নতুন জামার গন্ধ। পুজোসংখ্যার পাতায় নয়া অভিযান। শরতের নীল-সাদা মেঘের ভেলায় পুজোর ছুটির চিঠি। ছোটবেলার পুজোর গায়ে এরকমই মিঠে স্মৃতির পরত। নস্ট্যালজিয়ার ঝাঁপি খুললেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়।
ছোটবেলার পুজোর মানেই সকলের মনে নানারঙের স্মৃতির কোলাজ। আমার ক্ষেত্রেও তাই। ছোটবেলায় আমাদের বাড়ির একেবারে সামনেই পুজো হত। এখন পুজো অনেকটা সরে গিয়েছে। তাই বাড়ির সামনের জায়গাটা এখন অনেকটাই চুপচাপ। শুধু আলো দিয়েই সাজানো থাকে। আমি তো নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনে পড়তাম। পুজোর ছুটি পড়লে বাড়ি ফিরে দেখতাম ধাপে ধাপে প্যান্ডেল তৈরি হচ্ছে। ওই বাঁশ বাঁধা পর্ব থেকেই মোটামুটি আমাদের পুজো শুরু। আর বাঁশ বেয়ে বেয়ে কে কতটা উপরে উঠতে পারে, তার প্রতিযোগিতা চলত আমাদের মধ্যে। ওই প্যাণ্ডেলেই পুজো হত। তারপর একেবারে শেষে, যখন পাড়ার বড়রা বিসর্জন দিয়ে ঘট রাখত, শান্তিজল ছেটাত, তখন একটা অদ্ভুত মনখারাপ ঘিরে ধরত। মনে হত, আবার এই মুহূর্তগুলোর জন্য একটা গোটা বছর অপেক্ষা করতে হবে।
[ আমার দুগ্গা: ছোটবেলায় কটা জামা হল তা নিয়ে মিথ্যে বলতাম ]
যাই হোক, এখন যেমন চতুর্থী থেকে পুজো শুরু হয়ে যায় আমাদের সময় তেমনটা ছিল না। পুজোর আনন্দ আমাদের মূলত শুরু হত পঞ্চমী থেকেই। আর ষষ্ঠীতে একটা পুজো হত। সেটা মূল মণ্ডপের পাশে। হোগলা পাতার বেড়া ঘেরা একটা ছোট জায়গায় হত পুজোটা। ওটা আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমরা তো তখন সব ছোট ছোট, উচ্চতাতেও তাই। সপ্তমী থেকে মোটামুটি পুজো বড়দের দখলে চলে যেত। ওখানে আমরা ঠেলাঠেলি করে একটু জায়গা পেতাম। নয়তো কোলে চড়াই ভরসা। কিন্তু এই ষষ্ঠীর পুজোটা মনে হত আমাদেরই। কেননা পুজোটাও হত ছোট জায়গায়, আর হাইট কম বলে দেখতেও পেতাম। ওখানে আমাদের ঢুকতেও কেউ বারণ করত না। আমার কাছে ষষ্ঠীর ওই পুজোটা তাই চিরকালই বড় প্রিয় ছিল। আর পুজো শেষ হওয়া মানেই মিষ্টি, আখ ইত্যাদি প্রসাদ পাওয়া। আমরা পাড়ার ছেলে, আমাদেরই সেসব আগে দেওয়া হত। তাই সেদিকেও চোখ থাকত। এখনও পুজো হয়। আমার মনে হয়, বয়স যাই হোক না কেন, পুজোর সময় কারওরই মানসিকতায় কোনও পরিবর্তন হয় না। এখনও সমানভাবেই এনজয় করি আমরা।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.