গৌতম ভট্টাচার্য: দু’বারের বিধায়ক। বারাসত (Barasat) থেকে এবার হ্যাটট্রিকের প্রত্যাশায়। আবার একই সঙ্গে একরাশ বিতর্কের মুখেও। গত তিন সপ্তাহে অন্তত তিনটে নতুন বিতর্ক তাঁকে তাড়া করেছে। কী ভাবছেন চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী (Chiranjeet Chakraborty)? এই সময় দাঁড়িয়ে কোথাও কী মনে হচ্ছে যে গ্ল্যামার দুনিয়ার জীবনটাই অনেক ভাল ছিল? মনের যাবতীয় কথা খুলে বললেন সংবাদ প্রতিদিন ফেসবুক লাইভে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) মন্তব্যের জেরে রাজ্যের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তি বিঘ্নিত হচ্ছে। এমনই অভিযোগ করেছিলেন বিরোধীরা। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ৭ এপ্রিল তৃণমূলনেত্রীকে শোকজ করে কমিশন। ৯ তারিখ সেই শোকজের জবাব দিয়েছিলেন মমতা। কিন্তু সেই জবাবে সন্তুষ্ট নয় কমিশন। ১৭ তারিখ রাজ্যে পঞ্চম দফার নির্বাচন। তার আগে ২৪ ঘণ্টার জন্য তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে কমিশন। সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালের ফেসবুক লাইভে এর তীব্র বিরোধিতা করেন চিরঞ্জিৎ। তৃণমূল প্রার্থী (TMC Candidate) বলেন, “পক্ষপাতিত্ব হল। অন্যায় হল। এটা ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষেত্রেও হয়নি। গত একমাস ধরে অনেক নেতা-মন্ত্রী, অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এসে পশ্চিমবঙ্গে প্রচার করলেন, আর দিদি একা, একজন হাওয়াই চপ্পল পরা মহিলা এত পাওয়ারফুল হয়ে গেলেন! এটা মমতাকে হারানোর চেষ্টা। শুধু প্রচার বন্ধ নয়। অন্য অনেকগুলো অস্ত্র মমতার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে। এটা অত্যন্ত দুঃখের। বেদনার। এতে মমতাকে হারানো যাবে না। উলটে মানুষ আরও বেশি ভালবাসবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।”
দু’বারের বিধায়ক অথচ এবারে তাঁর টিকিট পাওয়া নিয়ে বিস্তর জল্পনা হয়েছিল। রাজনীতি ত্যাগের কথাও শোনা গিয়েছিল। তবে শেষমেশ প্রার্থী হয়ে যান। কী হয়েছিল বিষয়টি? বলতে গিয়ে অভিনেতা জানান, গোটা বিষয়টি বুঝতে একটু ভুল হয়েছিল। এক টেলিভিশন চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “রাজনীতি আমার জায়গা নয়। দশ বছর মানুষের জন্য সার্ভিস দিয়েছি। আমি সিনেমার লোক। ইচ্ছে হচ্ছিল, সিনেমা নিয়ে কিছু কাজ করব।” তখন মুখ্যমন্ত্রী কিছু বলেননি বলেই জানান চিরঞ্জিৎ। একেবারে সরাসরি তাঁর নাম ঘোষণা করেন। মুখ্যমন্ত্রীর গুণগ্রাহী বলেই তিনি তাঁর বিরুদ্ধে যাবেন না বলে জানান।
এবার রাজনীতিতে যেন তারকাদের ঢল নেমেছে। সেই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে চিরঞ্জিৎ বলেন, “কোভিড পরিস্থিতিতে শিল্পীদের অবস্থা বদলেছে। ছবি চলছে না। সিনেমা রিলিজই করছে না। কত সিনেমা হল বন্ধ হচ্ছে। পুজোর পরও একই অবস্থা। সেকেন্ড ওয়েভ আসছে। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ নেই। আমাদের সময় হাউস বেড়েছিল। ব্যবসা হত। এখন কমছে। ৭১০টা হাউস বন্ধ হয়েছে। মাল্টিপ্লেক্স হয়েছে। কিন্তু বাংলা ছবি মাল্টিপ্লেক্সের জন্য নয়। বাংলা ছবির দর্শক ৮০ টাকা, ১২০ টাকা দিয়ে দেখতে চান না। বুম্বাই একবার বলেছিল যে, মাল্টিপ্লেক্স থেকে বাংলা ছবি দুই শতাংশ আয় করে। মাল্টিপ্লেক্সের মতোই ওটিটি আমাদের সাহায্য করবে না। যদি অভিনেতাদের প্রচুর কাজ আমরা দিতে পারতাম, তাহলে ছবিটা পরিবর্তন হত। যাঁরা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন, তাঁরা হয়তো হিন্দি ছবিতে কাজ করতে চাইছেন। সেটাও হতে পারে।”
“শ্রাদ্ধবাড়ি আর ভিড় ট্রেনে যাতায়াত, দুই ক্ষেত্রে পোশাক কখনই এক হওয়া উচিত নয়। ডিস্কোতে গেলে সেখানেও পরিবেশ বিবেচনা করে পোশাক পরতে হবে মহিলাদের।” এমনই মন্তব্য করেছিলেন বারাসতের তৃণমূল প্রার্থী (TMC Candidate)। তা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়েছিল। আদতে কী বলতে চেয়েছিলেন তারকা প্রার্থী? তাঁর জবাবে বলেন, “এটা একজন অভিভাবকের মতামত। আমি দেখেছি, নারী-পুরুষ যেই হোক না কেন, গোপনাঙ্গকে ঢাকার জন্য পোশাক আবিষ্কার করা হয়েছিল। প্রথমে পাতা। তার পর জামাকাপড় সব এল। শালীনতা বলে একটা কথা আছে। এই শালীনতার যা অর্থ আমি শুধু সেইটুকু বলতে চেয়েছি। শ্রাদ্ধবাসরে কেউ যেভাবে যাবে, সেভাবে নিশ্চয় ডিস্কোয় যাবে না। এটাই বলতে চেয়েছি আমি। শর্ট স্কার্ট নিয়ে একটা প্রশ্ন আমাকে করা হয়েছিল। তখন আমি শালীনতার কথা বলেছিলাম। আসলে বাড়ির পোশাক তো আমরা রাস্তায় পরব না। তবে এই ছোট পোশাক কত জন মহিলাই বা পরেন। সারা পৃথিবীর নারীসমাজের এক শতাংশ উত্তেজক পোশাক পরেন হয়তো। যেখানে রিস্ক আছে, সেখানে ছোট পোশাক এড়িয়ে যাওয়াই ভাল।”
দেখুন ভিডিও –
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.