অরিঞ্জয় বোস: চলতি বছরেই বাংলার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর শাহরুখ খানের ছবি ‘পাঠান’-এর জন্য নিজের রাজ্যের হল মালিকদের একাংশের কাছে কোণঠাসা হতে হয়েছিল খোদ বাংলা সিনেমাকে। এবার সলমন খানের ‘টাইগার ৩’ মুক্তির আগেও ‘সিঁদুরে মেঘ’ দেখছেন টলিপাড়ার প্রযোজক-পরিচালকরা।
কারণ, যশ রাজ ফিল্মস-এর শর্ত অনুযায়ী, প্রেক্ষাগৃহে ‘টাইগার ৩’ চললে, অন্য কোনও সিনেমা অন্তত ৩ সপ্তাহ চালানো যাবে না। আরেকটু পরিষ্কার করে বললে, আঞ্চলিক ভাষার কোনও সিনেমা থাকবে না সেই হলে। বাংলাতেও এই নির্দেশিকার কোনও হেরফের হয়নি। আর সেই প্রেক্ষিতেই ক্ষুব্ধ বাংলার সিনে নির্মাতাদের একাংশ। এর আগে ‘পাঠান’-এর জন্য ভুগতে হয়েছিল ‘কাবেরী অন্তর্ধান’, ‘দিলখুশ’, ‘ডক্টর বক্সী’র মতো বাংলা ছবিগুলিকে। এবার দিওয়ালি উপলক্ষে এখনও পর্যন্ত ঠিক রয়েছে এসভিএফ-এর ‘বাদামি হায়নার কবলে’ ছবিটি মুক্তি পাবে। এছাড়াও দুর্গাপুজোর আবহে যে ৪টি ছবি রিলিজ করছে, সেগুলো নিয়েও দর্শকদের যা উন্মাদনা, তা অন্তত তিন সপ্তাহ যে প্রেক্ষাগৃহে রমরমিয়ে ব্যবসা করবে বলেই আশা করছে সিনে বিশেষজ্ঞরা। এদিকে ১০ নভেম্বর ‘টাইগার ৩’র রিলিজ।
সেই প্রেক্ষিতে, দীপাবলিতে ‘টাইগার ৩’র জন্য জায়গা ছেড়ে দিলে উৎসবের মরসুমে বাংলা সিনেমার ব্যবসা যে মার খাবে, তা বলাই বাহুল্য। সেই প্রেক্ষিতেই এসভিএফ-এর কর্ণধার শ্রীকান্ত মোহতার মন্তব্য, “এর আগে ৩ সপ্তাহ কোনও বলিউড সিনেমাকে জায়গা দিতে হয়নি। প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।” অন্যদিকে পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বলছেন, “কন্টেন্ট যদি ভালো হয়, তাহলে কারও ক্ষমতা নেই বাংলা ছবিকে প্রেক্ষাগৃহ থেকে নামানোর।” নবীনা সিনেমাহলের কর্ণধার নবীন চৌখানি সাফ না করে দিয়েছেন যশ রাজ ফিল্মসকে। তাঁর মন্তব্য, “আমার কাছেও প্রস্তাব এসেছিল কিন্তু আমি না করে দিয়েছি। কারণ, এই পুজোতেই আমি বাংলা সিনেমা চালাচ্ছি দিনভর। সেই ছবি ভালো ব্যবসা করলে আমি ‘টাইগার ৩’ নিতে পারব না।”
প্রসঙ্গত, বাংলা সিনেমার সুদিন আর দুর্দিন নিয়ে আলোচনার অন্ত নেই। নেটদুনিয়ায় মাঝেমধ্যেই লম্বা হ্যাজ নামিয়ে প্রতিবাদী রব ওঠে- বাংলা সিনেমার পাশে দাঁড়ান। কিন্তু মুশকিলটা হচ্ছে, বাংলার প্রেক্ষাগৃহে যদি বাংলা সিনেমাই ব্রাত্য থাকে কিংবা উদ্ভট স্লট পায়, তাহলে দর্শকদের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগটা কোথায়? এবার দিওয়ালির সিনেবাজারে বহু প্রতিক্ষীত বিগ বাজেট সিনেমা ‘টাইগার ৩’-এর রিলিজ আসন্ন হতেই ফের সঙ্কট মাথা চাড়া দিল টলিউডে। তবে যশ রাজের শর্তে এবার আর মাথা নোয়াতে চাইছেন না বাংলার সিনেনির্মাতারা। অতঃপর বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারিও দিয়ে ফেললেন এসভিএফ-এর শ্রীকান্ত মোহতা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.