সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাস্তায় পড়ে অসুস্থ বৃদ্ধ। নেই জল, নেই খাবার, মাথা গোঁজার আশ্রয়টুকুও নেই বললেই চলে। তাই এমন অতিমারী সময়েও যেখানে সতর্কতার চাদরে মুড়ে মানুষ পথে-ঘাটে নামছেন, সেখানে শেক্সপিয়র সরণির ফুটপাতে অসহায় অবস্থায় শুয়ে ছিলেন বৃদ্ধ। পায়ের সমস্যায় এতটাই ভুগছিলেন যে, উঠে দাঁড়ানোর ক্ষমতা পর্যন্ত তাঁর ছিল না, সোশ্যাল মিডিয়ায় বৃদ্ধের সেই দুর্দশাগ্রস্থ দৃশ্যই তুলে ধরেছিলেন ২ তরুণ-তরুণী। আর সেই পোস্ট মিমি চক্রবর্তীর (Mimi Chakraborty) চোখে পড়তেই তড়িঘড়ি তিনি ওই সংশ্লিষ্ট বৃদ্ধকে হাসপাতালে ভরতি করানোর উদ্যোগ নেন। সাংসদ-অভিনেত্রীর এমন কাজে যারপরনাই অভিভূত নেটজনতার একাংশ।
অসহায় ওই বৃদ্ধকে শুধু হাসপাতালে ভরতি করানোই নয়, তাঁর চিকিৎসার যাবতীয় দায়ভারও সাংসদ তুলে নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। ঘটনার সূত্রপাত এক ফেসবুক পোস্টকে ঘিরে। শনিবার শেক্সপীয়র সরণিতে এক অসুস্থ বৃদ্ধকে বেঞ্চের উপর শুয়ে থাকতে দেখেন আরাধনা চট্টোপাধ্যায়। সেই বৃদ্ধের পায়ে গ্যাংরিন হয়ে গিয়ে সংক্রমণ এতটাই বেশি ছড়িয়েছে যে উঠে দাঁড়ানোর ক্ষমতা নেই তাঁর। তা চোখে পড়তেই অসুস্থ বৃদ্ধকে জল, খাবার দেন আরাধনা। গোটা বিষয়টি ফেসবুকে পোস্ট করেন তিনি। এরপরই জয়দীপ সেন নামে জনৈক ব্যক্তি এই পোস্ট শেয়ার করে সাহায্যের আরজি জানান স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, কলকাতা পুলিশ-সহ অনেককেই। কারণ তাঁরা বুঝতে পারেন যে, এই বৃদ্ধের অবিলম্বে চিকিৎসার প্রয়োজন।
বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কারণে কোনও চিকিৎসকই বৃদ্ধকে সাহায্য করার জন্য সেখানে যাননি। এরপরই বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টাও করেন আরাধনা-জয়দীপ। কিন্তু সমস্যার সুরাহা হয়নি! অগত্যা কোনও উপায় না দেখতে পেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় গোটা বিষয়টি পোস্ট করেন আরাধনা ও জয়দীপ।
সেই পোস্টটি চোখে পড়ে সাংসদ-অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তীর। বিন্দুমাত্র দেরি না করে ওই বৃদ্ধ সম্পর্কে বিশদে জানতে চান মিমি। এরপর কলকাতা পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন। মিমির উদ্যোগেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সূত্রের খবর, শনিবার বিকেল ৪টে নাগাদ শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে এই বৃদ্ধকে। তাঁর চিকিৎসার সমস্ত রকমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমনকী, নিজে খবরাখবর নিচ্ছেন সাংসদ। প্রসঙ্গত লকডাউনের সময় থেকেই নিজস্ব সংসদীয় এলাকার সাধারণ মানুষ থেকে পুলিশদের পাশে নানাভাবে দাঁড়িয়েছেন মিমি। এবার মানবিকতার খাতিরেই অসুস্থ বৃদ্ধর জন্য এগিয়ে এসে চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.