সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রবিবারই আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে মহামিছিলে পা মিলিয়ে ছিলেন টলিউড অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। তাঁর কণ্ঠে ছিল একটা স্লোগান, ‘বিচার চাই’। এমনকী, মিছিল শেষে ধর্মতলায় ধর্নাতেও বসেছিলেন। সেই প্রতিবাদী স্বস্তিকার যখন কানে এল সন্দীপ ঘোষের গ্রেপ্তারির খবর, কিছুটা হলেও যেন স্বস্তি পেলেন স্বস্তিকা। তবে অভিনেত্রীর কথায়, ‘এখনই থামলে চলবে না।’
সন্দীপ ঘোষের গ্রেপ্তারি নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে সংবাদ প্রতিদিনকে স্বস্তিকা স্পষ্টই জানালেন, ”অনেকগুলো দাবির মধ্যে একটা অন্তত পূর্ণ হল। ২৪ দিন লাগলেও, তা হল। এই ভাবেই প্রতিবাদ চালিয়ে যেতে হবে। থামলে চলবে না। কিঞ্জল, মেঘনীল এবং সমস্ত জুনিয়ার ডাক্তারদের ডাকে শামিল আছি এবং থাকব। ওদের ডাকতেও হবে না। ওরা যেখানে থাকবে, সেখানে চলে যাব।
স্বস্তিকা আরও বলেন, ”এটা শুধু একটা ধর্ষণ বা খুন নয়। এই দুর্নীতি আমাদের শিরায় ঢুকেছে তা মহামারীর রূপ নিয়েছে একে গোড়া থেকে উপড়ে ফেলতে হবে। এটা শুরুমাত্র। খুব ছোট পদক্ষেপ বড় পরিবর্তনের। আন্দোলন, প্রতিবাদ দীর্ঘজীবী হোক। ”
অবশেষে গ্রেপ্তার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। টানা ১৫ দিন জেরার পর সোমবার তাঁকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। জানা গিয়েছে, তরুণী চিকিৎসককে খুন বা ধর্ষণের মামলা নয়। আর্থিক দুর্নীতি মামলায় ধৃত সন্দীপ।
আজ সকাল থেকেই টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষকে। তাতে একাধিক অসংগতি মেলে বলে খবর। এর পরই আচমকা সন্দীপকে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে পড়েন সিবিআইয়ের অ্যান্টি করাপশন ব্রাঞ্চের কর্তারা। জল্পনা শেষে নিজাম প্যালেসে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখানেই গ্রেপ্তার করা হয় সন্দীপকে। এদিকে, সন্দীপ গ্রেপ্তার হতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েছেন আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা। তাঁদের কথায়, সন্দীপের গ্রেপ্তারি নৈতিক জয়। বলে রাখা ভালো, এদিন দুপুর থেকে কলকাতার নগরপাল বিনীত গোয়েলের পদত্যাগের দাবিতে লালবাজার অভিযানে নামেন তাঁরা। নগরপাল দেখা না করায় রাস্তাতেই বসে পড়েছেন আন্দোলনকারীরা।
উল্লেখ্য, গত ৮ আগস্ট, নাইট শিফট ছিল আর জি করের তরুণী চিকিৎসকের। পরদিন সকালে সেমিনার হল থেকে দেহ উদ্ধার হয় তাঁর। সেই সময় প্রায় বিবস্ত্র ছিলেন তিনি। অভিযোগ, ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে তরুণী চিকিৎসককে। ওই ঘটনার সময় আর জি করের অধ্যক্ষ ছিলেন সন্দীপ ঘোষ। তাঁর বিরুদ্ধে আন্দোলনে সরব হন পড়ুয়া ও জুনিয়র চিকিৎসকরা। পদত্যাগের দাবি জানান। টালমাটাল পরিস্থিতির মাঝে গত ১২ আগস্ট এই ঘটনার ‘নৈতিক দায়’ নিয়ে ‘স্বেচ্ছা’য় পদত্যাগ করেন অধ্যক্ষ সন্দীপ। যদিও তার কিছুক্ষণের মধ্যে রাজ্য সরকারের তরফে তাঁকে ‘পুনর্বাসন’ দেওয়া হয়। সেখানেও প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। এর পর কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে লম্বা ছুটিতে যেতে হয়েছে আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.