সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অপেক্ষার অবসান। অনেক টালবাহানার পর অবশেষে পুজোর আগেই রাজর্ষি দে-র ‘শুভ নববর্ষ’-র চূড়ান্ত পর্যায়ের শুটিং শেষ হল। তাও আবার মাঝে এসে দাঁড়াল ‘তিতলি’-র ঝঞ্ঝা। সেসব পেরিয়ে পরিচালক শেষ করলেন পুরীর আউটডোর। সাইক্লোন হতে পারত ভিলেন। কিন্তু তা হয়নি। বরং তিতলি উপেক্ষা করে পুরীর সৈকতে লাস্যের ঝড় তুললেন নায়িকারা। তাঁরা কারা? অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়, রাইমা সেন, তনুশ্রী চক্রবর্তী, সুদীপ্তা চক্রবর্তী, পল্লবী চট্টোপাধ্যায় এবং ঋ। বিশেষ করে উল্লেখ্য ঝড় উপেক্ষা করে সমুদ্র তীরে ঋ-এর শট দেওয়া। বোঝা গেল তিনি শুধু ‘বোল্ড’ অভিনেত্রী নন, সাহসী মানুষও বটে!
ইন্দ্রজিৎ রায় প্রযোজিত নারীকেন্দ্রিক এই ছবির শুটিংয়ের জন্য সম্প্রতি পুরীতে এই নায়িকারা ছাড়াও গিয়েছিলেন রুদ্রনীল ঘোষ, ইন্দ্রাশিস রায়, গৌরব চক্রবর্তী। মূলত শুটিং ছিল ভুবনেশ্বর আর কোনারকে। চারদিনের এই শুট জমে উঠেছিল আড্ডা আর মজায়। নায়িকাদের বন্ধুত্বও যে গল্প নয় সত্যি, তার প্রমাণও পাওয়া গিয়েছে। ইউনিটের সদস্যদের তেমনই দাবি। রাইমা নাকি রোজ খোঁজ নিতেন সকলে ঠিকমতো খেয়েছে কিনা। ইন্দ্রাশিস এখন সিঙ্গল বলে, রোজই নাকি তাঁকে টিজ করা হত যে তিনি সত্যি বলছেন না। আর তনুশ্রী ডায়েট মেনে চললেও, সকলের খাওয়াদাওয়ার বহর দেখে শেষে নিজেকে আর সামলাতে পারেননি! রোজ চলত আড্ডা, অন্ত্যাক্ষরী আর পুরনো আউটডোরের গল্প। প্রসঙ্গত, এই ছবিতে প্রথমবার একসঙ্গে বড় পর্দায় দেখা যাবে বউদি-ননদ অর্থাৎ অর্পিতা আর পল্লবী চট্টোপাধ্যায়কে। আর এই দু’জনের বন্ধুত্ব নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। শরীর খারাপ নিয়ে আউটডোরে গেলেও পল্লবী সমুদ্রের হাওয়া আর আড্ডার তোড়ে সুস্থ হয়ে যান দু’দিনেই। অন্যদিকে রিয়েল লাইফ ফ্রেন্ড ইন্দ্রাশিস আর গৌরব আগাগোড়া ছিলেন বেশ খোশমেজাজে। পরিচালনার পাশাপাশি রাজর্ষি রয়েছেন একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রেও।
ইউনিট সূত্রে জানা গেল, তাই তিনি আড্ডায় কম যোগ দিতে পেরেছেন। আর এই লাস্ট ফেজ-এর শুটিংয়ের ডিওপি ছিলেন গোপী ভগৎ, নায়িকারা তাঁর লেগপুল করতেও ছাড়েননি। যেমনটা হয় শুটিংয়ে। আর সূত্রের খবর রুদ্রনীল এবারে প্রকৃতি ছাড়া কারও সঙ্গে প্রেম করেননি। বেশিরভাগ সময় ছবি তুলে বেড়িয়েছেন! কোনারক সূর্যমন্দিরের কাছে শুটিং হলেও ‘তিতলি’র ভয়ে কেউ মন্দির দর্শন করেননি। পরে পুরীতে এসে শুটিং শুরুর আগেই জগন্নাথ দর্শনে গিয়েছিলেন সুদীপ্তা, রাইমা, তনুশ্রীরা। মন্দিরের ভিতর রাইমাকে দেখে তো এক ভক্ত প্রায় অজ্ঞান। ভিড় জমেছিল তনুশ্রী, সুদীপ্তাকে দেখতেও। তবে ভিড় বাড়ার আগেই মন্দির দর্শন শেষ করেন তাঁরা।
এবার আসা যাক ছবির গল্পে। মূলত চার কন্যার গল্প। একজন নামকরা অভিনেত্রী (অর্পিতা)। অন্যজন গৃহবধূ, পরে যে শেফের ভূমিকা নেয় (তনুশ্রী)। আরেকজন খ্যাতনামা নৃত্যশিল্পী (রাইমা)। শেষোক্ত জন স্থানীয় গৃহশিক্ষক (সুদীপ্তা)। প্রত্যেকেই বিবাহিত। কিন্তু বিয়ের পর জীবন বইছিল অন্য খাতে। বহু বছর পর কলেজের পুনর্মিলনে তাদের আবার দেখা। যেখানে তাদের মধ্যমণি এক ফেভারিট টিচার (পল্লবী)। সে-ই বুঝতে পারে মেয়েদের হালকা হাসিঠাট্টার নেপথ্যে আসলে অনেকখানি দুঃখ লুকিয়ে আছে। তো ম্যাডামই তাদের পরামর্শ দেয় বেড়িয়ে আসার। এবার বেড়াতে গিয়ে পুরনো বন্ধুরা ফের পরস্পরের কাছে আসে। খুলে যায় মনের বন্ধ দরজা। আর সেই বেড়ানোর জায়গাই হল পুরী। ফলে আন্দাজ করাই যায় এই পুরী ট্রিপ কেমন জমে উঠেছিল। বেড়াতে গিয়ে এই চারজন বন্ধুর সঙ্গে চারজন পুরুষের আলাপ হয়। তাঁরা হলেন রুদ্রনীল, গৌরব, ইন্দ্রাশিস এবং রাজর্ষি। এই চারজনেরই জীবনদর্শন গড়পড়তা বাঙালির চেয়ে কিছুটা আলাদা। এরপর কী হয় সেটা ছবিতে দেখাই ভাল।
এঁরা ছাড়াও ‘শুভ নববর্ষ’-তে চারকন্যার স্বামীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, ব্রাত্য বসু, চন্দন সেন ও কৌশিক সেন। এঁরা অবশ্য পুরীর আউটডোরে ছিলেন না। আর খুব গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি চরিত্রে রয়েছেন অঙ্কিতা চক্রবর্তী, ঋ এবং দেবলীনা কুমার (অঙ্কিতা আর দেবলীনা পুরীতে ছিলেন না)। জানা গেল ঋ এবং পল্লবীকে সমপ্রেমী কাপলের ভূমিকায় দেখা যাবে। নতুন বছরে ছবিটি মুক্তি পাওয়ার কথা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.