সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ধর্ষণ ক্ষমার অযোগ্য অবশ্যই। কিন্তু তার শাস্তি কখনওই মৃত্যু হতে পারে না। বরং ধর্ষকের উপযুক্ত সাজা হল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। অপর্ণা, তসলিমার পর হায়দরাবাদ এনকাউন্টারের বিরুদ্ধে সওয়াল করলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী ওয়াহিদা রহমান।
হায়দরাবাদের সাম্প্রতিকতম ঘটনা কাঁপিয়ে দিয়েছে দেশবাসীর হৃৎপিণ্ড। যেভাবে দিনকয়েক আগে বছর ছাব্বিশের তরুণীকে ধর্ষণ এবং খুন করার পর প্রমাণ লোপাটের জন্য পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল, তা জেনে শিউরে উঠেছিল আট থেকে আশি, সকলেই। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, এই ভয়ংকর ঘটনায় গোটা দেশ যখন উত্তাল, ১০ দিনের মাথায় ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত চার জনই পালানোর চেষ্টা করেছিল ঘটনার বিবরণ দেওয়ার সময়। এমনকী, পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিও ছুঁড়েছে। আত্মরক্ষার্থে হায়দরাবাদ পুলিশ এনকাউন্টার করে অভিযুক্ত ওই ৪ জনকে। এর পরই গোটা বিষয়ে উচিত-অনুচিতের প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যায় নাগরিক সমাজ।
এক পক্ষের কথায়, যা হয়েছে ঠিক হয়েছে। আর অপর পক্ষের দাবি, এই ঘটনা একেবারেই অনভিপ্রেত পদক্ষেপ। জল আরও দূর গড়ায়, যখন এনকাউন্টারের ঠিক পরের দিনই উন্নাওয়ের গণধর্ষিতা তরুণীকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। অগ্নিদগ্ধ সেই তরুণীরও মৃত্যু হওয়ায় বিতর্ক চরমে ওঠে। আর এ নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়েই ৮১ বছর বয়সি অভিনেত্রী ওয়াহিদা রহমান বলেন, ‘‘ধর্ষণের মতো ভয়ংকর ঘটনা কখনওই কাম্য নয়। ধর্ষণ ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। তবুও, আইন কখনও নিজের হাতে তুলে নেওয়া উচিত নয়। আমার মনে হয়, কাউকে প্রাণে মেরে ফেলার অধিকার আমাদের কেউ দেয়নি। বরং একজন ধর্ষকের উপযুক্ত শাস্তি হল, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। ধর্ষককে আমৃত্যু জেলে বন্দি করে রাখা উচিত। যতদিন বাঁচবে, জেলেই পচুক ওরা।’’
পাশাপাশি ‘গাইড’, ‘কাগজ কে ফুল’ খ্যাত অভিনেত্রীর আরও বক্তব্য, ‘‘যদি ধর্ষণের মতো ঘটনায় কাউকে হাতেনাতে ধরা হয়, তাহলে আবার আলাদা করে মামলা দায়ের করার কী দরকার? এতে জনগণের অর্থের অপচয় ছাড়া আর কিছুই হয় না।’’ সংগীত শিল্পী রূপকুমার রাঠোরের লেখা প্রথম বইপ্রকাশ অনুষ্ঠানে রহমান এই মন্তব্য করেন। একই অনুষ্ঠানে উপস্থিত চলচ্চিত্র পরিচালক রাকেশ ওমপ্রকাশ মেহরাও জানান, তিনিও হায়দরাবাদ কাণ্ডে পুলিশি এনকাউন্টারকে মোটেই ‘সুখবর’ বলে মনে করছেন না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.