সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঝাড়খন্ড বিধানসভা নির্বাচনে ‘রাম’ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি। ৮১টি আসনের মধ্যে মোটে ২৫টি আসন বাগাতে পেরেছে। বাকি আসন গিয়েছে কংগ্রেস এবং ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার কাছে। এককথায়, পালের হাওয়ায় ধাক্কা লেগে মহাজোটের কাছে হার হয়েছে বিজেপির। আর ঝাড়খন্ডে বিজেপির এই হার নিয়েই মোদি সরকারকে তোপ দাগলেন টলিউড অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়।
কোনওরকম রাখঢাক না করে স্পষ্ট ভাষায় তীব্র কটাক্ষ করলেন। “আর বলুন, জঙ্গলে বাস করা ভাই-বোনেরা… জঙ্গলবাসীরা তো জঙ্গলে মঙ্গল করে দিয়েছেন”, সোমবার ঝাড়খন্ডে বিজেপির হারের খবর প্রকাশ্যে আসার পর এমন কথাই নিজের ফেসবুক পোস্টে লিখলেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। হ্যাশট্যাগেও মোদিকে তোপ স্বস্তিকার- #JharkhandSaysNoToModi.
অভিনেত্রীর এই ফেসবুকে পোস্টে নেটিজেনদের একাংশ যেমন সমর্থন জানিয়েছেন। বিজেপি সমর্থকরা আবার পালটা অভিনেত্রীকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি। প্রসঙ্গত, স্বস্তিকা বরাবরই স্পষ্টভাষী। সোজাসুজি কথা বলতেই ভালবাসেন। নিন্দুকদের ভাষায় তিনি ‘রুক্ষ্ম’ হলেও অনুরাগীদের কাছে তিনি পরিচিত স্পষ্টবক্তা বলেই। যিনি কোনওরকম ভনিতা না দেখিয়ে সোজা ভাষায় কথা বলার পথ বেছে নেন। সোমবারও তাই করলেন নায়িকা। CAA ইস্যুতে জামিয়া কাণ্ডের পরও মোদি সরকারকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি অভিনেত্রী।
এই অবশ্য প্রথম নয়। গেরুয়া হোক কিংবা সবুজ, তাঁর কটাক্ষ থেকে বাদ যায়নি কোনও শিবিরই। যেমন, চলতি বর্ষে লোকসভা ভোটের সময় আসানসোল প্রার্থী মুনমুন সেনের ‘বেড-টি’ অভ্যেস নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন। সরব হয়েছিলেন প্রতিবাদে। নির্বাচনী কেন্দ্রীয় এলাকায় একাধিক সংঘর্ষ হওয়া সত্ত্বেও সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুনমুন সেন জানিয়েছিলেন, তিনি কিছুই জানেন না। কারণ, সেদিন সকালে ঠিক সময়ে ‘বেড-টি’ না পাওয়ায় ঘুম ভাঙেনি তাঁর। আর লোকসভা নির্বাচনের তারকা তৃণমূল প্রার্থীর এই প্রতিক্রিয়ার পরই কোনওরকম রেয়াত না করে ঝাঁঝালো উত্তর দেন স্বস্তিকা।
সোমবার সকালে গণনা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ বাদেই ঝাড়খন্ডে ফলাফল স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। হাওয়া বুঝতে পেরে আনন্দে মেতে উঠেছিলেন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা ও কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা। প্রসঙ্গত, হারের কারণ হিসেবে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কিংবা এনআরসি ইস্যু নয়। বরং ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের জন্য স্থানীয় ইস্যুকেই দায়ী করছে বিজেপি।
পাশাপাশি দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বেরও প্রভাব রয়েছে বলে তারা মনে করছে। দলেরই একাংশ ভরাডুবির জন্য মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাসের নেতৃত্বকে দায়ী করতে শুরু করেছেন। যদিও, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা এই ভোটের একদিকে বিজেপির ‘একলা চলো নীতি’ এবং বিপরীতে কংগ্রেস, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা এবং রাষ্ট্রীয় জনতা দলের ‘শক্তিশালী’ জোটকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। তাছাড়া, আদিবাসী অধ্যুষিত রাজ্যটিতে একজন আদিবাসী ‘মুখ’কে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরে নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়টিকে গেরুয়া শিবিরের বড় ‘ভুল’ হিসেবেও দেখছেন তাঁরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.