বলিউডে রামগোপাল বর্মা পরিচালিত শর্টফিল্ম ‘মেরি বেটি সানি লিওনি বননা চাহতি হ্যায়’, হিন্দি ওয়েব সিরিজ ‘গানস অ্যান্ড থাইস’ সহ রামগোপালের পরিচালনায় একটি তেলুগু ছবিতেও কাজ করেছেন নয়না। নয়নার রহস্যঘেরা চোখের জন্যই তাঁকে এই ওয়েব সিরিজে নিয়েছেন দেবালয়। চরিত্রহীনে নয়নাকে দেখা যাবে কিরণময়ীর চরিত্রে। অন্যদিকে কিরণময়ীর স্বামী হারানের চরিত্রে রয়েছেন গৌরব, সতীশ ও সাবিত্রীর চরিত্রে রয়েছেন সৌরভ দাস ও সায়নী ঘোষ, কাহিনি আবর্তিত হয়েছে বিবাহিত দম্পতি হারান ও কিরণময়ীকে কেন্দ্র করে। একসময় শিলিগুড়িতে একটি নামী কোম্পানিতে চাকুরিরত হারান ঘটনাচক্রে এক দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার পর থেকেই শারীরিকভাবে অক্ষম তথা পঙ্গু হয়ে যাওয়ায় বাড়িতেই থাকে। কিরণময়ী তার স্বামীকে ভালবাসলেও হারানের মধ্যে ক্রমশ কিরণময়ীকে ঘিরে সন্দেহ প্রবণতা বাড়তে থাকে।

[মহানায়ককে যদি কাছে পেতেন, কী করতেন এই প্রজন্মের নায়িকারা?]

অন্যদিকে রয়েছে গ্রাফিক ডিজাইনার সতীশ। ভালবাসার জন্য কাঙাল সতীশ মনে প্রাণে চায় ম্যাসাজ পার্লারে কর্মরতা সাবিত্রীকে। যদিও সরোজিনী বলে আরও একটি মেয়ে তাকে ভালবাসে। এমতাবস্থায় ঘটনাচক্রে একদিন সাবিত্রীর সঙ্গে কিরণময়ীর পরিচয় ঘটে। সেই সূত্র ধরে সতীশের সঙ্গেও পরিচয় হয় কিরণময়ীর। তৈরি হয় একটি জটিল সম্পর্কের। ওয়েব সিরিজটির মাধ্যমে গল্পটিকে এখনকার আঙিনায় গড়ে তোলার রূপটি অর্থাৎ চিত্রনাট্য লেখার কাজটি পরিচালকের সঙ্গে যৌথভাবে করেছেন কল্লোল লাহিড়ী। সিনেমাটোগ্রাফার ইন্দ্রনাথ মারিক। সংগীত পরিচালনায় শুভ প্রামাণিক। ওয়েব সিরিজটিতে থিম সং হিসাবে নতুন আঙ্গিকে শোনা যাবে কীর্তন। তাতে যে বেশ চমক থাকবে তা জানিয়েছেন পরিচালক। ৮ পর্বের এই ওয়েব সিরিজটি ‘হইচই’-তে দেখা যাবে অগস্ট মাস নাগাদ।

[সম্পর্কে ফাটল? অযাচিত প্রশ্নের কড়া জবাব দিলেন অভিষেক]

সম্প্রতি এসভিএফ-র অফিসে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক-সহ কলাকুশলীরা। ওয়েব সিরিজটি প্রসঙ্গে দেবালয়ের মন্তব্য “চরিত্রহীন’ আমার খুব পছন্দের একটি উপন্যাস। একশো বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও আমাদের সমাজে কিছু মানুষের ভাবনা একই জায়গায় রয়ে গিয়েছে। সেই জন্য আজকের সময়ে দাঁড়িয়েও এই গল্পটি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। তাই আমি এই সময়ে দাঁড়িয়ে এই চরিত্রগুলির পরিণতিকে দর্শকদের সামনে ওয়েব সিরিজটির মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। কারণ আমার মনে হয় সময় পাল্টালেও চরিত্রগুলির দ্বিধা-দ্বন্দ্বগুলি আজও একই রয়ে গিয়েছে।”

নয়নার কথায় “কিরণময়ীর চরিত্রটা বেশ কঠিন। এই চরিত্রটির আলাদা ব্যক্তিত্ব রয়েছে। সব চরিত্রের থেকে আলাদা, আমি এতদিন অবধি যেরকম কাজ করেছি তার থেকে একদমই অন্যরকম। কিরণময়ী যেন প্রতিনিয়ত পরীক্ষা দিচ্ছে। দেবা স্যর ও বাকি আমার সহ-অভিনেতা অভিনেত্রীদের সাহায্য নিয়ে আমি চেষ্টা করছি কিরণময়ী হয়ে ওঠার। বাকিটা দর্শক বলবে”। গৌরবের মতে “এটা একটা ইন্ট্রোভার্ট চরিত্র। শারীরিক ও মানসিকভাবে বেশ চ্যালেঞ্জিং। আমার কেরিয়ারের অন্যতম সেরা চরিত্র, কাহিনিটা শুনেই আমার এতটা ভাল লেগেছিল যে চরিত্রটা হাতছাড়া করতে চাইনি। শারীরিকভাবে চ্যালেঞ্জিং এই চরিত্রের একটা অঙ্গ ঠিকমতো কাজ করে না। সেই অবস্থায় সংলাপ বলাটা বেশ কঠিন। খুব জটিল বাস্তবিক চরিত্র এটা।” সৌরভ জানান, “সতীশের চরিত্রটা আমাকে এতটাই ভাবিয়েছে যে চরিত্রটা করতে গিয়ে আমি ডিপ্রেশনে চলে যাচ্ছি। ভালবাসার জন্য পাগল এই মানুষটি যখনই তার ভালবাসার মানুষের কাছে পৌঁছয় তখনই সেটা ইলিউশনে পরিণত হয়। আমি নিজের মতো করে চরিত্রটা করার চেষ্টা করেছি আমার মনে হয় ‘চরিত্রহীন’ হইচই-এর সেরা ওয়েব সিরিজ হতে চলেছে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement