Advertisement
Advertisement

Breaking News

Tarun Majumdar

তাপস পাল, মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়দের পরিচিতি দিয়েছিল তরুণ মজুমদারের ছবি

অনুপকুমার, সন্ধ্যা রায় জুটিকে তিনি জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছিলেন 'পলাতক' ও 'ফুলেশ্বরী' দিয়ে।

Stars like Tapas Paul, Moushumi Chatterjee got fame from Tarun Majumdar's film | Sangbad Pratidin
Published by: Akash Misra
  • Posted:July 4, 2022 12:47 pm
  • Updated:July 4, 2022 1:29 pm  

নির্মল ধর: প্রয়াত ভারতীয় চলচ্চিত্রের প্রবাদপ্রতীম পরিচালক তরুণ মজুমদার। তাঁর চলে যাওয়ার মধ্যে দিয়ে এক যুগের অবসান ঘটল। মিষ্টি প্রেমের ছবি হোক কিংবা রাজনীতি, তরুণ মজুমদারের ছবিতে বাঙালি খুঁজে পেতেন নিজেকে। তাপস পাল, মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়দের মতো তারকাদের পরিচিতি দিয়েছিল তাঁর ছবি।

Tarun Majumdar 1

Advertisement

ব্রিটিশ শাসিত ভারতে জন্ম তরুণ মজুমদারের (Tarun Majumdar)। তাঁর বাবা বীরেন্দ্রনাথ মজুমদার ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী। কেমিস্ট্রির ছাত্র হলেও সিনেমা তৈরির ঝোঁক ছিল তরুণ মজুমদারের। শচীন মুখোপাধ্যায় এবং দিলীপ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে মিলে ‘যাত্রিক’ নামে টিম তৈরি করে সিনেমা পরিচালনার কাজ শুরু করেন তিনি। তিন পরিচালকের প্রথম সিনেমা ‘চাওয়া পাওয়া’। অভিনয় করেছিলেন উত্তমকুমার, সুচিত্রা সেন। ‘যাত্রিক’-এর পরিচালনাতেই তৈরি হয় ‘কাঁচের স্বর্গ’। জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিল ছবিটি।

[আরও পড়ুন: চুপিচুপি সিনেমা হলে দিতিপ্রিয়া, ‘আয় খুকু আয়’ নিয়ে দর্শকদের উচ্ছ্বাস দেখে আপ্লুত অভিনেত্রী]

তরুণ মজুমদার। এই নামটার সঙ্গে বাংলা সিনেমার একটা দুটো নয়, সম্ভবত পাঁচ-ছটা দশকের ইতিহাস, ভূগোল নিবিড় ভাবে জড়িয়ে রয়েছে। তা সে সুস্থ বাণিজ্যিক সিনেমার কথা বলা হোক, কিংবা জনপ্রিয়তার কথা উঠুক, তরুণ মজুমদারের ছবির একটা নির্দিষ্ট বেঞ্চমার্ক ছিল। তিনি শুধু বাণিজ্যিক সফল ছবি করেননি, তাঁর ছবি থেকে ছবিতে ছড়িয়ে রয়েছে চিরন্তন গ্রাম বাংলার এক মায়াময় জগত, যে জগৎ এখন রাজনীতির কালো রঙে কালিমালিপ্ত। তাঁর ছবি আমাদের নিয়ে যায় এক স্বপ্ন আর বাস্তবের মেলবন্ধনে, এমনকী, যাত্রিক নামের আড়ালে যখন ছবি করেছেন, তখনও শহুরে জীবনকে তিনি দেখেছেন সমস্যার কাচ দিয়ে। সেটা “কাচের স্বর্গ” হোক, কিংবা “সংসার সীমান্তে”! তাঁর ‘গণদেবতা’ তারাশঙ্করের এপিক উপন্যাস থেকে নেওয়া হলেও, সিনেমাটিও হয়ে উঠেছিল গ্রামীণ বাংলার এক চিরকালীন ছবি।

Tarun Majumdar

 

শুরুতে তিনি আরও দুই বন্ধুর সঙ্গে কাজ শুরু করলেও, ‘পলাতক’ থেকে যখন একক ভাবে পরিচালক হলেন, তখন থেকেই তাঁর ছবির একটা নিজস্ব ঘরানা তৈরি হয়ে যায়। যে ঘরানায় নিটোল গল্প থাকে, মানুষ-মানুষীর প্রেম থাকে, হৃদয় জুড়ানো গান থাকে, সমাজের সুস্থতার দিকটা প্রাধান্য পায় এবং এইসব মিলিয়ে দুর্দান্ত একটা লোভনীয় প্যাকেজে তিনি ছবিটি উপহার দেন। বলা যেতে পারে, সেই পর্বের শুরু ‘পলাতক’ দিয়ে। তারপর একে একে তিনি দিয়ে গিয়েছেন অবিস্মরণীয় ‘বালিকা বধূ’, ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’, ‘ফুলেশ্বরী’, ‘দাদার কীর্তি’, ‘ভালোবাসা ভালোবাসা’, ‘নিমন্ত্রণ’, ‘অমর গীতি’, ‘পথভোলা’।

বাংলা সিনেমায় তাপস পাল, মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় এবং মহুয়া রায় চৌধুরী তাঁর প্রায় হাতে তৈরি শিল্পী! অনুপকুমার, সন্ধ্যা রায় জুটিকে তিনি জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছিলেন ‘পলাতক’ ও ‘ফুলেশ্বরী’ দিয়ে। বাংলা সিনেমার তিন মানিক-সত্যজিৎ,ঋত্বিক, মৃণালকে বাদ দিলে, তপন সিনহা এবং তরুণ মজুমদার ছিলেন জনপ্রিয়তার নিরিখে সবার আগে! তাঁর ছবিতেও যথেষ্ট সামাজিক দায়বদ্ধতার পরিচয় থাকত বাণিজ্যিক মোড়কের ভিতরেই। আর ছিল গান, তাঁর ছবির এক অপার সৌন্দর্য। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে শুরু থেকেই জুটি বেঁধেছিলেন তিনি। ‘চাওয়া পাওয়া’ থেকে ‘পলাতক’, ‘বালিকা বধূ’, ‘দাদার কীর্তি’, ‘অমরগীতি’ হয়ে শেষতম ছবি
‘ভালোবাসার বাড়ি’ পর্যন্ত তাঁদের ব্যক্তিগত ও পেশাদারী বন্ধুত্ব ছিল অটুট। তাঁদের যুগ্ম আয়োজনে অগণিত সুপারহিট গান এখনও বাংলা সিনেমার সম্পদ। জীবনকে তরুণ মজুমদার দেখতেন ভালবাসার আলোয়, প্রেম ও সম্প্রীতির সুরে, স্বরে। তিনিই ছিলেন সত্যিকার ঠিকানাহীন দেশে ‘জীবনপুরের পথিক’!

[আরও পড়ুন: ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ ছবিতে অমিতাভের চেয়েও বেশি পারিশ্রমিক রণবীরের, টাকার অঙ্ক জানলে অবাক হবেন!]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement