শম্পালী মৌলিক: ২৬ আগস্ট অর্থাৎ আজ তাঁর জন্মদিন। যাঁর সংলাপে বাঙালি চিরকাল হেসেছে এবং তাঁর মতো চরিত্রাভিনেতা কমই পেয়েছে বাংলা ইন্ডাস্ট্রি। তাঁর নাম শুনলেই মনে পড়ে যায় ‘গল্প হলেও সত্যি’, ‘আশিতে আসিও না’, ‘ভানু গোয়েন্দা জহর এ্যাসিস্ট্যান্ট’, ‘পার্সোনাল এ্যাসিস্ট্যান্ট’, ‘ভানু পেল লটারি’, ‘অদৃশ্য মানুষ’, ‘হসপিটাল’ ইত্যাদি ছবির কথা। হ্যাঁ, কথা হচ্ছে রুপোলি পর্দার অবস্মিরণীয় অভিনেতা ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় প্রসঙ্গে। সময় পাল্টে গেলেও বাঙালির মনে আজও অভিনেতা ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মৃতি আগের মতোই উজ্জ্বল। ‘সাড়ে চুয়াত্তর’-এর ‘মাসিমা মালপো খামু’ সংলাপ আজও বাঙালির মুখে মুখে ঘোরে। তাঁর ১০১তম জন্ম বার্ষিকীতে একটি নতুন ছবির ঘোষণা সামনে এল। যার নাম ‘যমালয়ে জীবন্ত ভানু’। এমন একটি গল্প ছবির ভিত, যেখানে অভিনেতার চিরস্মরণীয় ছবির দৃশ্যগুলো তো থাকবেই, সেই সঙ্গে তাঁর সমসাময়িক কালের কিংবদন্তি অভিনেতাদের স্মৃতিও রঙিন হয়ে উঠবে দর্শকের হৃদয়ে। মলাটরোলে অর্থাৎ ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকায় পাওয়া যাবে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়কে আর ছবির পরিচালনায় সায়ন্তন ঘোষাল। চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়। মেকআপের দায়িত্বে সোমনাথ কুণ্ডু।
ছবি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিচালক সায়ন্তন বললেন, “প্রচুর বাঙালির মতো আমিও ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফ্যান। সেই বাঙালি আবেগকে ছুঁয়ে ছবিটা করতে চাই। ‘যমালয়ে জীবন্ত মানুষ’ ছবিটাকে তো ছুঁয়ে যাবই, সেই সঙ্গে নানা গল্পের রেফারেন্স নিয়ে এখনকার দিনের একটা ছবি করতে চলেছি। যেখানে ‘ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়’ একটা চরিত্র। সেই চরিত্রে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় থাকবেন। আমরা লুক সেট করেছি। তার রেজাল্ট খুবই এক্সাইটমেন্ট তৈরি করেছে। এই ছবিটা ফ্যান্টাসি-কমেডি জনারেরই হবে। ওঁর প্রতি এটা আমাদের শ্রদ্ধার্ঘ্য। সেই জন্যই ১০১তম জন্মদিন উপলক্ষে আমাদের এই ঘোষণা এবং এই ছবিটার সঙ্গে ‘যমালয়ে জীবন্ত মানুষ’-এর একটা যোগ অবশ্যই থাকবে। যা বাঙালির সেই নস্টালজিয়াকে হিট করবে বলেই আমার ধারণা। খুব যত্ন নিয়ে আমরা এখন গল্পটা লিখছি। একটু সময় নিতে চাই। সে জন্য গল্প নিয়ে এখনই খুব বেশি বলতে চাইছি না। সামনের বছরের শুরুতে শুটিং শুরু করব।” পরিচালক সায়ন্তন এর আগে ‘স্বস্তিক সংকেত’ ছবিতে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করেছেন। সেখানে তিনি নেতাজির ভূমিকায় ছিলেন। তাঁকেই আবার এই ছবিতে কাস্ট করার কারণ কী? সায়ন্তন হেসে বললেন, ‘ফিচার্সের কথা ভুলে গিয়েই বলছি, প্রথমত অপুদা একজন অসাধারণ অভিনেতা। সেই কারণেই ওঁকে নেওয়া। এছাড়া আমরা প্রস্থেটিক মেকআপের সাহায্য নেব। সেখানে সোমনাথ কুণ্ডু রয়েছেন। যিনি খুবই ভাল কাজ করেন। আর অপুদা নিজেও ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফ্যান। আমি এখনও ওঁর ছবি দেখি। আমরা অনেক রিসার্চ করছি, ওঁর ফিল্মগুলো রি-ভিজিট করছি। এমনভাবে এই ছবিটা তৈরি করতে চাই যেন, আমাদের বাবা-মায়েদের পাশাপাশি এখনকার প্রজন্মও উপভোগ করে।’ ছবির প্রযোজনায় সুমনকুমার দাস, মিউজিক করছেন রাজা নারায়ণ দেব। এই ছবিটি ছাড়াও সায়ন্তনের দুটো ছবি একেবারে তৈরি হয়ে রয়েছে। যেমন, ‘টেনিদা’ ও ‘হীরক গড়ের হীরে’। এছাড়া সদ্য তিনি ঋত্বিক চক্রবর্তী ও শ্রাবন্তীকে নিয়ে ‘রবীন্দ্র কাব্যরহস্য’ ছবিটির শুটিং শেষ করেছেন। এই তিনটি ছবি ছাড়াও সায়ন্তন পরিচালিত সিরিজ ‘রক্তকরবী’ জি ফাইভ-এ আসার অপেক্ষায় রয়েছে। তবে এই মুহূর্তে পরিচালকের মনোযোগ পুরোপুরি ‘যমালয়ে জীবন্ত ভানু’-কে ঘিরেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.