সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আনলকের চতুর্থ পর্যায়ে খুলতে পারে দেশের সিনেমা হলগুলি। কেন্দ্রীয় সরকারের এমন পরিকল্পনার কথাই জানা গেল। জুলাই মাসের শেষের দিকেই শোনা গিয়েছিল যে, তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রকের (Information and Broadcasting Ministry) তরফে আগস্টেই সিনেমা হলের দরজা খোলার আবেদন জানানো হয়েছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে। কিন্তু বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি! আর সেই জন্যই এবার জিম, রেস্তরাঁ, শপিং মলের পর ‘আনলক ৪’-এ সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে দেশের সিঙ্গলস্ক্রিন সিনেমা হলগুলো খোলার কথাই চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, এই অতিমারী আবহে অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো বিনোদন ইন্ডাস্ট্রিও যে বড়সড় আর্থিক ধাক্কার সম্মুখীন হয়েছে, তা বোধহয় আর আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না! শুটিংয়ের ছাড়পত্র মিললেও থিয়েটার, সিনেমা হলের দরজা এখনও বন্ধ! কারণ দেশের বেশ কিছু রাজ্যে সংক্রমণের হার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর ঠিক সেই কারণেই ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ভরসা রাখছেন প্রযোজক-পরিচালকেরা। কিন্তু এদিকে তো সিঁদুরে মেঘ দেখছেন থিয়েটার, মাল্টিপ্লেক্স, হল মালিকেরা। বিগত সাড়ে ৫ মাস ধরে বন্ধের জেরে যে লোকসান হয়েছে তাঁদের, তা সম্ভবত ক্যাশবাক্সের ভাঁড়ারে এবছরও কুলিয়ে উঠতে পারবেন না তাঁরা! এমতাবস্থায় সিনেমা হল মালিকদের কথা চিন্তা করেই তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রকের তরফে আগস্ট মাসে থিয়েটার, মাল্টিপ্লেক্স খোলার আবেদন জানানো হয়েছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের (Union Home Ministry) কাছে। যার সুবাদে দুই মন্ত্রকের এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকও হয় গত মাসে। কিন্তু করোনা আবহে অবস্থা বেগতিক দেখে তা আর কার্যকর করা হয়ে ওঠেনি। উপরন্তু একাধিক নির্দেশিকা মেনে সিনেমা হল খোলার সিদ্ধান্তে লোকসানের মুখে পড়ার আশঙ্কায় অনেক হল কর্তৃপক্ষই এতে সায় দেননি।
উল্লেখ্য, এই করোনা আবহে সিনেমা হল খুললে দর্শকদের বসার আয়োজনের ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্বের কথাও মাথায় রাখা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে তাঁরা চাইছেন, দুটো সারির মাঝখানে একটা সারি ফাঁকা রেখেই দর্শক বসানো হোক। শুধু তাই নয়, ২জন দর্শকের মাঝে অন্তত ৩ মিটার দূরত্ব বজায় রেখে বসানোর কথাও বলা হয়েছে। তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রকই অবশ্য আগের মিটিংয়ে এই পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন। এবং যাবতীয় বিষয় বিবেচনা করে সিনেমা হল খোলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকই নেবে, সেকথাও জানানো হয়েছিল। তার ভিত্তিতেই এবার বোধহয় সিনেমা হল খোলার সিদ্ধান্তে সবুজ সংকেত দিল সংশ্লিষ্ট দপ্তর। টু-প্লাই মাস্ক বাধ্যতামূলক। জনসচেতনতার বার্তা দিতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করার কথাও সিনেমার বিরতির মাঝে বলা হবে। হলের তাপমাত্রা রাখতে হবে ২৪ ডিগ্রি কিংবা তার বেশি।
প্রসঙ্গত, মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সিনেমাহলগুলির দরজায় বন্ধ থাকায় সিনেমাওয়ালারা বড়সড় অর্থনৈতিক মন্দার সম্মুখীন হয়েছেন। ভারতের বিনোদন ইন্ডাস্ট্রির অর্থনৈতিক পরিকাঠামোতেও যে ধ্বস নামতে চলেছে, তা বোধহয় আর আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না! এক্ষেত্রে ছবির বাজেট কমবে। অভিনেতা-অভিনেত্রীদের পারিশ্রমিকেও কাটছাঁট হওয়ার সম্ভাবনা। এই কঠিন সময়ে ছবির নির্মাতারা ইতিমধ্যেই অনলাইন মুক্তির দিকে ঝুঁকেছেন, অচিরেই যার বড় মাশুল গুনতে হবে সিনেমাহল-মাল্টিপ্লেক্সগুলিকে। সেকথা ভেবেই চিন্তার ভাঁজ পড়েছে মাল্টিপ্লেক্স কর্তৃপক্ষের কপালে। তবে এবার বোধহয় সিনেমা হল কর্তৃপক্ষেরা সুদিন দেখতে চলেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.