Advertisement
Advertisement

Breaking News

রুপোলি পর্দার ‘নেক্সট ডোর বয়’, ‘দাদার কীর্তি’তে এখনও বুঁদ সিনেপ্রেমী বাঙালি

তাপস পালের হাত ধরেই অভিনয় জগতে আত্মপ্রকাশ করেন মাধুরী দীক্ষিত।

Tollywood mourns the demise of bengali actor Tapas Pal
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:February 18, 2020 11:56 am
  • Updated:February 18, 2020 11:56 am  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তাপস পালের প্রয়াণে শোকাহত টলিউড। চিরঞ্জিৎ থেকে দেবশ্রী রায়, অভিনেতার কথা বলতে গিয়ে চোখে জল সবারই। স্মৃতিমেদুর ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত থেকে হরনাথ চক্রবর্তী। প্রথম ছবি থেকেই দর্শকের মনে ছাপ ছেড়েছেন তাপস পাল। মহুয়া রায় চৌধুরী, দেবশ্রী রায়ের সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছিলেন ‘দাদার কীর্তি’তে। সালটা ১৯৮০। প্রথম ছবিতেই বাজিমাত। আজও তাপস পালের কথা বলতে গেলেই আসে ‘দাদার কীর্তি’র কথা। তাঁর হাত ধরেই সিনেদুনিয়ায় আত্মপ্রকাশ করেছিলেন মাধুরী দীক্ষিত। ছবির নাম ‘অবোধ’ (১৯৮৪)।

বলিউডে এই একটাই ছবি করেছিলেন তাপস পাল। কিন্তু বক্স অফিসে সাফল্য পায়নি ছবি। ফলে তাপস পালের বলিউড জয়ও থেমে গিয়েছিল মাঝপথেই। প্রথম ছবি মুখ থুবড়ে পড়ায় মাধুরীকেও চালিয়ে যেতে হয়েছিল স্ট্রাগল। কিন্তু ছবি না চললেও তাপস-মাধুরী জুটি দর্শকদের প্রশংসা কু়ড়িয়েছিল প্রচুর। কেরিয়ারের বেশিরভাগ ছবিতেই তিনি ছিলেন মধ্যবিত্তের ঘরের ছেলে। তাঁর চরিত্রগুলি ছিল স্ট্রাগলে পরিপূর্ণ। হাজার প্রতিকূলতাকে সরিয়ে শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসি হাসত তাপস পাল অভিনীত চরিত্রগুলি। তিনি ছিলেন এককথায় ‘ম্যাটিনি স্টার’। পর্দায় তাঁর চরিত্রগুলি হত দায়িত্ববান দাদা ও প্রেমিকের। তরুণ মজুমদার, তপন সিনহা, অঞ্জন চৌধুরীর মতো পরিচালকরা তাঁর প্রতিভাকে কাজে লাগিয়েছিলেন। অবশ্য অভিনেতার জনপ্রিয়তার পিছনে শুধু তাঁর অভিনয়ের গুণ ছিল বললে ভুল হবে। তাঁর গোলগাল নিপাট ভদ্রলোকের মতো অবয়বও অনুঘটকের কাজ করেছিল। তাই ‘ভালবাসা ভালবাসা’, ‘সাহেব’, ‘গুরুদক্ষিণা’, ‘তুমি কত সুন্দরী’র মতো ছবির পর দর্শকমনে আলাদা জায়গা করে নিয়েছিলেন তাপস পাল।

Advertisement

tapas-madhuri

পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত তাপস পালের স্মৃতিচারণায় বলেন, তাঁর অভিনয় প্রতিভাকে ব্যবহার করতে পারেনি টলিউড। তিনি যে খুব একটা ভুল বলেননি, তার প্রমাণ ‘উত্তরা’ ও ‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান’। এখানে আত্মভোলা নেক্সট ডোর বয়ের বদলে এক অন্য তাপস পালকে আবিষ্কার করেছিল দর্শক। তাঁর দুর্দান্ত অভিনয় অবাক করেছিল আপামর বাঙালিকে। শুধু তাই নয়, তপন সিনহার ‘বৈদূর্য রহস্য’র মতো সাসপেন্স ছবিতেও নজর কেড়েছিলেন তিনি। তখন সামাজিক ছবির কাটতিই ছিল বেশি। সাসপেন্স থ্রিলার কতজনেরই বা পছন্দ ছিল? আর তিনি নিজেও ছিলেন সামাজিক ছবির স্টার। সেই জায়গা ছেড়ে ‘বৈদূর্য রহস্য’র মতো ছবি করার সাহস দেখিয়েছিলেন প্রয়াত অভিনেতা।

নিজের কাজের জন্য অনেক বার অনেক জায়গা থেকে প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। একাধিক জায়গা থেকে পেয়েছেন সম্মান, সংবর্ধনা। পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে কলাকার পুরস্কারে ভূষিত করেছে। ‘সাহেব’ ছবির জন্য পেয়েছেন ফিল্মফেয়ার পুরস্কার। কিন্তু এই অভিনেতার শেষজীবন বিশেষ সুখের হল না। শেষ বেলায় সহকর্মী, বন্ধুদের থেকে অনেকটাই দূরে একাকিত্বের মধ্যে কাটাতে হয়েছিল তাঁকে। শরীর ভেঙে পড়েছিল। ১ ফেব্রুয়ারি আমেরিকায়, মেয়ের কাছে যাবেন বলে স্থির করেছিলেন। কিন্তু তার আগেই তাঁকে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভরতি হতে হয়। সেই হাসপাতালেই মঙ্গলবার তাঁর জীবনাবসান হয়। দেশের বাণিজ্যনগরীতে অকালেই ঝরে গেল সংস্কৃতিজগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র।

এক নজরে ‘দাদার কীর্তি’,

  • ১৯৮০ সালে মুক্তি পায় তরুণ মজুমদার পরিচালিত ছবি দাদার কীর্তি। এই ছবি দিয়েই টলিউডে আত্মপ্রকাশ তাপস পালের।
  • তার পরের বছরই আসে বিজয় বসুর ছবি সাহেব। এই ছবির জন্য তাঁর করায়ত্ত হয় ফিল্মফেয়ার পুরস্কার।
    ১৯৮৫ সালে মুক্তি পায় অবোধ।
  • ওই বছরই মুক্তি পায় তপন সিনহার সাসপেন্স থ্রিলার বৈদূর্য রহস্য।
  • এছাড়াও তাঁর অনুরাগের ছোঁয়া, ভালবাসা ভালবাসা, আশীর্বাদ, গুরুদক্ষিণা দর্শকের কাছে তাপস পালকে জনপ্রিয় করে।
  • ২০১২ সালে আটটা আটের বনগাঁ লোকাল ছবিতে প্রতিবাদী চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তাপস পাল।
  • তাঁর শেষ ছবি ছিল খিলাড়ি। এযুগের নায়ক-নায়িকা অঙ্কুশ ও নুসরতের সঙ্গে কাজ করেছিলেন তিনি।
  • ২০১২ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে বিশেষ চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান করে।
  • এছাড়া কলাকার অ্যাওয়ার্ড ও ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement