নতুন জামার গন্ধ। পুজোসংখ্যার পাতায় নয়া অভিযান। শরতের নীল-সাদা মেঘের ভেলায় পুজোর ছুটির চিঠি। ছোটবেলার পুজোর গায়ে এরকমই মিঠে স্মৃতির পরত। নস্ট্যালজিয়ার ঝাঁপি খুললেন কোয়েল মল্লিক।
ছোটবেলার পুজো মানেই কত না স্মৃতির ভিড়। কোনটা ছেড়ে কোনটা বলি! আমাদের মল্লিকবাড়িতে তো পুজো হয়। দেখতাম আমাদের দালানে প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে। আমার কীরকম মনে হত, যাঁরা প্রতিমা গড়ছেন, তাঁরা দেরি করছেন বলেই পুজো দেরিতে আসছে। আমি প্রতিদিন স্কুল থেকে ফিরেই বলতাম, শুধু এইটুকু কাজ এগোল? যেন আমি হাত দিলে, এক লহমায় কাজ শেষ হয়ে যাবে। আর তাড়াতাড়ি পুজো এসে পড়বে। যাইহোক এই আসছে আসছে করেই পুজো এসে পড়ত। আর আমাদের আনন্দের পালা শুরু।
[ আমার দুগ্গাপুজো: সিটি সেন্টারের ওখানেই প্রথম কাশফুল দেখা যেত ]
পুজো মানেই আমার কাছে হইচই-আনন্দ। সেটা ছোটবেলাতে যেমন ছিল, এখনও তেমন। সারা বছর সকলেই কাজে ভীষণ ব্যস্ত থাকতেন। কিন্তু এই পুজোর কটাদিন একেবারে অন্যরকম। সকলে একসঙ্গে অবসর কাটাচ্ছেন। আমার কাছে মনে হত যেন একটা ম্যাজিক হচ্ছে। আমরা ছোটরা তো খুব আনন্দ করতাম। আরতি হয়ে গিয়েছে, তারপরও গল্প করতাম। মা বলত, তোরা এত রাতে এখনও জেগে আছিস? কিন্তু সে সব কথায় কে কান দেয়! আমাদের মনে হত, ঘুমোলেই তো পুজো শেষ। ঘুমের জন্য সারা বছর পড়ে আছে। তাই যতটা জেগে থেকে চুটিয়ে আনন্দ করা যায়, পুজোর কটাদিন যেন শুধু সে জন্যেই। আর আসছে আসছে করে পুজো চলে এলেই তো হু হু করে দিন কেটে যাবে। এই সপ্তমী তো, অষ্টমীর প্ল্যানিং করতে না করতেই শেষ।
[ প্রতিবন্ধকতা বাধা নয়, এক হাতেই মৃন্ময়ী দশভুজা গড়ছেন জগদীশ ]
ছোটবেলায় আর একটা আনন্দের বিষয় ছিল নর্দার্ন পার্কে যাওয়া। ওটা আমাদের বাড়ির কাছেই। অঞ্জলি দেওয়ার পর আমরা ওখানে চলে যেতাম। ফুচকা-ভেলপুরি খাওয়া চলত। ওদিকে বিরাট রোলার-কোস্টার। সব মিলিয়ে সে এক দারুণ জমজমাট ব্যাপার। অভিনয় শুরু করার পর প্রথম প্রথম এই ব্যাপারটা মিস করতাম। মনে হত, ইস এখন আমরা আড্ডা দিতাম বা ওটা করতাম ইত্যাদি! তবে মল্লিকবাড়ি পুজোর সময় এতটা জমজমাট থাকে যে, একেবারে অন্যরকম অনুভূতি হয়। কলকাতা ও কলকাতার বাইরে থেকেও কত মানুষ পুজো দেখতে আসেন। শিল্পীরা অপেক্ষা করে থাকেন তাঁদের সেরা কাজটা দেখানোর জন্য। মা তো প্রতিদিনই আমাদের সঙ্গে আছেন। তবু ওই কটাদিন মনে হয়, মা প্রত্যেকের প্রার্থনা শুনছেন আলাদা করে। আশীর্বাদ করছেন। এখনও পুজোর আনন্দ আমার কাছে তাই ছোটবেলার মতোই।
[ শহরের সেরা পুজোর জবর খবর, চোখ থাকুক শুধুই sangbadpratidin.in-এ ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.