সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিদেশ বিভুঁইয়ের মাটিতে বাংলার শিল্পীদের অসম্মান, অপমান নিয়ে যখন তোলপাড় নেটপাড়া, তখন নিজের দেশে তথা রাজ্যে অপমানিত হওয়ার কথা জানিয়ে বিস্ফোরক গায়িকা সাহানা বাজপেয়ী।
নর্থ আমেরিকান বঙ্গ সম্মেলনে গিয়ে চূড়ান্ত অপদস্থ হতে হয়েছে বাঙালি শিল্পীদের। প্রাপ্য পারিশ্রমিক না পাওয়া থেকে হোটেলের ঘর নির্ধারিত সময়ের আগে ছেড়ে দেওয়া, খাওয়া-দাওয়ার অব্যবস্থা, অনুষ্ঠানের সময়সূচী- নানাভাবে বাংলার বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী জয়তী চক্রবর্তী, পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীদের অপ্রীতিকর অবস্থার মধ্যে পড়তে হয় সেদেশে। প্রশ্ন ওঠে উত্তর আমেরিকার বঙ্গ সম্মেলন অনুষ্ঠানের আয়োজকদের আতিথেয়তা নিয়েও! এমতাবস্থায় নেটপাড়ায় যখন তর্ক-বিতর্কের অন্ত নেই, তখন সেই বিতর্ক-যজ্ঞেই ঘৃতাহূতি করল সাহানা বাজপেয়ীর তিক্ত অভিজ্ঞতা। যা তিনি সমাজ মাধ্যমের পাতায় তুলে ধরেছেন।
নিজের রাজ্যেই শো করে পারিশ্রমিক নিয়ে হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে সাহানাকে। এমনকী প্রাপ্য টাকা না দিয়ে সেই টাকায় পিকনিক করার মতো ব্যঙ্গ-বিদ্রুপও করা হয়েছে গায়িকাকে। ফেসবুক পোস্টে সাহানা বাজপেয়ী জানান, “অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে শিল্পীদের প্রতি অপরিসীম খারাপ ব্যবহার এই প্রথম হয়নি। আর তার জন্যে আমেরিকাতেও যেতে হবে না। নিজের দেশে, নিজের রাজ্যেই এই সমস্ত চূড়ান্ত অপমানজনক ঘটনা প্রায়শই ঘটে।”
কী ঘটেছিল? সাহানা জানিয়েছেন, “একটি ছোট শহরের কলেজে অনুষ্ঠান করার পর সেই কলেজেরই পুরুষ মাস্টারমশাইরা একযোগে আমাকে এসে কোণঠাসা করে বললেন- বাকি টাকাটা আপনাকে দিচ্ছি না। আমরা ওই টাকা দিয়ে পিকনিক করবো। ওটা থাক। ওটা নিয়ে আপনি কী করবেন? এদের মধ্যে আমার বাবার দু’-একজন প্রাক্তন ছাত্রও ছিল। তাদেরই এক মহিলা সহকর্মীকে চিৎকার করে তারা চুপ করিয়ে রাখছিল যখন তিনি আমাকে সমর্থন করছিলেন। দুই পুরুষ সহশিল্পীকে ডেকে এনে এই প্রফেসরদের সঙ্গে রফা করতে হয় কারণ এরা আমার কোনও কথাই শুনছিল না। এরা শিক্ষক, ভবিষ্যতের মননশীল নাগরিক তৈরী করছে।”
এখানেই অবশ্য শেষ নয়। বাঙালিদের বিঁধে সাহানা বাজপেয়ীর সংযোজন, “জাতি সাগরপারে গেলেও বদলায় না, এই সার বোঝা বুঝেছি। বরং আরেকটু দুঃসাহসী হয়ে ওঠে। বিলেত-বিদেশ বলে কথা। যে সমস্ত শিল্পীকে চরম অপমানের মধ্যে দিয়ে যেতে হল, সঙ্গে ন্যূনতম সহযোগিতা করা হল না, খাবার দেওয়া হল না যথাসময়ে, হোটেল থেকে নির্দিষ্ট দিনের আগেই বের করে দেওয়া হল, প্রাপ্য সাম্মানিক থেকে বঞ্চিত করা হল, অনুষ্ঠানের সময় কমিয়ে দেওয়া হল, তাঁদের সহমর্মী হলাম। বিদেশ গিয়ে গান-বাজনা করা অনেকের কাছেই ‘স্বপ্নপূরণ’, তাই এই সমস্ত অঘটনের প্রতিবাদ করা থেকে অনেকেই বিরত থাকেন, এও সকলের জানা। আর সেই কারণেই কিছু কিছু দুর্বিনীত আয়োজকদের সাহস বাড়তে থাকে। এই ধরনের ঘটনা ঘটানোর সুযোগ যাতে না পায় লোকজন তার ব্যবস্থা করতে হবে- শিল্পীদের একজোট হতে হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.