Advertisement
Advertisement
Aindrila Sharma

ক্যানসার আক্রান্ত ‘জিয়নকাঠি’র ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে ঠাকুর দেখলেন প্রেমিক সব্যসাচী

মারণ রোগে আক্রান্ত ঐন্দ্রিলার আবদার পূরণ করলেন সব্যসাচী।

Sabyasachi chowdhury post pandel hopping experience with aindrila sharma | Sangbad Pratidin
Published by: Akash Misra
  • Posted:October 11, 2021 12:25 pm
  • Updated:October 11, 2021 12:25 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শহর জুড়ে এখন পুজোর আমেজ। রাস্তা জুড়ে আলোর রোশনাই। সকাল থেকেই পাড়ায় পাড়ায়, মণ্ডপে মণ্ডপে ঢাকের বাদ্যি। এরকম আবহে কি আর মন টেকে বাড়িতে? তাই তো অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মার (Aindrila Sharma)ছোট্ট আবদার, ঠাকুর দেখব! চিন্তায় পড়ে গেলেন প্রেমিক সব্যসাচী। কেমো, অপারেশনের পর ঐন্দ্রিলা তো খুব দুর্বল। এ অবস্থায় বাইরে নিয়ে বের হওয়াটা কি ঠিক? তবুও ঐন্দ্রিলার আবদার বলে কথা। যেভাবে মেয়েটা ক্যানসারের সঙ্গে লড়ছে, মন শক্ত করে জীবন বাঁচছে। সেই মেয়েটার ছোট্ট আবদার পূরণ হবে না! যেমন ভাবা তেমনি কাজ। টুক করে ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে চতুর্থী রাতে ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে পড়লেন ‘বামাক্ষ্যাপা’ সব্যসাচী (Sabyasachi Chowdhury)। আর সেই ঠাকুর দেখার একটি ছবিই সোশ্যাল নেটওয়ার্কে পোস্ট করে সব্যসাচী লিখলেন, ‘বায়না করেছিল যে পুজোর ছুটিতে আমি বাড়ি যাওয়ার আগে একটা ঠাকুর দেখাতেই হবে। ঐন্দ্রিলার শরীর একটু ভালো থাকাতে, ভয়ে ভয়ে নিয়ে গিয়েছিলাম দক্ষিণ কলকাতার দুই নামকরা পুজো মণ্ডপে। অজস্র মানুষের মিছিল, ব্যারিকেড আর ‘নো পার্কিং’ এর স্রোতে ঘেমেনেয়ে হতাশ হয়ে বললো “ধুর, বাড়ি নিয়ে চলো, ঠাকুরকেই তো দেখতে পাচ্ছি না।”

ফেরার পথে এক অচেনা পাড়ার মোড়ে এই ক্ষুদ্র নামহীন প্যান্ডেলটি দেখে একেবারে সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। মধ্যরাতে, মানুষ তো দূরের কথা, কাকপক্ষীও নেই। তবে এই বিগ্রহের কোনও থিম নেই, চাকচিক্য নেই, আড়ম্বর নেই। বড়ই সাদামাটা, বড়ই আটপৌরে, ঠিক যেন মায়ের মতন। ‘

Advertisement

[আরও পড়ুন: পাত্রী চাই! ডিভোর্স নিয়ে টানাপোড়েনের মাঝেই ফেসবুকে লিখলেন নোবেল]

জীবন অনেক কিছু শিখিয়ে দেয়। আবার এমন অনেক মানুষ রয়েছেন যাঁদের কাছ থেকে বাঁচতে শিখতে হয়। সেরকমই এক মানুষ ‘জিয়নকাঠি’ (Jiyon Kathi) ধারাবাহিকের অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা (Aindrila Sharma)৷ ঐন্দ্রিলার শরীরে দু’বার মারণ রোগ ক্যানসার থাবা বসিয়েছে। রোগকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে হাসতে হাসতে ধারাবাহিকের শ্যুটিংও করেছেন ঐন্দ্রিলা ৷ প্রথম কেমো নেওয়ার পরও চুটিয়ে অভিনয় করেছন তিনি৷ ঐন্দ্রিলা লড়াকু। আর তাঁর পাশে থাকা প্রিয়মানুষটি? জিয়নকাঠির ঐন্দ্রিলার সঙ্গে বামাক্ষ্যাপার সব্যসাচীর প্রেমের গল্প সবার জানা। তবে একদিকে যেমন ঐন্দ্রিলা লড়াকু। তেমনি তাঁর সাপোর্ট সিস্টেম সব্যসাচী। সারাক্ষণই আগলে রেখেছেন ঐন্দ্রিলাকে।

