সাত দিন বাদেই মনের মানুষের সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়ছেন সন্দীপ্তা সেন। আর ডিসেম্বর মাসেই আসছে তাঁর অভিনীত জনপ্রিয় সিরিজ ‘বোধন’-এর দ্বিতীয় সিজন আসছে। কী বলছেন অভিনেত্রী? শুনলেন শম্পালী মৌলিক
বিয়ের তো সাতদিনও বাকি নেই। কাজে মন দিচ্ছেন কী করে?
-এর মধ্যেই কিছু কাজ করছি। ‘বোধন টু’-এর প্রচারের কাজ চলছে তারই মধ্যে। বিশ্বাস করো, খুব খারাপ অবস্থা। প্রচুর কাজ বাকি (হাসি)।
৭ ডিসেম্বর বিয়ে। তার আগে কতটা নার্ভাস? কতটা উচ্ছ্বসিত?
– আমার মনে হয়, যারাই বিয়ে করে তাদের মধ্যে ইমোশন খুব স্ট্রংলি আসে। একটা নার্ভাসনেস আসে, তার পাশাপাশি এক্সাইটমেন্টও আসে। এই দুটোর মিশ্রণে যে ইমোশন তৈরি হয়, সেটা একটা দারুণ ফিলিং দেয় ভিতর থেকে। এগজ্যাক্টলি আমার সেটাই হচ্ছে।
সৌম্য মুখোপাধ্যায়ের কোন দিকটা আপনাকে আকর্ষণ করেছিল?
– পুরোটাই (জোরে হাসি)। ওর সততা, মানসিকতা ভালো লেগেছিল। ও খুব শান্তিপ্রিয়, প্রচণ্ড কেয়ারিং এবং খুব সর্টেড। আর পরিণত একজন মানুষ। ও একজন ভীষণ ভালো মানুষ, যেটা খুব দরকার। ভালো ব্যাপারটা খুব সাবজেকটিভ যদিও। আমার সংজ্ঞায় যেটা ভালো মনে হয়েছে, ও একদম সেটাই।
আমরা এমন একটা সময়ে দাঁড়িয়ে, যখন প্রায়ই সম্পর্ক ভাঙাগড়ার খবর আসে। সেইরকম একটা সময়ে আপনি বিয়েতে বিশ্বাস রাখতে পেরেছেন। এবং গ্ল্যামার জগতে সম্পর্কের ভাঙন আরও বেশি চোখে পড়ে। বিয়েতে এই বিশ্বাস রাখতে পারলেন কোন জায়গা থেকে?
– দেখো, বিয়ের প্রতি বিশ্বাস আমার বরাবরই ছিল। আমি নিজে একজন সাইকোলজিস্ট হিসাবে, প্রচুর ক্লায়েন্টের মুখোমুখি হয়েছি যারা বিবাহ সংক্রান্ত সমস্যার জন্য কাউন্সেলিং করতে এসেছিলেন। তা সত্ত্বেও আমার প্রচণ্ড বিশ্বাস আছে। আমার মনে হয়েছিল যে, ঠিক সময় এবং ঠিক মানুষ- এই দুটো যদি মিলে যায় তাহলে আমার বিয়ে করতে কোনও অসুবিধা নেই। তার জন্য আমি অনেক সময় নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এমন নয় যে হুটপাট ডিসিশন নিয়ে বিয়ে করছি। এবং আমার মনে হয়েছে, সৌম্য এবং সন্দীপ্তা- এই দুজন মানুষ দুজনের জন্য। উই আর মেড ফর ইচ আদার। সেটাই বিয়ের প্রধান কারণ।
বিয়ের দিন কেমন সাজবেন, কী পরবেন, পরিকল্পনা কী?
