নতুন জামার গন্ধ। পুজোসংখ্যার পাতায় নয়া অভিযান। শরতের নীল-সাদা মেঘের ভেলায় পুজোর ছুটির চিঠি। ছোটবেলার পুজোর গায়ে এরকমই মিঠে স্মৃতির পরত। নস্ট্যালজিয়ার ঝাঁপি খুললেন সেহিনী সরকার।
ছোটবেলার পুজো মজাতেই কাটত। এখন একসাইটমেন্ট অনেকটা কমেছে। এনগেজমেন্ট অনেক বেড়েছে। এখানে ওখানে যাওয়ার ব্যাপার থাকে। জামা কাপড় বা গিফট নিয়ে এখন আর ততটা হেলদোল নেই। কিন্তু ছোটবেলার ব্যাপারটা আলাদা। আমাকে আত্মীয়রা খুব বেশি জামা-কাপড় দিতেন এমনটা নয়। বাবা যে কটা জামা দিত, সেগুলোই আমার পুজোর পাওনা। হয়তো কোনওবার দুটো জামা দিয়েছে। এদিকে বন্ধুরা বলত কারও আঠেরোটা জামা হয়েছে, কারও কুড়িটা। আমি তখন বানিয়ে বানিয়ে বলতাম, এই তো আমার চোদ্দটা জামা হয়েছে। এবার মাসি দেবে, পিসি দেবে, আরও অনেকগুলো হবে। এখন সারাবছরই প্রচুর জামাকাপড় কিনি। কিন্তু ছোটবেলায় ওই যে জামা নিয়ে মিথ্যে কথা বলা, সেটা ভেবে আজও খুব মজা হয়।
[ আমার দুগ্গা: মায়ের দেওয়া ববি প্রিন্টের জামাই ছিল বিরাট সম্পদ ]
আমি মফস্বলে বড় হয়েছি। আমাদের পাড়ায় একটা বড় মাঠ ছিল। ওখানেই পুজো হত। প্যাণ্ডেল বাঁধা শুরু হওয়া মাত্র মন উড়ে যেত। পড়াশোনাতে মন নেই। রোজ স্কুলে যেতাম আর ভাবতাম, এই তো পুজো এসে গেল। যেই প্যাণ্ডেলে কাপড় টাঙানো হত, আমাদের লুকোচুরি খেলা শুরু। সেটা ভীষণ মজার বিষয় ছিল। আমাদের মনে হত গোটা খড়দহের মধ্যে বোধহয় আমাদের পাড়ার পুজোটাই সবথেকে ভাল হবে। ছোটবেলার পুজোর ফ্লেভারটাই এরকম। কোনওকিছুতেই তার বিকল্প হয় না। বড় হয়ে যত এনগেজমেন্ট আসুক আর যাই হোক, ছোটবেলার পুজো মিঠে স্মৃতি হয়েই আছে। একটা জামা হোক আর একশোটা, সেই বয়সটার এমন একটা মজা আছে, যা আর কোনওভাবেই ফিরে আসবে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.