সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রয়াত অভিনেতা তাপস পাল। মঙ্গলবার ভোর সোয়া তিনটে নাগাদ মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালে জীবনাবসান হয় তাঁর। অভিনেতার মৃত্যুতে শোকের ছায়া টলিপাড়ায়। অভিনেতা চিরঞ্জিৎ, পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তী-সহ অনেকেই শোকবার্তা জানিয়েছেন। চিরঞ্জিৎ বলেছেন, টলিউডে একটি যুগের অবসান হল।
তাপস পালের সঙ্গে একাধিক ছবি করেছেন অভিনেতা চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী। একসঙ্গে বন্ধুর মতো কাজ করতেন তাঁরা। আজ সকালেই তাপস পালের মৃত্যুসংবাদ এসে পৌঁছয় চিরঞ্জিতের কাছে। তারপর কার্যত ভেঙে পড়েছেন তিনি। বললেন, “এক ভাইকে হারালাম। পরপর ভাল ছবি করেছে ও। দাদার কীর্তি, সাহেব… ওর ছবিগুলো ভোলা যায় না। কিন্তু শেষের দিকে ও হারিয়ে গেল। রাজনৈতিক একটা বক্তব্যের জন্য আড়ালে চলে গেল। খুব ভুলেছে ও। শেষে এমন পরিণতি হয়েছিল, চোখে দেখা যায় না। এত উজ্জ্বল ছেলে, হারিয়ে গেল। ওর জন্য আমিও কষ্ট পেতাম খুব। আজ ওর মৃত্যু সংবাদ পেলাম। কিন্তু দেহ চলে গেলেও ওর আত্মা থেকে যাবে। খুব খারাপ লাগছে আমার।”
একই কথা বলেছেন অভিনেত্রী পাপিয়া অধিকারী। অভিনেতার মৃত্যুতে চোখে জল তাঁর। একই অবস্থা অভিনেত্রী দেবশ্রী রায়েরও। কান্না তাঁর বাধা মানছে না। তিনি বললেন, “কী বলব? কিচ্ছু বলার নেই আমার। আমি ভাবতে পারছি না ও নেই।। অকালে চলে গেল। আমাদের পরিবারের মতো ছিল। কম ছবি করেছি একসঙ্গে?” কান্নার বেগ থামিয়ে দেয় দেবশ্রীর গলা। “তাপসদা বাঙালি দর্শকের কাছে এমন একজন নায়ক যার ফুটপ্রিন্ট ততদিন থাকবে, যতদিন বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি থাকবে। এত তাড়াতাড়ি যে তাপসদা চলে যাবেন, ভাবিনি। সবার অগোচরে চলে গেলেন তিনি।” বললেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।
পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্তও তাপস পালের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ। তিনি বললেন, অসাধারণ অভিনেতা ছিলেন তাপস পাল। কিন্তু দুঃখের বিষয় টালিগঞ্জ তাঁর অভিনয় প্রতিভার মূল্যায়ণ করতে পারল না। তাঁর বেশ কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন প্রয়াত অভিনেতা। অসম্ভব উঁচু দরের ছিল তাঁর কাজ। কিন্তু মাঝে তাঁদের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে অবশ্য আবার যোগাযোগ হয়। তখন তাপস পালের রাজনৈতিক মন্তব্য নিয়ে তিনি বলেছিলেন। সেই শেষ দেখা। “ও যা করেছে, তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।” বললেন পরিচালক।
অভিনেতার মৃত্যুতে বন্ধুবিচ্ছেদের শোক পেয়েছেন পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “কখনও মনে হয়নি ও অভিনেতা, আমি পরিচালক। আমাদের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। আমাদের একসঙ্গে ওঠাবসা ছিল। গুরুদক্ষিণা থেকে শুরু করে সংঘর্ষ, অনেক ছবি করেছি ওর সঙ্গে। এত আনন্দ করে কাজ করত ও, যে কী বলব? খুব খেতে ভালবাসত মানুষটা। সে নেই, আর ভাবতেই পারছি না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.