শম্পালী মৌলিক: গোয়েন্দা ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রধান মুখ এবার জীতু কমল। ব্যোমকেশ, ফেলুদা, শবর, সোনাদা, মিতিন মাসি, কিরীটি, সুব্রত শর্মা-র পর বড়পর্দায় আসছে আরও এক রহস্যসন্ধানী। তিনি হলেন– ‘অরণ্য চ্যাটার্জি’। ছবির পরিচালনায় ক্রীড়া সাংবাদিক দুলাল দে। তাঁর ডেবিউ ফিচার ফিল্ম হতে চলেছে “অরণ্য’র প্রাচীন প্রবাদ”। নাম ভূমিকায় জিতু কমল। মজার ব্যাপার হল সিনেমার পর্দায় আসার আগেই বই আকারে প্রকাশিত হবে ‘অরণ্য চ্যাটার্জি’-র কর্মকাণ্ড। পরিচালক দুলাল দে জানালেন, ফ্র্যাঞ্চাইজি করবেন শুরু থেকেই ভেবে ছিলেন। তাই এমন পরিকল্পনা। অরণ্যর বিভিন্ন অভিযানের কাহিনি লিখবে তার জামাইবাবু সুদর্শন হালদার। ঠিক যেমন– ব্যোমকেশের গল্প লেখে অজিত। সুদর্শনের চরিত্রে থাকছেন গায়ক-অভিনেতা শিলাজিৎ মজুমদার। চমক রয়েছে আরও। এই ছবিতে অতিথি চরিত্রে দেখা যাবে কাউন্সিলার অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
এখন প্রশ্ন এত ভিড়ের মাঝে জিতু গোয়েন্দা-চরিত্রে রাজি হলেন কেন? অভিনেতা বলছেন, ‘গোয়েন্দা বলে রাজি হইনি। গল্পটা আমাকে খুব ছুঁয়ে গেছে। একটা ইন্টারেস্টিং ব্যাপার আছে কাহিনিতে তার জন্যই এটা করা। গোয়েন্দা না হলে এটা ক্রিকেটার বা ফুটবলারের গল্পও হতে পারত। যেটা আমাকে আকর্ষণ করবে, সেটাই করব। আর এই ছবির সঙ্গে ক্রিকেট জড়িয়ে, আমি নিজেও সেকেন্ড ডিভিশন খেলেছি। তবে ক্রিকেট না খেললেও অসুবিধা হত না।’ ডেবিউ পরিচালকের ছবিতে রাজি হওয়ার কারণ কী? ‘কেউ না কেউ তো প্রথম একদিন ছিল। আমি নিজেও তো একদিন কোনও এক পরিচালকের কাছে গিয়ে বসে থেকেছি। এবং শুনেছি– ও তো নতুন, হবে না। আগে কিছু কাজ করো তারপরে হবে। তো কাজ করাটা কার কাছ থেকে শুরু হবে? আমার মনে হয়েছে এই মানুষটা খুব প্যাশনেট। অনেকদিন ধরে স্ক্রিপ্ট নিয়ে নাড়াচাড়া করছেন। বাকিটা তো ভাগ্য।’ অকপটে বললেন জীতু।
গোয়েন্দা নিয়ে এত ছবি হচ্ছে শহরে। দর্শক আবার কেন একটা গোয়েন্দা ছবি নিয়ে আগ্রহ দেখাবে? পরিচালক বলছেন, ‘আমার ছবির থিম একটু আলাদা। শহরে নতুন গোয়েন্দা, যে ক্রিকেটের বাইশ গজেও তুখড়। ফার্স্ট ডিভিশন খেলে। সে পুলিশ বিভাগে যুক্ত নয়, তবে ডাক্তারির ছাত্র। অন্যদিকে, সিআইডি ইন্সপেক্টরের চরিত্রে সুদর্শন হালদার (শিলাজিৎ)। অরণ্য আর সুদর্শন সম্পর্কে শ্যালক-জামাইবাবু।’ রানাঘাটের পটভূমিকায় গল্প। চিত্রনাট্য অনুযায়ী এক চিকিৎসকের মৃত্যু হয়, সেখানে যায় অরণ্য। ঘটনাচক্রে সেই মৃত্যু রহস্যের সঙ্গে জড়িয়ে যায় সে। ছবিজুড়ে ক্রিকেটের নানা অনুষঙ্গও থাকবে।
ক্রীড়া সম্পাদকের কাজ করতে করতে সিনেমা বানানোর ইচ্ছে কেন? পরিচালকের স্পষ্ট জবাব, “আমার তিনটে ফুটবল বিশ্বকাপ কভার করা হয়ে গিয়েছে। সারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত দেখেছি। দেখতে দেখতে মনে হয়েছে, এত মানুষ দেখেছি, কত গল্প মাথায়, সেই গল্পগুলো বলার সুযোগ চাই। কিন্তু সেটা বই লিখে করতে চাইনি। মনে হয়েছিল এক্ষেত্রে সিনেমাই শ্রেষ্ঠ মাধ্যম।”
সিনেমা নিয়ে তো সে অর্থে প্রথাগত পড়াশোনাও করেননি? অকপটে পরিচালক বললেন, “না, আমি ইনস্টিটিউটে গিয়ে শিখিনি। যখন ‘গোলন্দাজ’-এর শুটে যেতাম, দেব আমাকে বলত, ‘দুলালদা কোনও ইনস্টিটিউটে ভর্তি হতে হবে না। সারাদিন শুটিং দেখো।’ গত তিন বছরে ছোটখাটো চরিত্রে অভিনয় করেছি, সিরিয়ালের জন্যও লিখেছি, কিন্তু অভিনয় করার সময়েও আমি মনিটরে গিয়ে বসে থাকতাম। ফলে জানতাম সিনেমাই বানাতে চাই।”
রাফিয়াত রশিদ মিথিলা রয়েছেন নার্সের চরিত্রে। পরিচালক জানালেন, মিথিলা ছাড়া আর কারও
মধ্যে তিনি এই চরিত্রটি খুঁজে পাননি। ফলে তিনি আর কারও সঙ্গে কথা বলেনি এই বিষয়ে। দেড় বছর আগে অভিনেত্রীকে চরিত্রটি প্রসঙ্গে জানিয়েছিলেন তিনি।
অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ চরিত্রে থাকছেন সুহোত্র মুখোপাধ্যায়। বলা যায় চিত্রনাট্যের অনেকখানি আলো থাকবে তাঁর দিকে। এছাড়া লোকনাথ দে, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, আর জে সায়ন রয়েছেন অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে। এই ছবির শুটিংস্থল কলকাতা, বারুইপুর, বানতলা ও কৃষ্ণনগর। ক্যামেরায় প্রতীপ মুখোপাধ্যায়। আর মিউজিকের দায়িত্বে ‘বল্লভপুরের রূপকথা’ খ্যাত শুভদীপ গুহ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.