সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুধু রাজ্য নয়, গোটা দেশে রানু মণ্ডল এখন জনপ্রিয়। তবে খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছলেও মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না রানুর মেয়ে এলিজাবেথ সাথী রায়। “মায়ের সঙ্গে কোনওরকম যোগাযোগ করলেই আমার পা ভেঙে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছে রানাঘাটের আমরা সবাই শয়তান ক্লাবের সদস্যরা। অতীন্দ্র আর তপন যেন নিজের ছেলে, এরকমই আচরণ করছে ওরা আজকাল”, বিস্ফোরক অভিযোগ রানুর মেয়ে সাথী রায়ের।
খবরের শিরোনামে এখন একটাই নাম রানু মারিয়া মণ্ডল। রানাঘাটের স্টেশন চত্বরে গান গাওয়া রানু এখন নেটদুনিয়ার সেনসেশন। ইতিমধ্যেই হিমেশের সুরে ৩ তিনটে প্লে-ব্যাক করে ফেলেছেন। রাতারাতি রানাঘাটকে খ্যাতির চূড়ায় পৌঁছে দিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার এই ‘সুর সম্রাজ্ঞী’। এখন তিনি সেলিব্রিটিই বটে! কিন্তু যখন তাঁর কাছে কিচ্ছুটুকু ছিল না। দু’বেলা ঠিকমতো খাবার জুটত না। স্টেশনে গান গেয়ে বেড়াতেন। তখন? সন্তান থাকা সত্ত্বেও কেন তাঁকে ভিখারিনী বেশে কাটাতে হয়েছে। কেন মা’র জন্য এগিয়ে আসেননি রানুর মেয়ে এলিজাবেথ সাথী রায়? এসব প্রশ্ন মাথায় ভীড় করেনি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া হয়তো দায়। নেটিজেনদের রোষানলেও পড়তে হয়েছে। কিন্তু এবার সেসব যাবতীয় অভিযোগের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন রানুর মেয়ে সাথী।
“ওরা আমাকে ফোনেও মা’র সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেয় না। এমনকী, আমার বিরুদ্ধে মা’র মগজধোলাইও করছে। আমি অসহায় বোধ করি। তপন ও অতীন্দ্র খ্যাতি চায়, তাই ওরা আমাকে সরাচ্ছে।”
বীরভূমের সিউড়িতে থাকেন রানুর মেয়ে। এলিজাবেথ সাথী রায়ের কথায়, “আমি জানতামই না যে মা রেলস্টেশনে গান করতেন কারণ আমি নিয়মিত মাকে দেখতে যেতাম না। কয়েকমাস আগে আমি ধর্মতলায় গিয়েছিলাম এবং মাকে একটি বাসস্ট্যান্ডে বসে থাকতে দেখি। আমি মাকে বলি, এক্ষুণি বাড়ি যাও এবং ২০০ টাকাও দিই। আমি এক কাকার অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে যথাসম্ভব ৫০০ টাকা করে পাঠাতাম মাকে। আমি বিবাহবিচ্ছিন্না এবং সিউড়িতে একটি ছোট মুদির দোকান চালাই। পাশাপাশি ছেলেও একাই মানুষ করছি। ছোট ছেলের দেখাশোনা করি। আমার নিজেরও লড়াই রয়েছে। তবুও আমি যতটুকু পারি মাকে দেখাশোনা করার চেষ্টা করি। আমি বেশ কয়েকবার মাকে বলেছি আমাদের সঙ্গে থাকো, তবে আমার মা আমাদের সঙ্গে থাকতে চান না। তবুও লোকেরা আমাকে দোষ দিচ্ছে। সবাই আমার বিরুদ্ধে একজোট হয়ে কথা বলছে। আমি এখন কার কাছে যাব?”
রানুর অভিযোগ এখানেই শেষ হয়নি। আরও বিস্ফোরক হয়ে তিনি বলেন, “অতীন্দ্র, তপন এবং শয়তান ক্লাবের অন্যান্য সদস্যরা আমাকে হুমকি দিয়েছে। মায়ের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করলে আমার পা ভেঙে দেবে বলেছে। ওরা আমাকে ফোনেও মা’র সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেয় না। এমনকী, আমার বিরুদ্ধে মা’র মগজধোলাইও করছে। আমি অসহায় বোধ করি। তপন ও অতীন্দ্র খ্যাতি চায়, তাই ওরা আমাকে সরাচ্ছে। তপন তো আমার মায়ের কাছ থেকে টাকা নেয় রোজকারের জিনিস কিনে দেওয়ার অজুহাতে। মা’র অ্যাকাউন্ট থেকে ১০,০০০ টাকাও সরিয়েছে আর মায়ের জন্য কেবল একটা স্যুটকেস এবং কয়েকটা নাইটি কিনে দিয়েছে।”
সাথী রায়ের আরও এক বড় ভাই আছে। রানুর দুই বিয়ে। প্রথম পক্ষের সন্তান সাথী এবং তাঁর আরও এক বড় ভাই রয়েছে। এমনকী দ্বিতীয় পক্ষের দুই সন্তানও রয়েছে রানুর। তাঁরা মুম্বইতে থাকেন। কারও সঙ্গেই কারও যোগাযোগ নেই। বাকি সন্তানরা কেন মায়ের দায়িত্ব নিচ্ছে না? প্রশ্ন তুলেছেন সাথী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.