ম্যাথ জিনিয়াসের মতোই তাঁর জীবনদর্শন। মুম্বই থেকে মোবাইলে জানালেন বিদ্যা বালান। ফোনের এপারে বিদিশা চট্টোপাধ্যায়।
‘শকুন্তলা দেবী’র ট্রেলার দেখে তো মনে হচ্ছে এই চরিত্র আপনারই আরেক সত্তা!
– ওহ, থ্যাঙ্ক ইউ। এটা আমার কাছে কমপ্লিমেন্ট। আমি কথা বলতে বলতে খুব হাসি, শকুন্তলা দেবীরও এই অভ্যাস ছিল। এবং দারুণ সেন্স অফ হিউমার ছিল। আর মজা করতে আমিও পছন্দ করি। হয়তো সেই কারণে অনেকে এই কথা বলছেন।
কীভাবে নিজেকে তৈরি করেছেন?
– প্রথমত বলতে চাই, আমিও এই জিনিয়াসের মতো জীবনটাকে উপভোগ করতে পছন্দ করি। আর সেই সময়ে দাঁড়িয়ে শকুন্তলা দেবী সেটা করে দেখিয়েছিলেন। কম নয়। অঙ্কে জিনিয়াস যেমন, তেমনই বিয়ে করে সংসার করতেও চেয়েছিলেন। সবটাই তাঁর চাই। সমাজ এটাকে স্বেচ্ছাচারিতা বলে। খারাপ মেয়ের তকমা দেয়। মহিলা মানেই যেন তাকে সংসারের জন্য স্যাক্রিফাইস করতে হবে! শকুন্তলা দেবী এসবের ধার ধারেননি। আমি এই দুর্দান্ত মহিলার মনটাকে বুঝতে চেষ্টা করেছি। তবে হ্যাঁ, প্রচুর পড়েছি, ভিডিও দেখেছি। আর পরিচালক অনু মেননের নেওয়া তাঁর মেয়ে এবং জামাইয়ের সাক্ষাত্কার দেখেছি। সেটা খুব হেল্প করেছে শকুন্তলা দেবীকে বুঝতে।
বায়োপিকে অভিনয় করা মানে কি দায়িত্ব বেড়ে যাওয়া?
– নিশ্চয়ই। কারণ আমি কোনও কাল্পনিক চরিত্রে অভিনয় করছি না। আর শকুন্তলা দেবী খুবই পরিচিত, বহু দেশ-বিদেশ ঘোরা, খুবই মিশুকে একজন মানুষ ছিলেন। তাঁর স্মৃতি অনেকের কাছেই উজ্জ্বল। তবে ‘ডার্টি পিকচার’ করার সময় আমি বায়োপিকের ব্যাপারে একটা শিক্ষা নিয়েছিলাম। আমি জানি, কোনওদিনই ওই মানুষটা আমি হতে পারব না। তাই রিয়্যাল লাইফ চরিত্রের নির্যাসটা ধরার চেষ্টা করেছি। আর আমাকে দেখতে সিল্ক বা শকুন্তলা দেবী- কারও মতোই নয়।
‘অ্যামেজিং হতে পারলে সাধারণ কেন হব?’, এই সংলাপ হিট! আপনার জীবনের লক্ষ্যও কি তাই?
– আমার জীবনের একটাই স্বপ্ন বা লক্ষ্য ছিল অভিনেতা হওয়া। এবং এর জন্য যখন যেমন অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছি, নিজের সবটা দিয়েছি। একটাই জীবন, যা করার এই জীবনেই করতে হবে। আমার এই প্রচেষ্টা হয়তো মানুষের অ্যামেজিং লাগে!
নিজের শর্তে চলতে গেলে সবাইকেই একটা দাম দিতে হয়। আপনার ক্ষেত্রে সেটা কী?
– দেয়ার ইজ নো প্রাইস! বরং আমি যা নই সেটা হয়ে বাঁচতে গেলে অনেক বড় দাম চোকাতে হয়। অন্যকে খুশি করা যায় না, অনেক মানুষ তো ছেড়েই দাও, কোনও একজন মানুষকেও পুরোপুরি স্যাটিসফাই করা সম্ভব নয়। তাই নিজে কীভাবে ভাল থাকা যায়, সেটা ভাবাই ভাল। এটা আমি কেরিয়ারের গোড়াতেই শিখেছিলাম । ওই ২০০৮ হবে। তাই বারো বছর ধরে নিজের মতো চলার চেষ্টাই করে গিয়েছি। লোককে খুশি করা বহুদিন আগেই ছেড়েছি।
আপনার কি মনে হয়, যত সাফল্য আসে, নাম হয়, একজন অভিনেতা নির্ভীক হওয়ার চাইতে সাবধানী হয়ে যায়?
– আমার কাছে সাফল্যের মানে হল, নিজের মনের মতো কাজ করার সুযোগ। সেটা যদি না-ই করতে পারি তাহলে সাফল্য দিয়ে কী হবে!
রোগা-মোটা নিয়ে কোনওদিনই আপনার মাথাব্যথা নেই। যদিও আপনাকে এর জন্য সমালোচিত হতে হয়েছে। আপনি জানেন, কলকাতার একজন সাধারণ মেয়ে একতা ভট্টাচার্যকে ট্রোলড হতে হয়েছে তার মোটা প্রেমিককে বিয়ে করার জন্য?
– হোয়াট! রিডিকুলাস! কে কাকে বিয়ে করবে এটা বাইরের কেউ বলতে পারে না। আর রোগা কিংবা মোটা হলেই বা কী এসে যায়! একতাকে আমার অনেক শুভেচ্ছা তার বিবাহিত জীবনের জন্য। লকডাউনে তার সময় ভাল কাটুক।
‘নিউটন’-এর পরিচালক অমিত মাসুরকারের সঙ্গে আপনার পরের ছবি ‘শেরনি’র শুটিং আবার কবে শুরু হবে?
– বর্ষাটা কাটলেই শুরু হবে। জঙ্গলে বৃষ্টির মধ্যে শুটিং করা সম্ভব নয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.