বিশাখা পাল: হায়দরাবাদে পশু চিকিৎসককে প্রথমে ধর্ষণ ও তারপর জীবন্ত পুড়িয়ে মারার ঘটনায় ফুঁসছিল গোটা দেশ। শুক্রবার ভোরের ঘটনার পর সেই ছাইচাপা আগুনের উত্তাপ যেন কিছুটা কমল। ধর্ষণের ১০ দিন পর, আজ, অভিযুক্ত চার জনের এনকাউন্টার করল তেলেঙ্গানা পুলিশ। ঘটনার খবর সামনে আসা মাত্রই পুলিশের প্রশংসায় ফেটে পড়ছে গোটা দেশ। সবার মুখে একটাই কথা, ‘ধর্ষকদের এমন শাস্তিই হওয়া উচিত।’ ব্যতিক্রম নয় গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ডও। অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র থেকে গায়িকা ইমন চক্রবর্তীর মতো অনেকের মুখেই এই রব, ‘উচিত শাস্তি হয়েছে ধর্ষকদের’।
‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল’-এর তরফে শ্রীলেখা মিত্রর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি একবাক্যে পুলিশি তৎপরতার প্রশংসা করেন। বলেন, “আমি এর সম্পূর্ণ সমর্থন করছি। ধর্ষণ করলে এই রকমই শাস্তি হওয়া উচিত। আর যারা ধর্ষকদের সমর্থনে কথা বলে, তাদেরও এমন শাস্তি হওয়া দরকার। তাদের আগুনে পুড়িয়ে মারলে বা গুলি করে মারলেও আপত্তির কোনও জায়গা থাকে না। তবে যদি ধর্ষণ বন্ধ হয়।” অভিনেত্রী এও জানান, ধর্ষকদের শাস্তি পেতেই হবে। তা যেভাবেই হোক না কেন। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে মানবাধিকার নিয়ে কথা বলা অত্যন্ত হাস্যকর বলে মনে করে তিনি।
এরপরই অভিনেত্রী জানান, নির্ভয়া কাণ্ড ঘটে গিয়েছে প্রায় প্রায় সাত বছর হয়ে গেল। আজও আইনি গেরোয় আটকে রয়েছে মামলা। এত তারিখ পেরিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আজও নির্ভয়া ন্যায্য বিচার পাননি। আজ হায়দরাবাদ পুলিশ যা করে দেখালো, ধর্ষকদের শাস্তির ক্ষেত্রে এ এক জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত। তিনি বলেন, “গাছ বপন করার আগে বাজে বীজ ফেলে দিতে হয়। এদেরও ঠিক সেভাবে ফেলে দিতে হবে।” ধর্ষকের ‘শুট অ্যাট সাইট’ হওয়া দরকার। যতদিন পর্যন্ত না ত্রাস ধর্ষকদের মধ্যে ঢুকে যাবে, ততদিন এভাবেই তাদের শাস্তি পেতে হবে বলে মনে করেন শ্রীলেখা।
একই কথা শোনা গেল ইমন চক্রবর্তীর গলাতেও। তিনিও বলেন, “ধর্ষকদের এমন শাস্তিই হওয়া উচিত। আর তাছাড়া হায়দরাবাদের ঘটনা তো আরও মারাত্মক। প্রথমত ধর্ষণ অত্যন্ত জঘন্য অপরাধ। তার উপর হায়দরাবাদের ধর্ষিতাকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে। এগুলো কোনওভাবেই বরদাস্ত করা যায় না। আমার কোনও সহানুভূতি নেই এই চারজন ধর্ষকের প্রতি আর তাদের মৃত্যুর প্রতি। I am so sorry to say that. আমি মন থেকে চেয়েছিলাম ওদের শাস্তি হোক। আর মৃত্যুই তাদের একমাত্র শাস্তি।” কথা প্রসঙ্গে উন্নাওয়ের কথা তুলে আনেন তিনি। বলেন, “উন্নাওয়ের নির্যাতিতাকেও গতকাল জীবন্ত জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। তিনি সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে থাকেন। এক কিলোমিটার দৌড়ে যান। এটা কত বড় নৃশংসতা! যেখানে যেখানে ধর্ষকরা লুকিয়ে রয়েছে, তাদের খুঁজে বের করে এমন শাস্তি দেওয়া উচিত।” ধর্ষণের মামলার ক্ষেত্রে প্রশাসন ও পুলিশ যেন তৎপর হয়ে কাজ করে, এমনটাই চান ইমন। তবে তিনি এও জানান, পুরুষরাই যে ধর্ষণ করে, তা কিন্তু নয়। সমাজও মেয়েদের ধর্ষণ করে, মানুষকে ধর্ষণ করে। গতকাল উন্নাওয়ের নির্যাতিতার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাই তার প্রমাণ। এমন মানুষেরও শাস্তি হওয়া উচিত বলে মনে করেন ইমন চক্রবর্তী।
টুইটারেও অনেকে পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় টুইটারে লিখেছেন, “পুলিশ সঠিক কাজ করেছে। Justice done.” দেব লিখেছেন, “এটাই দরকার ছিল। হায়দরাবাদ পুলিশকে শুভেচ্ছা।” নুসরত জাহান লিখেছেন, “ন্যায়বিচারের জন্য কেউ তো ব্যাটন তুলে নিল।”
Finally.. Though strange how did they try to escape when so many police men were there but at the end Police did their job in a right way. Justice done.. Hope rest all victims will get this justice soon and the crime will stop https://t.co/3litY73YqD
— Prosenjit Chatterjee (@prosenjitbumba) December 6, 2019
Congratulations Hyderabad police
— Dev (@idevadhikari) December 6, 2019
This was required #Encounter
Finally…Someone in the Judicial/ Legal system needs to take up the baton to deliver justice. Voices have been heard – The guilty do not exist. #JusticeDelivered #RestInPeaceDisha
— Nusrat (@nusratchirps) December 6, 2019
যদিও ধর্ষকদের শাস্তি মানেই এনকাউন্টার, তা বিশ্বাস করতে নারাজ অনেকেই। কৌশিক সেনের মতে, এসব ক্ষেত্রে বিচার আরও ত্বরান্বিত করতে হবে। কারণ, এভাবে যদি চলতে থাকে, তবে বিচার ব্যবস্থার উপর থেকে মানুষের ভরসা উঠে যাবে। অপর্ণা সেন জানান, এনকাউন্টার যদি হবে, তহলে পায়ে গুলি করা যেত। সরাসরি গুলি করে মেরে ফেলার ঘটনা তিনি সমর্থন করতে পারছেন না। তাঁরও মত, ধর্ষণের মামলার আরও দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে। ধর্ষকরা আজও জামিনে ছাড়া পাচ্ছে, তা করা একেবারেই কাম্য নয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.