সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পরিচালক সুদীপ্ত সেনের ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ ছবির বিতর্ক শেষ হতে না হতেই ফের এক নতুন ছবি নিয়ে বিতর্ক শুরু বাংলায়। ছবির নাম ‘দ্য ডায়রি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল!’ এই হিন্দি ছবিটির পরিচালক সানোজ মিশ্র। নেটদুনিয়ায় এই ছবির ট্রেলার প্রকাশ্যে আসতেই নড়ে চড়ে বসল বাংলার পুলিশ। পরিচালক সানোজকে সোজা পাঠানো হল আইনি নোটিস। অভিযোগ এই ছবির মধ্যে দিয়ে বাংলার সম্মানকে ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করা হয়েছে। আগামী ৩০ মে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকাও হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০বি, ১৫৩এ, ৫০১, ৫০৪, ৫০৫, ২৯৫এ ধারা-সহ আরও বেশ কয়েকটি ধারায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে এই ছবির পরিচালকের বিরুদ্ধে।
পরিচালক সানোজ মুম্বইবাসী। মুম্বইয়ের ওসিওয়াড়া থানার পুলিশের হাত দিয়েই আইনি নোটিস পাঠানো হয়েছে পরিচালককে। বাংলার পুলিশের তরফ থেকে এর দ্রুত জবাবও চাওয়া হয়েছে।
এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জানান, ”এটা কোনও সিনেমা হতে পারে না। এটা সম্পুর্ণ প্ররোচনা দেওয়া, ধর্মীয় ভেদাভেদ করা, বিষ ছড়ানোর চক্রান্ত। শুধু নোটিস নয়, এই পরিচালককে অবিলম্বে গ্রেফতার করা উচিত। এর সঙ্গে সিনেমা, আর্ট, শিল্পের কোনও সম্পর্ক নেই। এগুলো তো বিজেপির এজেন্ডায় তৈরি হচ্ছে। বেঙ্গল স্টোরি যদি করতে হয়, তাহলে তো সেই স্টোরি শুরু হবে সেখান থেকে, যেখানে একের পর এক প্রকল্পতে প্রথম পুরস্কার পায় পশ্চিমবঙ্গ। দ্বিতীয় পুরস্কার পায় পশ্চিমবঙ্গ। সারা দেশের সেরা প্রকল্প দুয়ারে সরকার। সেই পুরস্কার পায় পশ্চিমবঙ্গ। এগুলোই তো বেঙ্গল স্টোরি। তবে যদি সন্ত্রাস দেখাতে হয়, তাহলে মরিচঝাঁপি দেখান, সাঁইবাড়ি দেখান। যেখানে ছেলেকে খুন করে তাঁর রক্ত দিয়ে ভাত মেখে মাকে খাওয়ানো হয়েছিল। একের পর গণহত্যা, গণধর্ষণ। বানতলা থেকে শুরু করে পর পর এমন ঘটনা। ইংরেজি তুলে দেওয়া, কম্পিউটার ঢুকতে না দেওয়া, সিপিএম জমানার সব অপশাসন, অত্যাচার সেটাই তো বেঙ্গল স্টোরি। বিজন সেতুতে আনন্দমার্গী সন্ন্যাসীদের পুড়িয়ে মারা হল। এগুলোই তো বেঙ্গল স্টোরি। এগুলো বাদ দিয়ে হিন্দু-মুসলমান করতে চান! কত বড় মিথ্যাচার, ট্রেলারে বলছে দুর্গাপুজোয় সরকার বিঘ্ন ঘটায়! এটা কি স্টোরি? কিন্তু আসল কথা হচ্ছে, এই সরকার পুজোয় কমিটিদের সাহায্য করে, যাতে পুজোটা ঠিক করে হতে পারে। কার্নিভ্যাল হয়। ইউনেস্কো দুর্গাপুজোকে হেরিটেজের স্বীকৃতি দেয়। সেগুলোকে গোপন করে কুৎসিতভাবে ধর্মীয় বিজেপির এজেন্ডা অনুযায়ী বিষ ছড়ানো হয়েছে। সিনেমার নামে রাজনীতি, ধর্মীয় বিষ ছড়ানোর জন্য এদের কঠোর শাস্তি দেওয়া উচিত।”
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে ছবির পরিচালক সানোজ জানিয়েছেন, ”বাংলার সম্মান ক্ষুণ্ণ করার জন্য এই ছবি তৈরি নয়। আমরা বাস্তবটা তুলে ধরেছি। ছবিটা ভালভাবে গবেষণা করার পরই তৈরি করা হয়েছে।”
#WATCH | Sanoj Mishra, director of the Hindi film “The Diary of West Bengal” speaks on the notice severed to him by the West Bengal police alleging that the director is trying to defame Bengal with this film, says, “My intention is not to malign the image of the state. We have… https://t.co/N00BlnwqOx pic.twitter.com/SOrakPdjCe
— ANI (@ANI) May 26, 2023
ট্রেলারে দেখা গিয়েছে, ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছে বাংলায় ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনার সংগৃহীত ভিডিও। এই ভিডিওয় বাংলার রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিত্বদের মতো করেই চরিত্ররা সংলাপ বলেছেন। ট্রেলারে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদলে তৈরি এক চরিত্রকেও। ছবিটি প্রযোজনা করেছেন জিতেন্দ্র নারায়ণ সিং, তাপস মুখোপাধ্যায় এবং অচিন্ত্য বসু। মূলত, অচেনা অভিনেতাদের দেখা গিয়েছে এই ছবির ট্রেলারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.