সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেশসজ্জা শিল্পীর আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনাকে কেন্দ্র করে কার্যত দ্বিধাবিভক্ত টলিউড। একদিকে ডিরেক্টর্স গিল্ড, অন্যদিকে ফেডারেশন অফ সিনে টেকনিশিয়ানস অ্যান্ড ওয়ার্কার্স অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া (FCTWEI) এবং হেয়ার স্টাইলিস্ট গিল্ড। যে কেশসজ্জা শিল্পী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন, তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়নি। এমনটাই বলেছিলেন ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস। তবে ডিরেক্টর্স গিল্ডের দাবি, ফেডারেশন সভাপতির এই কথা অসত্য। সেকথা বিবৃতির মাধ্যমে জানানো হয়েছে সংগঠনের পক্ষ থেকে। তার পালটা জবাবও দিয়েছেন স্বরূপ বিশ্বাস।
ডিরেক্টর্স গিল্ডের দেওয়া বিবৃতির শুরুতে লেখা, ‘ফেডারেশন সভাপতি যে সত্যি বলছেন না তার প্রমাণস্বরূপ সাসপেনশনের চিঠিগুলো আমরা সংবাদমাধ্যমে পেশ করলাম। প্রসঙ্গত, যাঁদের যাঁদের সাসপেন্ড করা হয়েছিল, তাঁদের অনেকেই কর্মহীনতার ফলে সংসার চালাতে পারছেন না, অনেকে ধারকর্জ করে জীবন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন। এই প্রবল সমস্যার মুখে দাঁড়িয়ে অনেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, আমরা যথাসাধ্য প্রত্যেক কলাকুশলীর সঙ্গে থাকব।’
একাধিক চিঠি এই বিবৃতির মাঝে শেয়ার করা হয়। বিবৃতির শেষে লেখা হয়, ‘আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া ও তার কারণ হওয়া যেমন শাস্তিযোগ্য অপরাধ, ঠিক সেইভাবে কাউকে কাজ করতে না দেওয়াও ভারতীয় আইনে শাস্তিযোগ্য। ভারতের কোনও ফেডারেশন বা গিল্ডের সেই আইনি অধিকার নেই। যেটা বারবার বলেছি। ফেডারেশন সভাপতি প্রমাণ চেয়েছিলেন। সেই প্রমাণ আমরা দিলাম। তিনি ক্ষমা চাইবেন এমন দূরাশা আমাদের নেই। এরপরও হয়তো স্বরূপবাবু মিডিয়ার সামনে আবার নতুন কোনও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আবির্ভূত হবেন। যদিও আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, এটা চ্যালেঞ্জ-প্রতি চ্যালেঞ্জের বিষয় নয়। মানুষের জীবন ও জীবিকার ব্যাপার। আশা করব এইটুকু বোধ ফেডারেশন ও তার কর্তাব্যক্তিদের থাকবে।’
এর জবাব দিয়েই সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালকে স্বরূপ বিশ্বাস বলেন, “চিঠিগুলো ভালো করে পড়ে দেখুন ওখানে বলা আছে সাংগঠনিক কাজকর্ম করবেন না। কিন্তু কাউকে পেশাগত কাজে বাধা দেওয়া হয়নি বা সাসপেন্ড করা হয়নি। চিঠির ভুল ব্যাখ্যা করে সাধারণকে বিভ্রান্ত করতে চাইছেন কিছু মানুষ। ফের বলছি, ওই মেকআপ শিল্পীকে সাসপেন্ড করা হয়নি।”
এই প্রসঙ্গে ডিরেক্টর্স গিল্ডের সভাপতি সুব্রত সেন বলেন, “এটা ঠিকই যে প্রথমেই লেখা আছে যে সাংগঠনিক কাজকর্ম থেকে বিরত থাকবেন। সাসপেনশন করা হয়নি। বিষয়টা তা নয়, বিষয়টা হচ্ছে সাংগঠনিক কাজকর্ম থেকে কেন তাঁকে বিরত থাকতে বলা হচ্ছে, তার একটা কারণ আমরা ওপরে (বিবৃতির) দিয়েছি। নির্বাচনে (হেয়ার স্টাইলিস্ট গিল্ডের) যখন ওরা দাঁড়াতে গিয়েছিল। তখন ওদের বলা হয়েছিল, তোমরা নির্বাচনে মনোনয়ন দাখিল করতে পারবে না এবং আগে থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে কমিটি আছে সেই কমিটিই থাকবে। একটা চিঠি দেওয়া হয়েছিল নির্বাচন কমিশনকে। সেই চিঠির কপিও দেওয়া হয়েছে। যারা যারা নির্বাচনে দাঁড়াতে চেয়েছিল তাঁদের নির্বাচনে দাঁড়াতে দেওয়া হয়নি এবং তারই কারণে ওদের সাংগঠনিক কাজ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছিল। বিষয়টি সাসপেনশন টেকনিক্যালি নয়। এখানে আরেকটি প্রশ্ন, পরে যখন চিঠিটা দিল যে, আপনার ক্ষমা চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে, আপনার চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে আপনার এই কর্মবিরতি তুলে নেওয়া হল এবং আপনি কাজ করতে পারবেন কিন্তু আমাদের পারমিশন নিয়ে এবং কোন কাজ করতে পারবেন সেটা আমরা ডিসাইড করব। এইটা পরের চিঠিতে দেওয়া আছে, দেখতে পাবেন। অতএব, মানে যেটা দাঁড়াচ্ছে, ওদের সাংগঠনিক কাজকর্ম থেকে বিরত থাকতে বলেছিল ঠিকই কিন্তু আসলে তাঁদের কাজকর্ম করতে দেওয়া হয়নি। তা নাহলে এই পরের চিঠিটা আসতে পারে না। সুতরাং, এটা আসলে এক ধরনের সাসপেনশন।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.