– বিয়েতে বেনারসি পরছি। একটু সাবেকি, বেনারস থেকে আনা হয়েছে। গায়েহলুদ বা অন্য অনুষ্ঠানের সব পোশাকই ডিজাইনার অভিষেক রায় বানাচ্ছে। সৌম্যর বিয়ের ধুতি আর গায়ে হলুদের সেট সবকিছুই অভিষেক বানাচ্ছে। আমি একদম সাবেকি সাজে সাজব। মিতান ঘোষের থেকে বেনারসিটা কিনেছি, উনি বেনারস থেকে নিয়ে এসেছেন। আর ব্লাউজ অভিষেকের।
আপনার নতুন সিরিজ ‘বোধন টু’ ও আসছে ২২ ডিসেম্বর।
– যে কারণে, প্রোমোশনের কাজ এখন কিছুটা এগিয়ে রাখছি।
‘বোধন টু’ ফেরা মানে আপনার চরিত্র ‘রাকা সেন’-এর ফেরা। এবার তো বেশি অ্যাকশন।
– হ্যাঁ, অ্যাকশন অনেকটাই বেশি। সিজন ওয়ান-এ রাকা সেন গাড়ি তো চালিয়েছে, কিন্তু এবারে গাড়ি নিয়ে মারাত্মক চেজিং সিকোয়েন্স-ও আছে। সেখানে কিন্তু আমি কোনও বডি ডবল নিইনি। পুরো নিজে চালিয়ে সবটা করেছি। একটা গাড়িতে ইন্দ্রাশিস, আরেকটায় আমি। মারাত্মক শক্ত সব দৃশ্য ছিল। বেশ ইন্টারেস্টিং ছিল।
দুর্ঘটনার ভয় বা এমন কিছু মাথায় আসেনি?
– ভয় পেয়ে গেলে নির্ঘাত দুর্ঘটনা হত। যতটা সম্ভব মাথা ঠান্ডা রেখে, টেনশন না করে গাড়ি চালানোটাই ওই সময় সবথেকে উপযুক্ত মনে হয়েছিল। ফাইট সিকোয়েন্সে কোনও ফাইট মাস্টার ছিল না। অদিতিদির (রায়) পরিচালনাতেই আমরা পুরোটা করেছি।
‘বোধন’ প্রথম সিজন তো খুব জনপ্রিয় হয়েছিল, দ্বিতীয় সিজন নিয়ে আপনি কতটা আশাবাদী? প্রথমটাকে ছাপিয়ে যেতে পারবেন?
– আমাদের একশো শতাংশ দিয়ে চেষ্টা করেছি। আগের দিন অবধি ভালো করে পড়াশোনা করে, আমরা পরীক্ষার খাতায় লিখে দিয়ে এসেছি। এবার পরীক্ষার কী ফল হবে, দর্শকই বলবে।
এবারে কোন ইস্যুর ওপর বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে?
– আগের বার রেপ ভিক্টিমকে কেন্দ্র করে বিষয়টা ছিল। এবার অনেক দিক আছে। সমাজের এই বিষয়গুলো খুব বেদনাদায়ক। যেমন– জাতিভেদের বিষয়। এছাড়া নারীপাচার, চাইল্ড ম্যারেজ, সমাজে কেউ প্রতিবাদ করতে এলে, ডাইনি হিসাবে দাগিয়ে দিয়ে তাকে মেরে ফেলা। এইরকম সব বিষয় উঠে আসবে। শর্বরীদি লিখেছেন খুব ডিটেলে। ওঁর লেখা স্ক্রিপ্ট পড়ার পর যখন আমরা লোকেশনে গিয়েছি, মনে হচ্ছিল হুবহু লেখাটার মতো। সেটাও আমাদের খুব সাহায্য করেছে।
বিয়ের পরে কি মধুচন্দ্রিমায় যাওয়ার প্ল্যান রয়েছে?
– এই মুহূর্তে বিয়ের পরে হানিমুনের প্ল্যান নেই। পরে ভাবব। আমরা দুজনেই ঘুরতে ভালোবাসি। এছাড়া কাজও রয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.