সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের প্রতিবাদের বিরল দৃশ্য। মাঠের মধ্যেই ফুটবলপ্রেমীরা দাবি তুললেন, ‘বোনের বিচার চাই’। পুলিশের কড়া নিষেধাজ্ঞা ছিল, মোহনবাগান ম্যাচে গ্যালারিতে টিফো আনা যাবে না। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বলটা দুরন্তভাবে পাস করে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। সমর্থকদের আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদী টিফো গ্যালারিতে প্রদর্শন করার অনুমতি দেওয়া হল। হাতে হাত রেখে সাধারণ মানুষের এই লড়াই দেখে গর্বিত ঋদ্ধি সেন। সেই সঙ্গে ‘বিরোধী’দের বিঁধে তাঁর মন্তব্য, “প্রতিবাদের জন্য ছদ্মবেশ লাগে না।”
প্রতিবাদী টিফোর ছবি শেয়ার করে ঋদ্ধি লেখেন, “ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, মহামেডান স্পোর্টিং নিজ নিজ পরিচয়ে সগৌরবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে, নিজেদের পতাকার রঙের বিভেদ সেদিন ছিল সবচেয়ে বড় ঐকবদ্ধতার ঢাল, যে ঢাল নিয়ে নির্ভয়ে তারা সম্মুখীন হয়েছিল পুলিশের, মুখোমুখি জবাব চেয়েছিল প্রশাসনের কাছে, বিচার চেয়েছিল হত্যার। আজ আবার একই দৃশ্য দেখে গর্বিত বোধ করছি নাগরিক হিসেবে। ফুটবলপ্রেমী মানুষ প্রতিবাদ করছে নিজ পরিচয়, খেলার মাঠে থেকে, আমার শহরে বিগত ১৬ দিন ধরে দিনরাত এক করে তিলোত্তমার হত্যার প্রতিবাদ করেছে সাধারণ মানুষ, ছাত্ররা ছাত্রের পরিচয়, ডাক্তাররা ডাক্তারদের।”
এর পরই ১৪ আগস্টের রাত দখল অভিযানের কথা উল্লেখ করে ঋদ্ধি জানান কীভাবে বিচারের দাবিতে নারীরা সরব হয়েছেন। আর ভিন্ন পেশার মানুষরা তাঁদের এই প্রতিবাদের স্বরে কণ্ঠ মিলিয়েছেন। অভিনেতা লেখেন, “শুধু এক বিশেষ বিরোধীপক্ষই হোঁচট খেলেন ‘বিরোধী’ শব্দটার প্রকৃত ব্যবহার করতে, বিরোধিতা করাই তাদের রাজনৈতিক কর্তব্য, অথচ একটা রাজনৈতিক আন্দোলনকে অরাজনৈতিক দেখাতে গিয়ে নিজেরাই সব চেয়ে বেশি প্রমাণ করলেন যে তারা আসলে পতাকার রঙের রাজনীতিটাও ভালো করে বোঝেন না। ছাত্র সাজতে গিয়ে তারা একমাত্র সেই ছাত্র সাজতে পারলেন যারা স্কুলে অঙ্ক টুকে পাশ করার স্বপ্ন দেখে শেষ অবধি দেখত খাতায় সেই শূন্য এসেছে, অঙ্কের শেষ উত্তরটা ঠিক, তবে পদ্ধতি টোকায় ভুল।
অভিনেতার বক্তব্য, পরিচয় গোপন করার বদলে পরিচয় দিয়ে সোচ্চার হওয়াই রাজনৈতিক চেতনার পরিচয়। তিনি লেখেন, “জনগণমন শেষ অবধি সবচেয়ে বড় অধিনায়ক। আমি গর্বিত, পশ্চিমবাংলার ‘সাধারণ’ পরিচয়ের মানুষ সবচেয়ে অসাধারণ কাজটা করে চলেছেন, তাঁরা ছিলেন রাস্তায়, থাকবেন, বিচারের দাবিতে, সোচ্চার হবেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে। ছাত্রসমাজ (নেপথ্যে নাকি বিজেপি-আরএসএস যোগ রয়েছে) বা জনসমাজ থেকে উঠে আসতে পারে রাজনৈতিক নেতা, নেত্রী, তবে কোনও রাজনীতিবিদ সহজে হয়ে উঠতে পারে না ‘ছাত্র’ বা ‘জনগণ’। কারণ অধিকাংশ ক্ষমতার আসনে বসে থাকা ব্যক্তিত্বদের যেটা নেই সেটা হল ‘সাহস’, যা ছাত্র আর জনসমাজের সব চেয়ে বড় হাতিয়ার, তাই পতাকা বা ছদ্মবেশ, দুটোই তাদের কাছে অপ্রয়োজনীয়।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.