কয়েকদিন আগে সব্যসাচী আরেক ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন, ‘প্রতি মাসের শেষে ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে লেখাটা আমার প্রায় রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আসলে সারা মাস ধরে বহু সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে নানান পত্রপত্রিকা এবং সংবাদমাধ্যম আমায় নিয়মিত প্রশ্ন করেন ওর বিষয়ে। আমি কাউকেই বিশেষ কিছু বলি না, আসলে ‘ভালো আছে’ বলতে আমার ভয় লাগে। সত্যি বলতে, চোখের সামনে আমি যা দেখেছি এবং নিয়মিত দেখছি, সেটাকে ভালো থাকা বলে না, সেটাকে অস্তিত্বের লড়াই বলে। অবশ্য এইসব খটমট কথা কেবলমাত্র আমিই বলি, ওকে যদি কেউ জিজ্ঞাসা করে তাহলে এক গাল হেসে উত্তর দেবে “খুব ভালো আছি, আমার রাশিফল ভালো যাচ্ছে।”

প্রসঙ্গত বলি, অসুস্থ হওয়ার আগে জানুয়ারি মাসে কাকে যেন হাত দেখিয়েছিল, আমি এসবে খুব একটা বিশ্বাস করি না, তাই আমায় আগে জানায়নি। তিনি কুষ্ঠিবিচার করে বলেছিলেন, “ রাশিফল ভালো যাচ্ছে, এই বছর তোমায় নিচের দিকে তাকাতেই হবে না।” সত্যিই তাই, মাথার ওপরে সিলিং ফ্যান আর ঝুলন্ত কেমোর বোতল দেখেই ওর বছর পার হতে চললো। সে যাই হোক, দেখলাম যে জ্যোতিষশাস্ত্রের ওপর থেকে ওর বিশ্বাসটা প্রায় উঠে গেছে।

যা বুঝলাম, এই অসুখটার কোনো নিয়মবিচার নেই, ওষুধপত্র সবই আছে অথচ নেই, চিকিৎসার নির্দিষ্ট দিনক্ষণ আছে কিন্তু আরোগ্যের নেই। কথা ছিল সেপ্টেম্বর অবধি চিকিৎসা চলবে, ক্রমে সেটা গুটিগুটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ডিসেম্বরে। প্রতিবার যখন ডাক্তার বলেন চিকিৎসার সময় বাড়াতে, ওর মুখটা যন্ত্রনায় কুঁকড়ে যায়। প্রতিবার কেমো নেওয়ার পর কয়েক রাত অসহ্য যন্ত্রণায় ছটফট করে। শুয়ে থাকলে মনে হয়ে বুকে পাথর চেপে বসছে, আবার উঠে বসলে শ্বাস নিতে পারে না। রক্তচাপ মাঝেমধ্যেই ৮০/৪০ এ এসে ঠেকে। খাওয়ার ইচ্ছা এবং স্বাদ চলে যায়। আধখানা ফুসফুস বাদ যাওয়াতে সবটাই বড় কঠিন কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। খুব কড়া ডোজের ঘুমের ওষুধ খাইয়ে একপ্রকার অচেতন করে রাখা হয় ওই কয়েকটা দিন। তবে বাকি দিনগুলিতে দিব্যি ঠিক থাকে, পুজোর জন্য অনলাইন শপিং, আমার ওপর হম্বিতম্বি, লেজওয়ালা বাচ্চাদের তদারকি, সবটাই পরিপাটি করে পালন করে…’

এরকমই এক লড়াকু মেয়ের সব আবদারই পূরণ করতে একেবারে তৈরি সব্যসাচী। আর তাই পুজোর ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার আগে ঐন্দ্রিলাকে প্রতিমা দর্শন করালেন প্রেমিক সব্যসাচী।

[আরও পড়ুন: মাদক মামলায় জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদনে আদালতে গিয়েই অসুস্থ পরীমণি]

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement