১৮ বছর পরে চার বন্ধুর ‘রি-ইউনিয়ন’। যেখানে বেরিয়ে আসে অনেক গোপন কথা। মেয়েদের আধুনিক জীবনযাপনের প্রতিচ্ছবি ‘অনেকদিনের পরে’। আজ জি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে। লিখছেন সোমনাথ লাহা।
ছোটবেলার অন্তরঙ্গ বন্ধু। বহুদিন পর তার সঙ্গে দেখা নেই। কিন্তু আজকের দুনিয়ায় সোশ্যাল মিডিয়ার সৌজন্যে যদি সেই পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে আবার দেখা হয়ে যায়, কথা হয়। আর যদি হয় একটা জমাটি রি-ইউনিয়ন। তাহলে তো কথাই নেই। কিন্তু সেই বন্ধুর সূত্র ধরে যদি সামনে চলে আসে কোনও গোপন কথা। বেরিয়ে পড়ে সত্য। তাহলে কি বন্ধুত্ব আগের মতোই থাকে? নাকি আকার নেয় বিরাট দ্বন্দ্বের?
এহেন বিষয় ভাবনাই এবার প্রতিফলিত হতে চলেছে পরিচালক দেবারতি গুপ্তর ছবি ‘অনেকদিনের পরে’তে। এক অর্থে মেয়েদের আধুনিক জীবনযাপন ও তাদের জীবনের জটিলতার প্রতিচ্ছবিকেই মেয়েবেলার এই গল্পের মাধ্যমে বুনন করেছেন পরিচালক। প্রসঙ্গত, এটি দেবারতির চতুর্থ ছবি। ইতিপূর্বে ‘হইচই’, ‘কল্কিযুগ’, ‘কুহেলী’-র মতো ছবি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন এই পরিচালক।
[ আরও পড়ুন: বিশেষ স্ক্রিনিংয়ে ‘কণ্ঠ’ দেখে কী বললেন চিকিৎসক দেবী শেঠি? ]
মূলত একই স্কুলের চার ছাত্রীর বহুদিন পরে একসঙ্গে আসাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত এই ছবিতে মুখ্য চরিত্রে রয়েছেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, সুদীপ্তা চক্রবর্তী, রূপাঞ্জনা মিত্র ও পালোমি ঘোষ। এই ছবির হাত ধরে প্রথমবার একসঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করতে চলেছেন টালিগঞ্জের দুই অন্যতম দমদার অভিনেত্রী স্বস্তিকা-সুদীপ্তা। তাঁদের দু’জনের দ্বৈরথও যে এই ছবির এক অন্যতম ইউএসপি সেকথা বলাই যায়। অন্যদিকে কোঙ্কনী ছবির জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী পালোমির এটিই প্রথম বাংলা ছবি।
ছবির কাহিনি আবর্তিত হয়েছে এক নামী কনভেন্ট স্কুলের ছাত্রীদের বহুদিন পরে একসঙ্গে আসাকে কেন্দ্র করে। স্বাগতা (স্বস্তিকা) ১৮ বছর পরে তার ব্যাচের ১৫০ জন ছাত্রীর সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় যোগাযোগ স্থাপন করে স্কুলেই একটা গেট টুগেদার তথা রি-ইউনিয়নের প্ল্যান করে। কিন্তু দেখা যায় এসে পৌঁছয় শুধু চারজন। স্বাগতা, দেবলীনা (সুদীপ্তা), সায়ন্তনী (রূপাঞ্জনা) ও কুহু (পালোমি)। চার বন্ধুর কথোপকথনের মধ্য দিয়েই বেরিয়ে আসতে থাকে লুকিয়ে থাকা নানা টুইস্ট, নানা রহস্যময় বাঁক। কারণ জীবনের পুরনো ও সবচেয়ে অন্ধকার সত্যিগুলি তো একমাত্র স্কুলের বন্ধুরাই জানে। এই ছবির অন্যতম এক চরিত্র সোশ্যাল মিডিয়াও। কারণ ফেসবুক বা হোয়াটসঅ্যাপই তো বহুদিনের পুরনো বা প্রায় হারিয়ে যাওয়া বন্ধুদের খুঁজে পাওয়ার চাবিকাঠি। এই চার বন্ধুর সম্পর্কের সমীকরণ শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় সেটা জানতে হলে দেখতে হবে এই ছবি।
ছবির কাহিনিকার পরিচালক স্বয়ং। সংগীত পরিচালনায় রাজানারায়ণ দেব। ছবিতে রবীন্দ্রসংগীত, লোকসংগীত, আমেরিকান ফোক সংগীত সবমিলিয়ে রয়েছে মোট ৫টি গান। সিনেমাটোগ্রাফার রক্তিম মণ্ডল। সম্পাদনায় সৌভিক। ছবির শুটিং হয়েছে কলকাতা ও তার আশেপাশের অঞ্চলে। দেবারতির এই ছবির আনুষ্ঠানিক প্রিমিয়ার হতে চলেছে ৭ মে জি-এর ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম জি-ফাইভ-এ।
দেবারতির কথায়, ‘‘এটা সমসাময়িক মেয়েদের বা বলা ভাল মেয়েদের আধুনিক জীবনযাপন ও তাদের জীবনের জটিলতার গল্প। আজকের সময়ে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপের হাত ধরে বহু পুরনো বন্ধুর সন্ধান আমরা পেয়ে থাকি। আমি নিজে যেহেতু গার্লস স্কুলে পড়েছি তাই আমি আমার চারপাশে ও বন্ধুদের মধ্যে এরকম ঘটনার অভিজ্ঞতা প্রত্যক্ষ করেছি। সেখান থেকেই এই আইডিয়াটা মাথায় এসেছিল। আর সোশ্যাল মিডিয়ার হাত ধরে পুরনো বন্ধু খুঁজে পাওয়াটাও ছবিটাকে শুরু করতে সাহায্য করেছে। আমার মনে হয় আজকের মেয়েরা এই ছবি দেখে নিজেদের সঙ্গে মিল খুঁজে পাবেন।” তবে ছবিটির ডিজিটাল রিলিজ প্রসঙ্গে দেবারতির মত, “প্রাথমিকভাবে খারাপ লাগলেও জি-ফাইভ প্ল্যাটফর্মের হাত ধরে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা বাঙালিদের কাছে এই ছবি পৌঁছে যাবে এটা ভেবে ভাল লাগছে। আশা করছি সকলের ছবিটি ভাল লাগবে।”
[ আরও পড়ুন: ‘বালাকোট স্ট্রাইক নিয়ে বিশেষ জানি না,’ স্বীকারোক্তি সানি দেওলের ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.