সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তাঁকে একবার চোখের দেখা দেখতে কাতারে কাতারে ভিড় করেছিলেন অনুগামীরা। টেলিভিশনের পর্দায় চোখ ছিল লক্ষ লক্ষ মানুষের। অনেক ভিড়ের মাঝেও এক ঝলক দেখা মিলল। বধূ বেশেই সাজানো হয়েছিল শ্রীদেবীকে। কপালে সিঁদুর। ঘন লাল লিপস্টিক। পরনে সোনালি কাজ করা কাঞ্জিভরম। সেই সঙ্গে বিশেষ গহনা। নানা ডিজাইনের গয়না ছেড়ে কেন পরানো হয়েছিল এই বিশেষ হার।
[ ‘ক্লান্ত হলেও বিয়েতে যেতে হবে’, ছোটবেলার বান্ধবীকে শেষ কথা শ্রীদেবীর ]
না, স্রেফ সাজানোর জন্য এ গয়না পরানো হয়নি। বরং এর পিছনে আছে বিশেষ ঐতিহ্য। এই ধরনের গয়নাকে বলা হয় ‘টেম্পল জুয়েলারি’। দক্ষিণী সংস্কৃতিতে এর বিশেষ জায়গা আছে। বিশেষ করে তামিলদের মধ্যে। শ্রীদেবীর জন্মও হয়েছিল এক তামিল পরিবারে। বেশ কয়েক দশক বলিউটে দাপটের সঙ্গে রাজত্ব করলেও জন্মসূত্রে তিনি তামিলই। দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমাতেও তিনি একজন উল্লেখযোগ্য অভিনেত্রী। শেষযাত্রায় তাই দক্ষিণ ভারতীয় রীতি মেনেই সাজানো হয়েছিল তাঁকে। পরানো হয়েছিল দক্ষিণের স্পেশাল টেম্পল জুয়েলারি। এই ধরনের গয়নাতে দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন মন্দির ও দেব-দেবীর প্রতিকৃতি খোদাই করা থাকে। সংস্কৃতিই যে নাগরিকদের গহনা, এ যেন আক্ষরিকভাবে সত্যি এই টেম্পল জুয়েলারির ক্ষেত্রে।
[ ‘শৈশব ছিল না, আজীবন পারফরম্যান্সের চাপ বয়ে বেড়াতে হয়েছে শ্রীদেবীকে’ ]
এককালে দক্ষিণ ভারতের মন্দিরে নর্তকীরাই এ ধরনের গয়না পরতেন। পরবর্তীকালে অভিজাত সম্প্রদায়ের মধ্যেও তা পরার রেওয়াজ শুরু হয়। ক্রমে তা দক্ষিণী সংস্কৃতির অঙ্গ হয়ে ওঠে। সদ্য বিবাহিত নারীকে এই গয়না পরিয়ে দেওয়া হয়। অন্তিম যাত্রায় শ্রীদেবীকেও সাজানো হয়েছিল নববধূর বেশে। দুবাই থেকে মরদেহের প্রথম যে ছবি প্রকাশিত হয়েছিল সেদিকে যেন চোখ রাখতে পারছিলেন না তাঁর অনুগামীরা। এই কি তাঁদের সাধের ‘চাঁদনি’? দেহ এমবামের পর রাতে সাজিয়ে তোলা হয় শ্রীদেবীকে। শেষ সাজে যেন তিনি পর্দার সেই মোহিনীমায়া হয়েই চলে গেলেন আগুনের সংসারে। আর তাঁর অন্তিম যাত্রাতেও থেকে গেল তাঁর জন্মসূত্রে পাওয়া উত্তরাধিকারের সংস্কৃতি। বলিউডে স্টার হলেও কখনও নিজের শিকড় ভোলেননি শ্রীদেবী। এমনকী নিজের ছোটবেলার বন্ধু নিমন্ত্রণ করলেও ছুটে গিয়েছেন। যোগাযোগ রক্ষা করেছেন তাঁর প্রথম জীবনের নায়ক তথা বন্ধুদের সঙ্গে। শ্রীদেবী মানে যেমন স্টারডম, এনিগমা, তেমনই এই সংস্কৃতি ছুঁয়ে থাকে। মরণযাত্রাতে পরিবারও তাই রক্ষা করল সেই ঐতিহ্য।
[ এটাই বন্ধুত্ব, শুধু শ্রীদেবীর জন্যই ৩৭ বছরের প্রথা ভাঙলেন রজনীকান্ত ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.